Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Sam Pitroda

রামমন্দির নিয়ে এত মাতামাতি কেন, প্রশ্ন পিত্রোদার

জানুয়ারি মাসের ২২ তারিখ অযোধ্যায় নবনির্মিত রামমন্দির উদ্বোধন হওয়ার কথা। গর্ভগৃহে রামের বিগ্রহ স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Sam Pitroda

স্যাম পিত্রোদা। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৪৬
Share: Save:

রামমন্দির যে ভাবে জাতীয় রাজনীতির বিষয় হয়ে দাঁড়াল, তাতে বিচলিত বোধ করছেন স্যাম পিত্রোদা। সংবাদমাধ্যমে সে কথা খোলাখুলিই জানিয়েছেন তিনি এবং বিজেপির আক্রমণের মুখে পড়েছেন। ভারতের টেলিকম বিপ্লবের স্থপতি বর্তমানে কংগ্রেসের বিদেশ শাখা, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ় কংগ্রেসের সভাপতি।

জানুয়ারি মাসের ২২ তারিখ অযোধ্যায় নবনির্মিত রামমন্দির উদ্বোধন হওয়ার কথা। গর্ভগৃহে রামের বিগ্রহ স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রস্তুতি পর্ব চলছে পুরোদমে। তারই মধ্যে স্যাম বললেন, ‘‘২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনই এ দেশের নিয়তি নির্ধারণ করবে। ভারত ভবিষ্যতে কোন পথে এগোবে, সেটা ঠিক করে দেবে। সেই কারণেই আমি উদ্বিগ্ন।’’

উদ্বেগের কারণ? পিত্রোদার দাবি, ‘‘ধর্মকে বড্ড বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এখন। গণতন্ত্র পিছনে চলে যাচ্ছে। এই যে সবাই ভাবছে দেশের যা কিছু ভাল সব প্রধানমন্ত্রীর কৃতিত্ব, এই ব্যাপারটা চিন্তার। বেশ ইঙ্গিত পাচ্ছি যে, আমরা ভুল রাস্তায় এগোচ্ছি। গোটা জাতি যখন রামমন্দির, রাম জন্মভূমি, দিয়া জ্বালাও বলে মেতে ওঠে, তখন সেটা বোঝা যায়।’’ পিত্রোদার মতে, ইজ়রায়েল বা পাকিস্তানের মতো ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র গণতন্ত্র, মানবাধিকারভিত্তিক রাষ্ট্রের চেয়ে অনেকটা আলাদা। তিনি যোগ করেন, ‘‘ধর্ম অত্যন্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। জাতীয় চর্চার বিষয় হওয়ার কথা শিক্ষা, বেকারত্ব, বৃদ্ধি, অর্থনীতি, মূল্যবৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, দূষণ... এই সব। কিন্তু এগুলো নিয়ে এখন দেশে কেউ কথা বলছে না।’’ পিত্রোদার দাবি, কোনও ধর্ম নিয়েই তাঁর কোনও নালিশ নেই। মাঝে মধ্যে মন্দিরে যাওয়া নিয়েও সমস্যা নেই। কিন্তু মন্দিরটাই রাজনীতির মূল মঞ্চ হয়ে উঠলে তাঁর আপত্তি আছে। তিনি বলেন, ‘‘মোদীকে মনে রাখতে হবে, যে ৬০ শতাংশ ভোটার তাঁকে ভোট দেয়নি, তিনি তাদেরও প্রধানমন্ত্রী।’’

পিত্রোদার এই মতামত বিজেপি শিবির স্বাভাবিক ভাবেই ভাল চোখে দেখেনি। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর বুধবার বলেন, ‘‘পিত্রোদার কথায় রাহুল গান্ধীর ভাবনার ছাপ দেখা যাচ্ছে। পিত্রোদা তো রাহুলেরই মেন্টর। ওঁরা দু’জনেই দেশবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষা থেকে কত দূরে, সেটা বোঝা গেল।’’ আক্রমণের মুখটা আখেরে রাহুলের দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে রাজীব মন্তব্য করেন, ‘‘রাহুলের কাছে হিন্দুত্বের গুরুত্ব নেই। কারণ তোষণের রাজনীতি। সন্ত্রাসের গুরুত্ব নেই, কারণ সেই তোষণের রাজনীতি। মুদ্রাস্ফীতি, দুর্নীতিরও গুরুত্ব নেই, কারণ ওঁদের তো ধামাধরা পুঁজির কথা বলতে হবে।’’ পিত্রোদাকেও কটাক্ষ করে চন্দ্রশেখর বলেন, ‘‘পিত্রোদা তো ইউপিএ আমলে খুব ক্ষমতাশালী ছিলেন। তখন টুজি কেলেঙ্কারি নিয়ে চুপ ছিলেন! মূল্যবৃদ্ধির কথা উঠলে বলতেন, মূল্যবৃদ্ধি হল তো কী হল?’’

পিত্রোদা নিজে অবশ্য রাহুলের প্রতি তাঁর আস্থা গোপন করেননি। তিনি বরং বলেছেন, ‘‘রাহুল বুদ্ধিমান তরুণ নেতা, রাজনীতি যাঁর ডিএনএ-তে আছে। আমার তাঁকে খুবই যোগ্য বলে মনে হয়।’’ তবে পিত্রোদার এও মনে হয়েছে যে, ‘‘মানুষ হয়তো রাহুলকে ততটা বুঝতে পারেন না। কারণ রাহুলের স্টাইলটা আলাদা! এ দেশে রাজনীতি করতে গেলে মিথ্যাবাদী আর ধুরন্ধর হতে হয়। সৎ রাজনীতিক দেখলে লোকে তাঁকে অনভিজ্ঞ ভেবে নেয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Sam Pitroda Ram Temple Ayodhya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy