উঞ্ঝার একটি প্রাইমারি স্কুলে সোমবার ভোট দেওয়ার পর যশোদাবেন। —নিজস্ব চিত্র।
প্রতি বারের নির্বাচনেই তিনি ভোট দেন। সে লোকসভা হোক বা বিধানসভা। এ বারও দিয়েছেন। সোমবার দুপুরে গুজরাতের মেহসানা জেলার উঞ্ঝা থেকে আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্ত্রী যশোদাবেন। গুজরাতে দ্বিতীয় দফার ভোট ছিল সোমবার। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ যশোদা উঞ্ঝারই একটি প্রাথমিক স্কুলে ভোট দিয়েছেন।
সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ আত্মীয়দের সঙ্গে স্থানীয় রঘুভাই সভাভাই পরমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দিতে গিয়েছিলেন যশোদা। সেখান থেকে ফিরে কথা বললেন আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে। কাকে ভোট দিলেন, সে প্রশ্নের সরাসরি জবাব সযত্নে এড়িয়ে সহাস্যে যশোদা বললেন, ‘‘কাকে দিলাম (হাসি)? প্রতি বারই ভোট দিই। তাই এ বারেও ভোট দিলাম।’’ বিশেষ কোনও দলের জয়ের জন্য প্রার্থনা করছেন? যশোদার জবাব, ‘‘প্রার্থনা তো সকলের জন্যই। সকলে যাতে ভাল থাকেন, তার জন্য।’’
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও তিনি ভোট দিয়েছিলেন। নির্বাচনের ফল বেরোনোর দিন গোটা দেশ যখন টিভির সামনে, তিনি তখন গিয়েছিলেন অম্বাজি মাতার মন্দিরে। পুজো দিয়ে প্রার্থনা করছিলেন। জানিয়েছিলেন, মোদীর নেতৃত্বে তিনশোরও বেশি আসন নিয়ে যাতে কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় আসে, সেই প্রার্থনা করেছিলেন। উঞ্ঝার ওই মন্দিরে অম্বাজির পাশাপাশি মহাকালেশ্বরের লিঙ্গও রয়েছে। সে বার তাঁর কাছেও প্রার্থনা করেন যশোদা। ঘটনাচক্রে, বিজেপি প্রাথমিক ভাবে গত লোকসভা ভোটে একাই ৩০৩টি আসন পেয়েছিল।
এই গুজরাত বিধানসভা ভোট সাধারণ ভাবে ‘মোদীর পরীক্ষা’ বলেই পরিগণিত হচ্ছে। কারণ, একে তো রাজ্যের নাম গুজরাত। যেখানে পর পর তিনটি মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী থেকেছেন মোদী। বস্তুত, এই বিধানসভা ভোটেও মোদীই গুজরাতে ‘বিজেপির মুখ’। দ্বিতীয়ত, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোট। যখন প্রধানমন্ত্রী মোদী তৃতীয় বারের জন্য ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হবেন। ভোটপণ্ডিতদের বক্তব্য, গুজরাতের ভোটের ফলাফলের প্রভাব লোকসভা নির্বাচন এবং মোদীর উপরেও পড়বে। তাই গুজরাত ভোটের প্রচারে মন দিয়েছিলেন মোদী। ঘটনাচক্রে, সোমবার মোদীও ভোট দিয়েছেন গুজরাতে। গুজরাতের পাশাপাশিই বিধানসভা ভোট হয়েছে হিমাচল প্রদেশেও। কিন্তু যাবতীয় উৎসাহ গুজরাত নিয়েই।
হিমাচল প্রদেশের পাশাপাশিই ৮ ডিসেম্বর গুজরাত ভোটেরও ফলপ্রকাশ। সে দিনও কি যশোদা মহাকালেশ্বরের মন্দিরে যাবেন? যশোদা এ বারও হাসলেন। পাশ থেকে তাঁর দাদা অশোক মোদী বললেন, ‘‘ও তো প্রতি সপ্তাহেই মন্দিরে যায়।’’
সোমবার রঘুভাই সভাভাই পরমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দিতে গিয়ে স্থানীয় অনেকের সঙ্গেই কথা হয়েছে যশোদার। তবে রাজনীতির কথা কিছুই হয়নি বলেই জানিয়েছেন তাঁর ভাইপো রাকেশ মোদী। তিনি বলেন, ‘‘এমনিতেই আমার পিসি খুবই কম কথা বলেন। যাঁরা এসেছিলেন পিসির সঙ্গে কথা বলতে, তিনি সকলের সঙ্গেই হাসিমুখে কথা বলেছেন।’’
খাতায়কলমে যশোদা বেন ‘মোদীর স্ত্রী’ হলেও ব্যবহারিক দিক দিয়ে তাঁর সঙ্গে মোদীর আর কোনও যোগাযোগ নেই। মোদীর জীবনীকারদের লেখা বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে জানা যায়, অল্পবয়সে বিবাহ করলেও তার অল্পদিন পরেই সঙ্ঘের প্রচারক হয়ে ঘর ছেড়েছিলেন মোদী। সংসারধর্ম করেননি। নিজেকে ‘রমতা যোগী’ বলেই তিনি পরিচয় দিয়ে থাকেন। যশোদাবেন বেশ কয়েক বছর ধরেই উঞ্ঝায় দাদা অশোকের বাড়িতেই থাকেন। অশোকের পুত্র রাকেশ জানান, তাঁর পিসি রোজকার মতো সোমবারও সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়ে পুজোআচ্চা করেছেন বাড়িতে। তার পর দুপুরের খাবার খেয়ে গিয়েছিলেন ভোট দিতে। সেখান থেকে ফেরার পরেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছিল আনন্দবাজার অনলাইন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy