বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। সেই আবহে স্ত্রীর বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ এনে আগেই মুখ খুলেছিলেন চেন্নাইয়ের তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী প্রসন্ন শঙ্কর। এ বার স্ত্রীকে ধর্ষণ, একাধিক নারীর সঙ্গে যৌন সংসর্গ, নিজের শিশুপুত্রকে অপহরণ— এমনই নানা পাল্টা অভিযোগে প্রসন্নের বিরুদ্ধে সরব হলেন তাঁর স্ত্রী দিব্যা শশীধর।
দিব্যা জানিয়েছেন, তাঁর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়ে ‘মিথ্যা’ বলা হচ্ছে। প্রসন্নই বরং একাধিক নারীসঙ্গ করতেন। কখনও কখনও যৌনকর্মীদের বাড়িতে নিয়ে আসতেন। আবার কখনও দিব্যাকে নিজের বন্ধুদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার জন্য জোর করতেন প্রসন্ন। প্রতিবাদ করলে উল্টে দিব্যাকে ‘উদারমনস্ক’ হতে বলতেন তিনি। দিব্যার উপর ২৪ ঘণ্টা নজর রাখার জন্য প্রসন্ন বাড়িতে একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরাও বসিয়েছিলেন। এ ছাড়াও, অভিযোগ, কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াতেন প্রসন্ন। তবে কোথাওই বেশি দিন থাকতেন না। আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য এ বিষয়ে যাবতীয় ছবি, ভিডিয়ো এবং নথিও প্রমাণ হিসাবে দেখিয়েছেন দিব্যা।
আরও পড়ুন:
‘রিপলিং’ নামে সিঙ্গাপুরের বহু কোটি ডলারের একটি সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন প্রসন্ন। বিপুল পরিমাণ ধনসম্পদের মালিক ওই যুবক। সম্প্রতি স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ এবং ছেলের হেফাজতের মামলা চলছিল তাঁর। সেই আবহেই সমাজমাধ্যমে বিচ্ছিন্না স্ত্রীর বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তোলেন প্রসন্ন। তাঁর দাবি, তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীর দায়ের করা অপহরণ এবং ধর্ষণের অভিযোগের তদন্তের নামে তাঁকে হেনস্থা করছে চেন্নাই পুলিশ। যুবক আরও দাবি করেন, একটি বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী। বিষয়টি জানতে পেরেই প্রসন্ন বিবাহবিচ্ছেদের পথে হেঁটেছিলেন। স্ত্রীকে কত খোরপোশ দেওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনাও করেছিলেন দু’জনে মিলে। তবে অভিযোগ, টাকার অঙ্কে সন্তুষ্ট হননি দিব্যা। এর পরেই তিনি প্রসন্নের বিরুদ্ধে ভুয়ো অভিযোগ দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেন বলে দাবি যুবকের। যদিও এ সবের সম্পূর্ণ উল্টো কথাই বলছেন প্রসন্নের স্ত্রী।
উল্লেখ্য, গত বছরের শেষে স্ত্রীর বিরুদ্ধে এমনই নানা গুরুতর অভিযোগ তুলে আত্মহত্যা করেছিলেন বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী অতুল সুভাষ। ওই ঘটনায় সারা দেশে আলোড়ন পড়ে যায়। গত ৯ ডিসেম্বর আত্মহত্যা করেছিলেন অতুল। প্রায় দেড় ঘণ্টার ভিডিয়ো ছাড়াও ২৪ পাতার একটি সুইসাইড নোট রেখে গিয়েছিলেন তিনি, যার ছত্রে ছত্রে স্ত্রী নিকিতা সিঙ্ঘানিয়া ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে নানা গুরুতর অভিযোগ ছিল। অতুলের ‘সুইসাইড নোট’ প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। অতুলের পরিবারের অভিযোগ, টাকা আদায় করতে নানা মিথ্যা মামলা সাজিয়ে অতুলকে ফাঁসানো হয়েছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হন নিকিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। সেই আবহে চেন্নাইয়ের যুবকের খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই ফের হইচই শুরু হয়ে যায় দেশে। তার কয়েক সপ্তাহের মাথায় এ বার প্রকাশ্যে এল যুবকের স্ত্রীর বয়ান।