প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে। —ফাইল চিত্র
কৃষি আইনের বিরুদ্ধে শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল কেন্দ্র। কৃষক বিদ্রোহ মেটাতে কেন্দ্রের সদিচ্ছার অভাব, আইন প্রণয়নে একগুঁয়েমি— এমন একাধিক মন্তব্য করল প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের বেঞ্চ, যা কেন্দ্রের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিল কয়েক গুণ। সলিসিটার জেনারেল মাঝে মাঝে যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বটে, কিন্তু প্রধান বিচারপতির তোপের মুখে কার্যত সে সব উডে় গিযেছে। গোটা প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রের ভূমিকায় শীর্ষ আদালত ‘হতাশ’ বলেও মন্তব্য করেছেন বোবদে। মঙ্গলবারও চলবে শুনানি।
৩টি কৃষি আইন আপাতত স্থগিত রাখাতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেপ্টেম্বরে সংসদে পাশ হওয়া ৩টি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রচুর মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলাগুলি একত্রিত করে শুনানি চলছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে। সেই শুনানিতেই সোমবার কেন্দ্রকে একের পর এক বিষয়ে প্রশ্ন তুলে তীব্র ভর্ৎসনা করেছেন প্রধান বিচারপতি।
কী কী বিষয়ে প্রশ্ন তুললেন এবং কেন্দ্রের ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন প্রধান বিচারপতি বোবদে? কেন্দ্র জানিয়ে দিয়েছে, আইন প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়। কেন্দ্রের এই অবস্থানকে কার্যত একগুঁয়েমি বলে মনে করে আদালত। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘কৃষি আইন রদ করতে কেন কোনও সাড়া নেই? কেন্দ্র এই আইন বাতিল করতে রাজি হলে তবেই আমরা কৃষকদের আলোচনার টেবিলে বসতে বলব। স্পষ্ট করে বলুন, আপনারা রদ করবেন, নাকি আদালত করবে? আমরা বুঝতে পারছি না, কেন যে কোনও প্রকারে এই আইন চালু করতে চাইছে সরকার।’’
আরও পড়ুন: নীলবাড়ির লক্ষ্যে লকেটে ভরসা অমিত-দিলীপের, পেলেন বড় দায়িত্ব
কেন্দ্রের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বোঝাতে চান, বহু কৃষক সংগঠন এই আইন সমর্থন করেছে। দক্ষিণ ভারত থেকে কেউ প্রতিবাদে শামিল হননি এবং এটা কৃষকদের একাংশের প্রতিবাদ। কিন্তু তাঁর কথা কার্যত শেষ হওয়ার আগেই বিচারপতি বোবদে বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এমন কোনও মামলা জমা পড়েনি, যাতে বলা হয়েছে কৃষি আইন খুব ভাল।’’
আরও পড়ুন: আপাতত কৃষি আইন স্থগিত রাখতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট
কেন্দ্রেকে উদ্দশ্য করে বোবদে আরও বলেন, ‘‘কৃষক সঙ্কট কাটাতে কেন্দ্র কোনও সক্রিয়তাই দেখায়নি। কোনও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হলে তার দায় নেবে কে? সংবিধানকে রক্ষা করার দায়িত্ব আদালতের। কোনও সমস্যা হলে তার জন্য দায়ী থাকব আমরা প্রত্যেকেই। আমরা চাই না, কেউ আহত হোন বা রক্তপাত হোক।’’
শেষ পর্যন্ত শীর্ষ আদালত একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়ে বলেছে, ‘‘একটা কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিচ্ছি আমরা। আপাতত ৩টি কৃষি আইন স্থগিত রাখার প্রস্তাবও দিচ্ছি। কেউ সওয়াল করতে চাইলে করতে পারেন।’’ ওই কমিটিতে কাদের রাখা হবে, কেন্দ্র এবং কৃষক সংগঠনগুলিকে তাঁদের নাম জমা দেওয়ার কথাও বলেছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy