বাবা সিদ্দিকি (ইনসেটে)। মরদেহ জাতীয় পতাকায় মুড়ে তাঁর শেষযাত্রা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকিকে গুলি করে খুন করা হয়েছে গত ১২ অক্টোবর। দশেরার দিন তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিল দুষ্কৃতীরা। এখনও পর্যন্ত সেই ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মৃত্যুর আগে শেষ বার কী বলেছিলেন সিদ্দিকি? প্রকাশ্যে এনেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, গুলি খাওয়ার পরেও কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন সিদ্দিকি। কিন্তু তিনটি বাক্যের বেশি আর কিছু বলতে পারেননি।
সিদ্দিকির ঘনিষ্ঠ যাঁরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা জানিয়েছেন, গুলি খাওয়ার পরে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তখনই শরীরে একাধিক গুলি নিয়ে কোনও রকমে মুখ খুলেছিলেন বর্ষীয়ান নেতা। থেমে থেমে তিনি বলেন, ‘‘আমার গুলি লেগেছে। আমি বাঁচব না। মরে যাব।’’ এর পর কয়েক মিনিটের মধ্যেই নিস্তেজ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। পরে হাসপাতালে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সিদ্দিকির খুনের তদন্ত শুরু করেছে মুম্বই পুলিশ। ঘটনার পরপরই গ্রেফতার করা হয়েছিল দুই আততায়ী গুরমেল সিংহ এবং ধরমরাজ কাশ্যপকে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত তৃতীয় আততায়ী শিবকুমার গৌতম এখনও পলাতক। পুলিশের অনুমান, গোটা ঘটনার মূলচক্রী শুভম লোঙ্কার। তাঁর খোঁজ চলছে। ১৩ অক্টোবর পুণে থেকে শুভমের ভাই প্রবীণ লোঙ্কারকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশ থেকে ধরা হয়েছে হরিশকুমার নিসাদকে। এঁরা সকলেই হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করেছিলেন, দাবি তদন্তকারীদের।
পুলিশ আগেই জানিয়েছিল, সিদ্দিকির খুনের ঘটনার সঙ্গে জেলবন্দি গ্যাংস্টার লরেন্স বিশ্নোইয়ের গোষ্ঠীর যোগ রয়েছে বলে তাদের অনুমান। হত্যার জন্য ভাড়াটে খুনিদের নিয়োগ করা হয়েছিল। যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁরাও পুলিশি জেরার মুখে বিশ্নোই-যোগ স্বীকার করেছেন বলে দাবি। মূলচক্রী শুভম বিশ্নোই গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত, অনুমান পুলিশের।
পুলিশ জানিয়েছে, এর আগে অন্তত ১০ বার সিদ্দিকিকে খুন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রতি বার দুষ্কৃতীরা কোনও না কোনও কারণে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ১২ অক্টোবর যা হয়নি। ওই দিন সিদ্দিকি বা তাঁর পুত্র জিশান, যে কোনও এক জনকে মারতে দুষ্কৃতীদের পাঠানো হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। অর্থাৎ, তাঁদের নিশানায় ছিলেন সিদ্দিকির পুত্রও। তাঁর দফতরের সামনেই গুলি করে সিদ্দিকিকে খুন করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, ঘটনার দিন দশেরা উপলক্ষে বাজি ফাটানো হচ্ছিল বান্দ্রায়। সেখানে বিনামূল্যে শরবত বিলি করা হচ্ছিল। অন্তত আধ ঘণ্টা ধরে সেখানে দাঁড়িয়ে শরবত খাচ্ছিল দুষ্কৃতীরা। সিদ্দিকি গাড়িতে উঠতে যাওয়ার সময় আচমকা তারা গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই তিনি লুটিয়ে পড়েন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy