শাসক শিবিরের বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে অহেতুক রাজনীতি করছেন বিরোধীরা। প্রতীকী ছবি।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র জানিয়েছিল, করোনার প্রতিষেধক নিয়ে কারও মৃত্যু হলে তার দায় সরকারের নয়। নরেন্দ্র মোদী সরকারের ওই ‘দায় ঝেড়ে ফেলার’ মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আজ সরব হলেন বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, টিকাকরণের ‘কৃতিত্ব নিতে’ প্রতিষেধকের শংসাপত্রে যখন নরেন্দ্র মোদীর ছবি থাকে, তখন তাতে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু দায় নেওয়ার প্রশ্ন উঠলেই তা ঝেড়ে ফেলতে ব্যস্ত শাসক শিবির। বিরোধীদের অভিযোগ, কোভিডের তীব্র প্রকোপ চলাকালীন অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর দায় রাজ্যের ঘাড়ে ঠেলেছিল কেন্দ্র। এ বার প্রতিষেধক নেওয়ার পরে মৃত্যু ঘটলে তারও দায় এড়াতে নেমে পড়েছে মোদী সরকার।
প্রতিষেধক নেওয়ার পরে মারা যাওয়া দুই তরুণীর পরিবার সম্প্রতি কেন্দ্রের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। সেই মামলার শুনানিতে সরকার জানায়, টিকা নেওয়া আদৌ বাধ্যতামূলক ছিল না। গোটাটাই ছিল সংশ্লিষ্ট গ্রহীতার ইচ্ছার উপরে। তাই ক্ষতিপূরণের দায় কোনও ভাবেই কেন্দ্রের উপরে বর্তায় না।
কেন্দ্রের ওই অবস্থান প্রসঙ্গেই আজ কংগ্রেস টুইটারে লিখেছে, ‘‘প্রথমে বলা হল, অক্সিজেনের অভাবে কারও মৃত্যু ঘটেনি। তার পরে কোভিডে মৃতদের কোনও সাহায্য দেওয়া হল না। আর এখন বলা হচ্ছে প্রতিষেধক নেওয়ার পরে মৃতদের কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সত্যিই জানেন, কী ভাবে দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে হয়। তিনি এক জন প্রকৃত ইভেন্ট ম্যানেজার।’’ কংগ্রেসের মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর সরকার কোনও কিছুর জন্যই দায়বদ্ধ নয়। মোদীজি, শংসাপত্রের ছবি থেকে সটান দায়িত্ব না নেওয়ার সফর পার হওয়ার জন্য ধন্যবাদ।’’ তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে সরকারের দেওয়া হলফনামা থেকে স্পষ্ট, প্রত্যেক নাগরিক নিজের দায়িত্বে টিকা নিয়েছেন। এই হল আত্মনির্ভর ভারতের নতুন সংজ্ঞা!’’
অন্য দিকে শাসক শিবিরের বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে অহেতুক রাজনীতি করছেন বিরোধীরা। কারণ গোড়া থেকেই সরকার বলে আসছে, টিকাকরণ বাধ্যতামূলক নয়। তা ছাড়া কোনও নাগরিক কোন সংস্থার টিকা নেবেন, সেই সিদ্ধান্ত তিনিই নিয়েছেন। তাই টিকা নেওয়ার পরে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট সংস্থারই ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত।
টিকাকরণ ঘিরে এই বিতর্কে কিছুটা হলেও উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কারণ গোড়া থেকেই তাঁরা বলে এসেছেন, করোনার সংক্রমণ রুখতে টিকাকরণের কোনও বিকল্প নেই। বর্তমানে দেশে করোনা আক্রান্তের হার নিম্নমুখী হলেও নতুন বছরের শুরুতে ফের সংক্রমণের আরও একটি ঢেউ আসার আশঙ্কা রয়েছে। এমনিতেই দেশের বড় সংখ্যক মানুষ টিকার দু’টি ডোজ় নিলেও বুস্টার ডোজ় নিতে সে ভাবে আগ্রহ দেখাননি। ফলে সংক্রমণের সম্ভাব্য ঢেউকে রুখতে যদি বুস্টার ডোজ় নেওয়ার প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে চলতি বিতর্কের জেরে টিকাকরণ অভিযান অনেকাংশেই ধাক্কা খেতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের।।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy