নয়াদিল্লিতে বণিকসভার বৈঠকে নির্মলা সীতারামন। ছবি: পিটিআই।
অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দাওয়াই কোথায়?
বাজেট পেশের প্রায় ৫০ ঘণ্টা পরে প্রথম বার শিল্প মহলের মুখোমুখি হয়েই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন মিঠে-কড়া প্রশ্নের মুখে পড়লেন।
প্রশ্ন উঠল, আর্থিক বৃদ্ধি তলানিতে ঠেকেছে। অর্থনীতির ঝিমুনির প্রধান কারণ, বাজারে চাহিদা নেই। সেই চাহিদা বাড়াতে বাজেটে কী দাওয়াই দেওয়া হল? আমজনতার কেনাকাটা করার ক্ষমতা বাড়াতে কী করলেন?
অর্থমন্ত্রী জবাব দিলেন, প্রত্যাশা ছিল যে, অর্থনীতির ঝিমুনি কাটাতে সরকার দরাজ হাতে খরচ করবে। কিন্তু বাজার থেকে ধার করে, রাজকোষ ঘাটতি বাড়িয়ে তিনি সে পথে হাঁটতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা খরচ করতে রাজি আছি, যদি তা করতে হয়। কিন্তু দেদার খরচ বাড়িয়ে অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি করব না। আমরা এখন শুধু পরিকাঠামো তৈরিতে খরচ করব।’’ ২০০৮-এ বিশ্ব জুড়ে মন্দার মোকাবিলায় তৎকালীন ইউপিএ-সরকার রাজকোষ ঘাটতির রাশ আলগা করে, খরচ বাড়িয়ে অর্থনীতি চাঙ্গা করার দাওয়াই বা ‘স্টিমুলাস’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তাতে মন্দার আঁচ থেকে দেশের অর্থনীতিকে বাঁচানো গেলেও মূল্যবৃদ্ধির হার বেড়ে গিয়েছিল। রাজকোষ ঘাটতি ও চালু খাতায় বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের ঘাটতি নাগালের বাইরে চলে গিয়েছিল। আজ নির্মলা সে দিকেই ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘‘সে সব আমাদের স্মৃতিতে এখনও টাটকা।’’
কিন্তু প্রাথমিক ভাবে বাজারে চাহিদা বাড়বে কী করে, কেনাকাটার ক্ষমতা কোন পথে বাড়বে, ফিকি-র সদস্য মোহিত সরাফ সেই প্রশ্ন তুলেছেন। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গ্রামে রোজগার কমেছে। সেখানকার বাজারে চাহিদা বাড়াতে টাকা জোগানোর দরকার ছিল। একই প্রশ্ন তুলে শিল্পপতি বিক্রমজিৎ সিংহ সাহনের প্রশ্ন, চাষিরা তো সমস্যায় রয়েছেন। তাঁরা বাজেটে কী পেলেন?
অর্থমন্ত্রীর মনে করিয়ে দেন, তিনি বাজেট বক্তৃতায় চাষিদের জন্য ১৬ দফা পদক্ষেপের কথা বলেছেন। তাঁর বাজেট বক্তৃতা ইতিহাসে দীর্ঘতম ছিল। কিন্তু সমস্ত মহলের জন্য আলোচনা করেই তিনি বাজেট করেছেন। তাই বাজেটের প্রস্তুতিতেও তিনি দীর্ঘতম সময় নিয়েছেন। কিন্তু শেয়ার বাজার যে খুশি হল না? অর্থমন্ত্রীর জবাব, ‘‘আজ তো শেয়ার বাজার খুশি। হয়তো উল্লসিত নয়। তবে খুশি।’’
মোদী জমানায় আয়কর দফতর-ইডি-সিবিআইয়ের তৎপরতায় শিল্প মহল আতঙ্কিত বলে অভিযোগ। বাজেটে শিল্প মহলের ‘আস্থা’ ফেরানোর উপরে জোর দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আশ্বাস দিয়েছিলেন, আইন মেনে কাজ করলে আয়কর দফতর হেনস্থা করবে না। এয়ারটেলের কর্ণধার রাজন ভারতী মিত্তল মন্তব্য করেন, ‘‘আমাদের মধ্যে কেউ খারাপ থাকলে তাঁকে শাস্তি দিন। কিন্তু আপনাদের দিকেও অনেক খারাপ রয়েছে।’’ আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত টেলিকম শিল্পের থেকে কেন্দ্র বকেয়া ১.৪০ লক্ষ কোটি টাকা আদায় করতে চাইছে। প্রশ্ন উঠেছে, এই টাকা দিয়েই কি রাজকোষ ঘাটতি সামলাতে চাইছে কেন্দ্র? তাতে অর্থসচিব রাজীব কুমার না বললেও মিত্তল অর্থমন্ত্রীকে টেলিকম শিল্পের সমস্যা মনে করিয়ে দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy