দিল্লিতে ভরাডুবি হয়েছে আম আদমি পার্টি (আপ)-র। অরবিন্দ কেজরীওয়ালের টানা দু’বারের বিজয়রথ থেমেছে বিজেপির কাছে। কেন দিল্লিতে এমন শোচনীয় অবস্থা হল, তা নিয়ে মতামত জানিয়েছেন প্রাক্তন ভোটকুশলী তথা জন সুরাজ পার্টির প্রধান প্রশান্ত কিশোর। দিল্লি পুনরায় জয় করতে কী কী করা উচিত ছিল কেজরীর, তা-ও ব্যাখ্যা করলেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন ভোটকুশলী জানান, সাম্প্রতিক সময়ে কেজরীওয়ালের রাজনৈতিক অবস্থানই আপের হারের অন্যতম কারণ! পিকের কথায়, ‘‘কেজরীওয়াল প্রথমে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’তে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে দিল্লি ভোটের সময় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না করে লড়ার কথা জানান, যা মানুষের মনে তাঁর এবং দলের অবস্থান সম্পর্কে অবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছিল।’’
প্রশান্তের কথায়, ‘‘দিল্লিতে আপের পরাজয়ের প্রথম কারণ ছিল ১০ বছরের প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া।’’ তিনি মনে করেন, আপের শাসনের বিরুদ্ধে দিল্লিবাসীর মনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছিল। এ ছাড়াও গ্রেফতারির পর পরই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে কেজরীওয়ালের ইস্তফা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হারের অন্যতম কারণ বলে মত পিকে-র। তাঁর কথায়, ‘‘আবগারি মামলায় গ্রেফতারের পরেই কেজরীওয়ালের উচিত ছিল ইস্তফা দেওয়া। জামিনের পর পদত্যাগ করা এবং ভোটের আগে অন্য কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করা, কেজরীওয়ালের একটি বড় কৌশলগত ভুল বলে প্রমাণিত হল।’’ দিল্লিতে ঝুপড়ি সমস্যা, তা সমাধানে প্রশাসনিক ত্রুটি, বর্ষার সময় নিচু এলাকায় বাসিন্দাদের সমস্যার সমাধানে ব্যর্থতা— এমন নানা কারণের কথা তুলে ধরেছেন পিকে।
আরও পড়ুন:
দিল্লির ৭০ আসনের বিধানসভায় এ বার আপের ভাগ্যে জুটেছে মাত্র ২২টি আসন। ৪৮ আসন জিতে ২৭ বছর পর ক্ষমতায় ফিরেছে বিজেপি। তবে ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই আপই ৬২ আসনে জয় পেয়েছিল। সেই ভোটে আপের জন্য রণকৌশল সাজিয়েছিলেন প্রশান্তই। তাঁর প্রাক্তন সংস্থা ‘আইপ্যাক’ই নির্বাচনী কৌশল ঠিক করেছিল আপ এবং কেজরীওয়ালের জন্য। ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও আপের জন্য রণকৌশল সাজিয়েছিল ‘আইপ্যাক’ই। তবে কেজরীকে ভোটের বৈতরণী পার করাতে ব্যর্থ তারা। ঘটনাচক্রে, ‘আইপ্যাক’-এর সঙ্গে এখন আর যুক্ত নেই পিকে।