পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় এত পর্যটকের যাতায়াত। তার পরেও কেন সেখানে সেনা মোতায়েন ছিল না? জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে এই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। সর্বদল বৈঠকেও সেই প্রসঙ্গ টেনেছেন বিরোধীরা। কেন্দ্রের তরফে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহেরা নিরাপত্তায় গাফিলতির কথা স্বীকার করেছেন। পাশাপাশি, বৈসরনে কেন সেনা মোতায়েন ছিল না, তার জবাবও দিয়েছেন তাঁরা। কেন্দ্রের যুক্তি, প্রশাসনকে না জানিয়েই ওই রুটে পর্যটকদের নিয়ে গিয়েছিলেন ট্যুর গাইডেরা।
বৃহস্পতিবারের সর্বদল বৈঠকে বৈসরনের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং মল্লিকার্জুন খড়্গেরা। সূত্রের খবর, এর জবাবে কেন্দ্র জানিয়েছে, সাধারণত অমরনাথ যাত্রার আগে বৈসরন এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। সেখানে সেনা মোতায়েন থাকে। ওই সময়েই পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয় বৈসরন। কারণ, তীর্থযাত্রীদের অনেকেরই সেখানে থেকে যান। কিন্তু এ বার বৈসরনের নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখার আগেই গত ২০ এপ্রিল থেকে সেখানে পর্যটকদের নিয়ে যেতে শুরু করে দিয়েছিলেন গাইডেরা। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন কিছুই জানত না। সেই কারণেই বৈসরনে সেনা মোতায়েন করা যায়নি বলেই সর্বদল বৈঠকে জানিয়েছে কেন্দ্র।
সূত্রের খবর, বৈঠকের শুরুতেই তৃণমূল, কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের কোনও কোনও নেতা পহেলগাঁওয়ের নিরাপত্তার এই গাফিলতি নিয়ে সরকারের সমালোচনা করেন। তখন শাহকে সেই অভিযোগ মেনে নেওয়ার ঢঙে বলতে শোনা যায়, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা হয়েছে বলেই তো তিনি সমস্ত নেতাকে বৈঠকে ডেকেছেন! না হলে তো ডাকতেন না!
পরে অবশ্য নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থানের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের সব ক’টি বড় রাজনৈতিক দল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে। বৈঠক শেষে রাহুল বলেছেন, “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে কোনও অভিযানকে আমরা সমর্থন করি।” খড়্গেরও বক্তব্য “সমস্ত দল এই ঘটনার নিন্দা করেছে। জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তি বজায় রাখার জন্য সমস্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উচিত।”
বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু বলেন, “মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটিতে যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা সব দলকে জানানো হয়েছে। পাকিস্তান এবং সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্নে সমস্ত দল ঐক্যবদ্ধ।”