কে সি বেণুগোপাল ছবি সংগৃহীত।
অঙ্কে এমএসসি, তবু কি তিনি কংগ্রেসের রাজনীতির অঙ্ক মেলাতে পারছেন না!
তৃণমূল কংগ্রেস গোয়ার পরে মেঘালয়েও কংগ্রেসে ভাঙন ধরানোর পরে দলের মধ্যে এ বার কে সি বেণুগোপালকে নিয়ে প্রশ্ন উঠল। কেরলের নেতা বেণুগোপাল সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটিতে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত নেতা। কিন্তু একের পর এক রাজ্যে যে ভাবে কংগ্রেস থেকে দলের নেতারা বেরিয়ে গিয়ে অন্য দলে যোগ দিচ্ছেন, তাতে তাঁর সংগঠন সামলানোর দক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। কংগ্রেস নেতাদের প্রশ্ন, রাজস্থান, পঞ্জাবে প্রকাশ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, গোয়া-মেঘালয়ে ভাঙন, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া-জিতিন প্রসাদ-সুস্মিতা দেবদের দলত্যাগের পরেও কেন বেণুগোপাল বহাল তবিয়তে সংগঠনের দায়িত্বে রয়েছেন? কী কারণে বেণুগোপালের উপরে রাহুল গাঁধীর এই অগাধ আস্থা?
গোয়ায় ভোটের আগে প্রবীণ কংগ্রেস নেতাদের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে মেঘালয়ের প্রায় সব বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ফলে তৃণমূলই সেখানে প্রধান বিরোধী দল হয়ে উঠেছে। কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘ছোট ছোট রাজ্য বলে গোয়া-মেঘালয়ের ঘটনাকে উপেক্ষা করার কারণ নেই। কারণ, এই রাজ্যগুলিতে কংগ্রেস বরাবরই যথেষ্ট শক্তিশালী এবং ক্ষমতায় ফেরার জায়গায় রয়েছে।’’ তাঁকে নিয়ে দলের মধ্যে প্রশ্নের মধ্যেই বেণুগোপাল আজ ঘোষণা করেছেন, মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কংগ্রেস ১২ ডিসেম্বর দিল্লিতে জনসভা করবে। সনিয়া, রাহুল গাঁধী সেখানে বক্তৃতা করবেন। কিন্তু কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, সব রাজ্যেই যদি কংগ্রেস এ ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে, তা হলে শত চেষ্টা করেও জাতীয় স্তরে কংগ্রেসের দুরবস্থা কাটবে না।
মেঘালয়ের ঘটনা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরমহলে প্রশ্ন উঠেছে, মুকুল সাংমা ও প্রদেশ সভাপতি ভিনসেন্ট পালার মধ্যে বিবাদ সুবিদিত। ভিনসেন্টকে প্রদেশ সভাপতি করাতেই মুকুল চটে যান। রাহুল গাঁধীও অক্টোবের দুই নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। বেণুগোপাল নিজে দু’পক্ষকে নিয়ে একাধিকবার বৈঠক করেছেন। তারপরেও সংঘাত মেটানো গেল না কেন?
বেণুগোপাল কেরল থেকে লোকসভার সাংসদ ছিলেন। কিন্তু কেরলের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী কে করুণাকরণের ভাবশিষ্য বেণুগোপাল কোনও দিনই জাতীয় স্তরের সংগঠনে কাজ করেননি। কংগ্রেসের অনেকে মনে করেন, অমেঠীতে হেরেও কেরলের ওয়ানাডে জিতে লোকসভায় আসতে পারার জন্য রাহুল বেণুগোপালের উপরে ভরসা করেন। তাই তাঁকে রাজস্থান থেকে রাজ্যসভাতেও নিয়ে এসেছেন। কিন্তু রাজস্থানের এক কংগ্রেস নেতাই বলছেন, ‘‘ফের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে অশৌক গহলৌত এআইসিসি-তে সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন। দেশে কংগ্রেসের সংগঠনের দায়িত্বে আরও ওজনদার নেতা প্রয়োজন।’’ দিল্লির এক কংগ্রেস নেতার মতে, ‘‘ভাল করে হিন্দি বলতে না পারাটাও তাঁর পক্ষে বড় সমস্যা। হিন্দি বলয়ে সমস্যা তৈরি হলে তাই বেণুগোপালের পক্ষে কঠিন হয়ে উঠছে। যে কারণে রাজস্থান, পঞ্জাবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৈরি হলে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে মাঠে নামতে হচ্ছে।’’
বৃহস্পতিবারই আহমেদ পটেলের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। সনিয়া, রাহুল দু’জনেই তাঁকে স্মরণ করেছিলেন। রাহুল বলেছিলেন, আহমেদের মৃত্যু কংগ্রেস পরিবারের কাছে অপূরণীয় ক্ষতি। রাহুল গাঁধীর জমানায় কংগ্রেস আহমেদের অভাবে ভুগছে কি না, তা নিয়েও কংগ্রেসের সদর দফতরে আলোচনা চলছে। যদিও অনেকেই বলছেন, আহমেদ বেঁচে থাকতেই তাঁর সঙ্গে রাহুল-শিবিরের বিবাদ শুরু হয়েছিল। তবে আর এক অংশের মতে, আহমেদ অন্তত রাজ্যের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলে রাখতে পারতেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পওয়ারদের সঙ্গেও কংগ্রেস হাই কমান্ডের সেতুবন্ধনের কাজটি তিনি ভাল ভাবে করতেন। এখন সেই দায়িত্ব পালনেরও কেউ নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy