অল্লু অর্জুনের গ্রেফতারির পর আনন্দবাজার অনলাইনে মুখ খুলেছেন মূল অভিযোগকারী ভাস্কর মাগুদামপল্লি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
প্রিয় অভিনেতার ছবি দেখতে গিয়ে জীবনের সবচেয়ে প্রিয় মানুষটাকেই হারিয়েছেন তিনি। ন’বছরের সন্তান এখনও বিপন্মুক্ত নয়। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে তাকে পাঞ্জা লড়তে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অল্লু অর্জুনের গ্রেফতারির খবর শুনে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হায়দরাবাদের ঘটনায় মূল অভিযোগকারী ভাস্কর মাগুদামপল্লি। আনন্দবাজার অনলাইনে এ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন তিনি। জানিয়েছেন, তিনি অভিযোগ তুলে নিতে চান।
হায়দরাবাদে ‘পুষ্পা ২’-এর প্রিমিয়ারে পদপিষ্ট হয়ে মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় অভিনেতা অল্লুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে হায়দরাবাদের চিক্কাদপল্লি থানায়। অল্লুর গ্রেফতারির খবর আসতেই আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল ভাস্করের সঙ্গে। বছর ৪০-এর যুবক হায়দরাবাদের দিলসুখ নগরের শালিবাহানা নগর এলাকার বাসিন্দা। গত ৪ ডিসেম্বর স্ত্রী, পুত্র এবং আট বছরের কন্যাকে নিয়ে তিনি হায়দরাবাদের সন্ধ্যা থিয়েটারে গিয়েছিলেন। ওই দিন সেখানে ‘পুষ্পা ২’-এর প্রিমিয়ার ছিল। ছবি নিয়ে তাঁদের মধ্যে উন্মাদনা ছিল বটে, তবে সেই ছবিই যে এমন বিপদ ডেকে আনবে, তা আন্দাজ করতে পারেননি কেউ। আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নের উত্তরে ভাস্কর বলেন, ‘‘ ১০ দিন হল আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। ১০ দিন আগে ওকে হারিয়েছি। আজ সেই উপলক্ষে আমাদের বাড়িতে পুজো রয়েছে। আমি এখানেই।’’ এর পরেই প্রশ্ন করা হয়, তিনি কি অভিযোগ তুলে নিতে চান? জবাবে ভাস্কর বলেন, ‘‘অভিযোগ তুলে নিতে চাই।’’
সংবাদমাধ্যমেই প্রিয় অভিনেতার গ্রেফতারির খবর পেয়েছেন ভাস্কর। তিনি বলেন, ‘‘আমি কিছু বলার পরিস্থিতিতে নেই। পুরো খবর এখনও দেখিনি। আমার ছেলে হাসপাতালে। পুজো শেষ হলে ওর কাছেই যাব। ছেলেকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।’’
কেন অভিযোগ তুলে নেওয়ার কথা ভাবছেন? ভাস্কর বলেন, ‘‘আমার স্ত্রীর মৃত্যুর নেপথ্যে অল্লু অর্জুনের কোনও হাত নেই। আমার ছেলে ছবিটি দেখতে চেয়েছিল। তাই আমরা গিয়েছিলাম। এতে অভিনেতার কোনও দোষ নেই। পুলিশ আমাকে ওঁর গ্রেফতারির কথা জানায়নি।’’
একে স্ত্রীবিয়োগের যন্ত্রণা, তার উপর একমাত্র পুত্রের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ— গত ১০ দিনে একেবারে এলোমেলো হয়ে গিয়েছে ভাস্করের জীবন। ৪ তারিখ রাতে যখন স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে সিনেমা দেখার আশায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন, জানতেন না, দেখা পাবেন প্রিয় অভিনেতারও। এ-ও জানতেন না, সেই অভিনেতাই তাঁদের জীবন ওলটপালট হয়ে যাওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়াবেন। সংবাদমাধ্যমে ভাস্কর এর আগে জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অল্লুকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি উন্মাদনা ছিল ন’বছরের পুত্র সাই তেজের। মূলত তার বায়নাতেই ছবিমুক্তির আগে প্রিমিয়ারে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। স্ত্রীকে হারিয়েছেন ভাস্কর। ছেলেও ভেন্টিলেশনে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। ৪ ডিসেম্বরের রাত চাইলেও ভুলতে পারছেন না তিনি। বার বার ফিরে ফিরে আসছে স্মৃতি।
‘পুষ্পা ২’-এর প্রিমিয়ারে আচমকা অল্লু নিজে হাজির হন। এমনিতেই প্রিমিয়ার উপলক্ষে প্রেক্ষাগৃহের সামনে ভিড় ছিল। অভিনেতা নিজে চলে এলে ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি, শোরগোল। এর মাঝে পড়ে শ্বাসকষ্ট হতে থাকে ভাস্করের স্ত্রী রেবতী এবং পুত্র সাই তেজের। তাঁরা ভিড়ের মধ্যেই দমবন্ধ হয়ে পড়ে যান। পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে রেবতীর মৃত্যু হয়। এর পরেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ভাস্কর। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে সন্ধ্যা থিয়েটার কর্তৃপক্ষ, অল্লু অর্জুন এবং তাঁর টিমের বিরুদ্ধে পুলিশ এফআইআর দায়ের করে। শুক্রবার অভিনেতার গ্রেফতারির নেপথ্যেও রয়েছে ভাস্করের সেই অভিযোগপত্রই। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৫, ১১৮ (১) এবং ৩ (৫) ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy