মণিপুর হিংসার একটি ছবি। —পিটিআই
মণিপুরের পরিস্থিতি সামলাতে না পারার জন্য বিরোধী দলগুলি এত দিন সে রাজ্যের বিজেপি সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছিল। এ বার বিজেপির সঙ্গত্যাগ করার হুঁশিয়ারি দিল শরিক দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)। উত্তর-পূর্ব ভারতের ছোট দলগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসতে বিজেপি যে জোট গঠন করেছে, সেই নর্থ-ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (নেডা)-র গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এনপিপি। মনে করা হচ্ছে, ওই জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসার হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল এনপিপি।
এনপিপির ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা মণিপুরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়ামনাম জয়কুমার সিংহ ‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে মণিপুরের হিংসা প্রসঙ্গে বলেছেন, “আমরা নীরব দর্শক হয়ে বসে থাকব না। বিজেপির সঙ্গে জোটের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য আমাদের বাধ্য করা হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, ৬০ আসনের মণিপুর বিধানসভায় এনপিপির ৭ জন বিধায়ক রয়েছে।
মণিপুরে হিংসা থামাতে যে পরিকল্পনার অভাব রয়েছে, সে কথা উল্লেখ করে মণিপুরের প্রাক্তন পুলিশকর্তা জয়কুমার বলেন, “রাজ্য এবং কেন্দ্রের দায়িত্ব মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া। কিন্তু যথাযথ পরিকল্পনার অভাব রয়েছে।” এই প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “আমি পরিস্থিতির কোনও উন্নতি লক্ষ করছি না। বরং পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।”
শুক্রবারও বিষ্ণুপুর জেলার কোয়াকটা এবং চূড়াচাঁদপুর জেলার কাংভাইয়ে নতুন করে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। মধ্যরাত থেকে ইম্ফল পূর্ব জেলায় টহল দিতে নামে সেনা এবং পুলিশের যৌথ বাহিনী। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১০০০ জনের একটি দল জেলার অ্যাডভান্স হাসপাতালের নিকটবর্তী জায়গায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। আবার মণিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ২০০-৩০০ জনের একটি দল জমায়েত করার চেষ্টা করে। রাত সাড়ে দশটা নাগাদ এক বিজেপি বিধায়কের বাড়ি ভাঙচুর করার চেষ্টা চালানো হয়। ইম্ফল পশ্চিম জেলার ইরিংবাম থানায় আগুন ধরিয়ে অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ওই জেলার বিজেপি সভাপতি অধিকারীমায়ুম সারদা দেবীর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। কোনওক্রমে উন্মত্ত জনতাকে নিরস্ত করে সেনা।
গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্যে। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষ ঠেকাতে গত ৬ মে মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। নামানো হয় সেনা এবং অসম রাইফেলস বাহিনীকে। কিন্তু তাতে কোনও ফল মেলেনি বলে অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy