Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Union Budget 2024-25

বাজেটে নীতীশদের দাবি সামলানোর পরীক্ষা নির্মলার

চন্দ্রবাবু রাজ্যের কোষাগারের হাল ফেরাতে আর্থিক সাহায্য, রাজধানী অমরাবতী গড়ে তোলা ও অন্যান্য পরিকাঠামোর জন্য যে আর্থিক সাহায্য চেয়েছেন, তার পরিমাণ প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা।

নির্মলা সীতারামন।

নির্মলা সীতারামন। —ফাইল ছবি।

অগ্নি রায়, প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৪ ০৮:৩০
Share: Save:

এক জন শরিক রাজ্যের জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকার অর্থ সাহায্য চাইছেন। অন্য শরিক চাইছেন ৩০ হাজার কোটি টাকা। তৃতীয় মোদী সরকারের প্রথম বাজেটের আগে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের প্রধান চ্যালেঞ্জ, দুই শরিক দলের মুখ্যমন্ত্রীকে সামলে কেন্দ্রের এনডিএ জোট অটুট রাখা।

অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দাবি মেনে দুই রাজ্যকে সাহায্য করতে গিয়ে অন্যত্র খরচ ছাঁটাই করতে হবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। একই সঙ্গে চিন্তার কারণ হল, এই দুই রাজ্যকে সাহায্য করা হচ্ছে বলে পশ্চিমবঙ্গের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি ফের কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে পারে।

সরকারি সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু বৈঠক করে যাওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার অন্ধ্রপ্রদেশে ৬০ হাজার কোটি টাকার তেল শোধনাগার এবং জৈব রসায়ন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি মঞ্জুর করেছে। কিন্তু চন্দ্রবাবু রাজ্যের কোষাগারের হাল ফেরাতে আর্থিক সাহায্য, রাজধানী অমরাবতী গড়ে তোলা ও অন্যান্য পরিকাঠামোর জন্য যে আর্থিক সাহায্য চেয়েছেন, তার পরিমাণ প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা। একই ভাবে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার তাঁর রাজ্যের পরিকাঠামোয় টাকা ঢেলে আর্থিক গতি আনতে যে দাবিদাওয়া রেখেছেন, তার পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।

নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এনডিএ সরকার এখন দুই প্রধান শরিক তেলুগু দেশম পার্টি, জেডিইউ-র উপরে নির্ভরশীল। তেলুগু দেশম সূত্রের খবর, চন্দ্রবাবু নরেন্দ্র মোদীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক বা অন্ধ্রের জন্য বিশেষ শ্রেণিভুক্ত রাজ্যের মর্যাদা চাননি। শুধু রাজ্যের উন্নয়নে টাকা চাইছেন। একই ভাবে জেডিইউ-এর বক্তব্য, নীতীশও বড় মন্ত্রক, স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারের পদ না চেয়ে রাজ্যের উন্নয়নে টাকা চাইছেন। জেডিইউ সম্প্রতি বিহারের জন্য বিশেষ শ্রেণিভুক্ত রাজ্য বা বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের দাবি তুলেছে।

অর্থ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, যোজনা কমিশন তুলে দেওয়ার পরে অর্থ কমিশনও বিশেষ শ্রেণিভুক্ত রাজ্যের ভেদাভেদ তুলে দিয়েছে। আগে বিশেষ শ্রেণিভুক্ত রাজ্যের জন্য কেন্দ্রীয় সাহায্যে চলা প্রকল্পে কেন্দ্র ৯০ শতাংশ অর্থ দিত। সাধারণ রাজ্যের জন্য কেন্দ্র ৬৯ শতাংশ অর্থ দেয়। এখন শুধুমাত্র উত্তর-পূর্ব ও পার্বত্য রাজ্যের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কেন্দ্রীয় সাহায্যে চলা প্রকল্পের ৯০ শতাংশ খরচ বহন করে। তবে কোনও রাজ্যের জন্য অর্থ কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে কেন্দ্র পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে আর্থিক সাহায্য করতে পারে। বাজেটে তারই রাস্তা খোঁজা হবে।

অন্ধ্র ও বিহারের জন্য বাজেটে উপহার না থাকলে কি মোদী সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠবে? নায়ডু তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে বলছেন, তিনি এক এবং একমাত্র নিজের রাজ্যের উন্নয়ন নিয়েই চিন্তিত। মোদীর জাহাজ ডোবানোর ইচ্ছা তাঁর নেই। কিন্তু ১৬ সাংসদের সমর্থনের মূল্য যে তিনি গুনেগেঁথে নেবেন, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। নীতীশও বার্তা দিয়েছেন, তিনি কেন্দ্রের সাহায্যে বিহারের উন্নয়নের যজ্ঞ ঘোষণা করে, আগামী বছর ফের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার বাসনা নিয়ে বিহারের ভোটে নামতে চান। নরেন্দ্র মোদীকে বিপদে ফেলার তাঁরও কোনও ইচ্ছে নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE