Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

রেলমন্ত্রী হলে হাল ফেরাতে কী করতে চান

ট্রেনে গার্ডের কাজটা থাকবে, কিন্তু গার্ড থাকবেন না। এই প্রস্তাব কিছু রেলকর্মীরই। তাঁরা ট্রেনে গার্ড রাখার ব্যবস্থাটাই পাকাপাকি ভাবে তুলে দিতে চান। ওই কর্মীদের প্রস্তাব, গার্ডের কাজ করুক আধুনিক যন্ত্র।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৬
Share: Save:

ট্রেনে গার্ডের কাজটা থাকবে, কিন্তু গার্ড থাকবেন না। এই প্রস্তাব কিছু রেলকর্মীরই। তাঁরা ট্রেনে গার্ড রাখার ব্যবস্থাটাই পাকাপাকি ভাবে তুলে দিতে চান। ওই কর্মীদের প্রস্তাব, গার্ডের কাজ করুক আধুনিক যন্ত্র।

রেলকর্মীদেরই অনেকে মনে করেন, রেলের প্রশাসন মাথাভারী। এত অফিসারের প্রয়োজন নেই। এখনই অফিসার কমিয়ে দেওয়া হোক। তা হলে রেলের খরচও কমবে।

এই ধরনের হরেক প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে পৌঁছেছে। সব ক’টিই এসেছে রেলকর্মীদের কাছ থেকে। রেলের হাল ফেরানোর জন্য কর্মীদের কে কী ভাবছেন, তার হদিস পেতে চাইছে রেল মন্ত্রক। তাই কর্মীদের কাছে প্রস্তাব চেয়েছিল তারা। সেই জন্য পাঠানো হয়েছিল একটি প্রশ্ন: আপনি রেলমন্ত্রী হলে কী করবেন?

মাস দুয়েক আগে প্রশ্নটা পাঠানো হয়েছিল রেলের ১৭টি জোনের ১৩ লক্ষ কর্মীর কাছে। রেল মন্ত্রক চায়, রেলের সঙ্গে যুক্ত যাঁরা, পেশাগত অভিজ্ঞতা যাঁদের আছে— তাঁরা নিজেদের চিন্তাভাবনার কথা জানান। সেখান থেকে নিশ্চয়ই এমন কিছুর সন্ধান মিলবে, যা রূপায়ণ করলে রেলের উপকার তো হবেই। সামগ্রিক ভাবে ভাল হবে দেশেরও। কেননা রেলই দেশের প্রাণরেখা।

এর আগে বিভিন্ন কমিটি (বিবেক দেবরায় কমিটি, ই শ্রীধরন কমিটি ইত্যাদি)-র কাছ থেকে নতুন নতুন ভাবনা গ্রহণ করেছে রেল। কিন্তু রেলকর্মীরা কী ভাবছেন, তা জানার আগ্রহ এবং উদ্যোগ এই প্রথম।

ফোন, ওয়েবসাইট, হোয়াটসঅ্যাপ মারফত কর্মীদের পাঠানো প্রায় দেড় লক্ষ প্রস্তাব রেল বোর্ডের দফতরে পৌঁছে গিয়েছে। তার থেকে বাছাই করা হয়েছে সেরা ১৫টিকে। ১৮ নভেম্বর, শুক্রবার হরিয়ানার সুরজকুণ্ডে শুরু হবে দু’দিনের ‘রেল বিকাশ শিবির’। সেখানে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। যে-সব রেল জোন থেকে সেরা প্রস্তাব এসেছে, সেখানকার জেনারেল ম্যানেজার, অন্য আধিকারিকেরাও হাজির থাকবেন। যে-পনেরো জন কর্মী ওই সব প্রস্তাব পাঠিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী। ওই পনেরো জনকে পুরস্কৃতও করবেন তিনি।

কেন তাঁরা এই ধরনের প্রস্তাব দিয়েছেন, কী ভাবে তা রূপায়ণ করা সম্ভব এবং তাতে রেলের বা দেশের কী লাভ হতে পারে— পনেরো জন কর্মী ওই শিবিরে তা ব্যাখ্যা করবেন। ওই সব প্রস্তাব সম্পর্কে অভিমত জানাবেন সংশ্লিষ্ট জোনের বিশেষজ্ঞ আধিকারিকেরাও। পুরোদস্তুর কাটাছেঁড়া হবে ১৫টি প্রস্তাব নিয়ে।

কী ধরনের প্রস্তাব জমা পড়েছে?

কোনও কোনও রেলকর্মী সরাসরি বলে দিয়েছেন, রেলকে ‘পাবলিক সেক্টর আন্ডারটেকিং’ বা পিএসইউ করা হোক। কারও মত, রেলে চাই নিগম, দিল্লি মেট্রোর মতো। কেউ চান, স্মার্ট কার্ড চালু করুক রেল। কারও প্রস্তাব, আয় বাড়াতে ‘হেরিটেজ ট্যুরিজম’ এবং সিনেমার শ্যুটিংয়ের জন্য নিয়মিত ভাড়া দেওয়া হোক ট্রেন। রেলের হাতে বেশ কিছু স্টিম ইঞ্জিন রয়েছে, যেগুলি এখনও সচল। সেগুলির সঙ্গে কামরা জুড়ে হেরিটেজ ট্যুরের ব্যবস্থা করা হোক। কিছু কর্মী চান, লোকাল ও মেল এক্সপ্রেস ট্রেনে গার্ড-বাক্স তোলা বন্ধ হোক। তাতে সময় নষ্ট হবে না।

দূরপাল্লার সব ট্রেনের কম্পোজিশন (অর্থাৎ কোন কোন শ্রেণির ক’টি কামরা) এক রকম করে দেওয়ার প্রস্তাবও পাঠিয়েছেন কিছু কর্মী। এতে কী সুবিধা হবে? দূরপাল্লার ট্রেন কোনও ‘টার্মিনাল’ বা প্রান্তিক স্টেশনে ঢুকতে দেরি করলে তার জায়গায় অন্য একটি ট্রেন চালিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। এখন কোনও ট্রেন স্টেশনে ঢুকতে যত দেরি করে, ফিরতি পথেও তত দেরি হতে থাকে। কারণ, দূরপাল্লার প্রতিটি ট্রেনেরই কম্পোজিশন আলাদা। কামরা-সহ কম্পোজিশন এক রকম করে দিলে একটির জায়গায় অন্য ট্রেন ঢুকিয়ে দিয়ে সময়ের সদ্ব্যবহার করা যাবে। হয়রানি কমবে যাত্রীদের।

অন্য বিষয়গুলি:

to back up Indian Railway
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy