সীতারাম ইয়েচুরি। —গ্রাফিক সনৎ সিংহ।
বিজেপি-বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় কমিটিতে ১৪ নম্বর জায়গাটি সিপিএমের জন্য খালি রাখা রয়েছে। বুধবার সেই কমিটির প্রথম বৈঠক হয়ে গিয়েছে দিল্লিতে শরদ পওয়ারের বাড়িতে। কিন্তু সিপিএম এখনও নাম দেয়নি। ফলে দলের কেউ ওই বৈঠকে যানওনি। ঘটনাচক্রে সমন্বয় কমিটির বৈঠকের পর দিনই শরদের বাড়িতে গিয়ে জোট সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা করে এসেছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। কমিটি নিয়ে দু’জনের মধ্যে কোনও আলোচনা হয়েছে কি না, তা কোনও তরফ থেকেই জানা যায়নি। কিন্তু কৌতূহলের বিষয় হল, আদৌ কি সিপিএম ‘ইন্ডিয়া’র ওই কমিটিতে ফাঁকা জায়গা পূরণ করবে? শনি ও রবিবার সিপিএমের দু’দিনের পলিটব্যুরোর বৈঠক রয়েছে। অনেকের মতে, সেই বৈঠকের আগে বেশ দোলাচলেই রয়েছেন ইয়েচুরিরা।
‘ইন্ডিয়া’র বেঙ্গালুরু বৈঠকেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল, পরের মুম্বই বৈঠকে সমন্বয় কমিটি গঠন হবে। জোটের দু’টি বৈঠকের মাঝে সিপিএমের যে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হয়েছিল, সেখানে সমন্বয় কমিটিতে যাওয়া, না-যাওয়া নিয়ে আলোচনা হয়। সিপিএমের একটি অংশের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, তড়িঘড়ি করে নাম দেওয়া হবে না। একটু দেখে নিয়ে তার পর না-হয় শূন্যস্থান পূরণ করা যাবে। দলের কেউ কেউ এ-ও বলছেন, কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সমন্বয় কমিটিতে দলের কেউ থাকবেন না। যদিও সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শমীক লাহিড়ী বলেন, ‘‘নাম চূড়ান্ত করার বিষয়টি পলিটব্যুরোর বৈঠকেই চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’’
তবে, সিপিএমের একটি বড় অংশের দাবি, কেন্দ্রীয় কমিটিকে এড়িয়ে পলিটব্যুরোর পক্ষে সমন্বয় কমিটির সদস্যের নাম চূড়ান্ত করা মুশকিল। সে ক্ষেত্রে দলের মধ্যে নয়া বিতর্ক তৈরি হতে পারে। আবার অনেকের মতে, দলের পলিটব্যুরোর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার রয়েছে। পরে কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন পেলেই হবে।
‘ইন্ডিয়া’র মুম্বই বৈঠক সাংবাদিক সম্মেলনে শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছিলেন, ‘‘সমন্বয় কমিটি ১৪ জনের হবে। ১৩ জনের নাম স্থির হয়ে গিয়েছে। ১৪ নম্বর জায়গাটি সিপিএমের জন্য ফাঁকা রাখা হয়েছে। সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, পরে তাঁরা নাম দেবেন।’’ মুম্বইয়ের বৈঠক হয়েছিল ১ সেপ্টেম্বর। সমন্বয় কমিটিও গঠিত হয়েছিল সেই দিনই। নাম জানায়নি সিপিএম। অথচ প্রচার, গবেষণা, সমাজমাধ্যম সংক্রান্ত ‘ইন্ডিয়া’র যে ‘সাব কমিটি’গুলি তৈরি হয়েছে, সেখানে সিপিএমের প্রতিনিধি রয়েছেন।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিট কোনও ভাবেই চায় না, তৃণমূলের সঙ্গে মঞ্চ ভাগাভাগির ছবি সামনে আসুক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ইয়েচুরির ছবি নিয়ে ক্ষুব্ধ নিচুতলার কর্মীরা। তাঁদের বোঝানোর জন্য রাজ্য সিপিএম বিশেষ কর্মসূচি হিসাবে ‘পাঠচক্র’ অনুষ্ঠিত করেছিল শাখায় শাখায়। যেখানে বিবিধ প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে হয়েছিল নেতাদের। ‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় কমিটিতে তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসাবে অভিষেক থাকায় সেখানে গেলে নতুন করে ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়তে পারে বলে আশঙ্কা বাংলার নেতাদের। প্রথমে শোনা গিয়েছিল, পরিচিত কোনও মুখকে না পাঠিয়ে দলের এমন কোনও পলিটব্যুরোর সদস্যকে সিপিএম ওই কমিটির সদস্য করে পাঠাতে পারে, যাঁর বাংলায় বা কেরলে তেমন পরিচিতি নেই। কিন্তু গোল বেধেছে অন্য জায়গায়। সূত্রের খবর, কেরল রাজ্য কমিটি আবার স্পষ্ট জানিয়েছে, তারা চায় না যে কংগ্রেসের সঙ্গে দল কোথাও এক মঞ্চে থাকুক। কারণ, কেরলে শাসক সিপিএমের বিরোধী দল কংগ্রেসই। সেই রাজ্যের ‘বাস্তবতা’র কথা তারা দলকে জানিয়েছে। ফলে কারণ আলাদা হলেও বাংলা-কেরলের জোড়া চাপে পড়তে হয়েছে ইয়েচুরিদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy