রাহুল গান্ধীর সঙ্গে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। —ফাইল চিত্র।
রাহুল গান্ধী ওয়েনাড়ের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে রায়বরেলীর সাংসদ হিসেবে লোকসভায় যেতে পারেন। এমনটাই খবর কংগ্রেস সূত্রের। তবে রায়বরেলী এবং ওয়েনাড়ের মধ্যে যে লোকসভা কেন্দ্র তিনি ছেড়ে দেবেন, সেখানে উপনির্বাচনে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাকে প্রার্থী করা হতে পারে। আজ রাহুল নিজেই ওয়েনাড়ে তেমন ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন।
ওয়েনাড়ে রাহুল আজ বলেছেন, রায়বরেলী না ওয়েনাড়— কোন আসনের সাংসদ থাকবেন, আর কোন আসন ছেড়ে দেবেন, তা নিয়ে তিনি ধর্মসঙ্কটে পড়েছেন। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘কথা দিচ্ছি, আমি যে সিদ্ধান্তই নিই, তাতে রায়বরেলী ও ওয়েনাড়, দুই কেন্দ্রের মানুষই খুশি হবেন।’’ কংগ্রেস নেতাদের মতে, রাহুলের এ কথা থেকেই স্পষ্ট, তিনি প্রিয়ঙ্কাকে ওয়েনাড়ে প্রার্থী করতে চাইছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ওয়েনাড় আসনে সিপিআইয়ের অ্যানি রাজা প্রার্থী ছিলেন। কংগ্রেসের একাংশের মতে, প্রিয়ঙ্কা উপনির্বাচনে প্রার্থী হলে সৌজন্যবশত বামফ্রন্ট ওয়েনাড়ে প্রার্থী না-ও দিতে পারে। কারণ লোকসভা নির্বাচনের আগে সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজারা প্রিয়ঙ্কাকে ভোটে প্রার্থী হতে বলেছিলেন।
উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলী ও কেরলের ওয়েনাড়— দুই কেন্দ্র থেকেই এ বার রাহুল ভোটে জিতেছেন। বোন প্রিয়ঙ্কাকে সঙ্গে নিয়ে গত কাল তিনি রায়বরেলীর মানুষকে ধন্যবাদ জানাতে গিয়েছিলেন। সেখানে রায়বরেলীতে পরিশ্রম করার জন্য প্রিয়ঙ্কাকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাহুল বলেছিলেন, ‘‘আমার একটা আইডিয়া আছে। সেটা আপনাদের পরে বলব।’’ আজ ওয়েনাড়ের ভোটারদের ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে প্রথমে মল্লপুরম, তার পরে ওয়েনাড়ে রাহুল বলেছেন, ওয়েনাড়ের মানুষের থেকে গত পাঁচ বছরে তিনি বিপুল ভালবাসা পেয়েছেন। তাই রায়বরেলী না ওয়েনাড়, তা নিয়ে ধর্মসঙ্কটে পড়েছেন। ওয়েনাড়ে কংগ্রেস সমর্থকেরা রাহুলের জন্য ‘আমাদের ছেড়ে যাবেন না’ পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাতে এ কথাও লেখা ছিল, ‘যদি যেতেই হয়, তা হলে আপনার বোন প্রিয়ঙ্কাকে আমাদের দেখাশোনা করতে বলুন’। রায়বরেলী না ওয়েনাড়— এই ধর্মসঙ্কট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে রাহুলের কটাক্ষ, ‘‘মুশকিল হল, নরেন্দ্র মোদীর মতো আমার হয়ে পরমাত্মা সব সিদ্ধান্ত নেন না। আমি সাধারণ মানুষ। আমার কাছে সাধারণ মানুষই ভগবান। মানুষের সঙ্গে কথা বলি। তাঁরাই বলে দেন, কী করতে হবে।’’ একই সঙ্গে, তিনি হালকা চালে বলেছেন, ‘‘সকলে আন্দাজ করছেন, ওয়েনাড় না রায়বরেলী। আমি ছাড়া মনে হচ্ছে সকলে উত্তরটা জানে।’’
ওয়েনাড় কেন্দ্রের মধ্যে বিধানসভা এলাকাগুলিতে ইউডিএফের শরিক মুসলিম লিগের ভাল প্রভাব রয়েছে। রাহুল ওয়েনাড় ছেড়ে দিলে উপনির্বাচনে প্রিয়ঙ্কাকে প্রার্থী করার প্রস্তাব দিয়েছে মুসলিম লিগও। তিনি প্রার্থী না হলে উপনির্বাচনে তাদের লড়াই করতে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে মুসলিম লিগ। কংগ্রেস অবশ্য ওই দাবি মানতে নারাজ। মুসলিম লিগকে সন্তুষ্ট করতে কংগ্রেস কেরল থেকে খালি হওয়া রাজ্যসভার একটি আসন তাদের ছেড়ে দিচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হ্যারিস বীরন সেখানে প্রার্থী হবেন।
রাহুল ওয়েনাড় ছেড়ে দিতে পারেন ইঙ্গিত দিয়ে কেরলের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কে সুধাকরনের বক্তব্য, ‘‘রাহুল গান্ধীকে এখন গোটা দেশের নেতৃত্ব দিতে হবে। তিনি শুধু ওয়েনাড়ে আটকে থাকবেন, এটা আশা করা উচিত নয়। তাই দুঃখের কিছু নেই। বরং, আমাদের সকলের উচিত তাঁকে সব রকম ভাবে সমর্থন ও শুভেচ্ছা জানানো।’’ কংগ্রেস সূত্রের খবর, প্রিয়ঙ্কা ওয়েনাড়ে প্রার্থী না হলে বিকল্প হিসেবে প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি কে মুরলীধরনের নাম ভাবা হয়েছে। ত্রিশূর থেকে এ বার লোকসভায় হেরে গিয়েছেন তিনি। রাজ্যে পাঁচ বছর আগে জয়ী কংগ্রেসের দু’জন সাংসদ এ বার জিততে পারেননি। তাঁদের মধ্যে রামিয়া হরিদাসকে বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী করা হবে, খবর। মুরলীধরন ওয়েনাড়ে দাঁড়ালে তাঁরও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা পাকা হবে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy