বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।
পশ্চিমবঙ্গের ‘মডেল’কে সামনে রেখেই ত্রিপুরায় ইস্তাহার প্রকাশ করল তৃণমূল কংগ্রেস। বিধানসভা ভোটের প্রচারে আজ, সোমবার ত্রিপুরায় পৌঁছনোর কথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে পা রাখার আগের দিন ত্রিপুরায় দলের নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করে বাংলার মতোই ‘সুবজসাথী’, স্টুডেন্ট্স ক্রেডিট কার্ডে’র কথা বলল তৃণমূল। চাকরি হারানো ১০ হাজার ৩২৩ জন শিক্ষককে আর্থিক সহায়তা, বর্ষীয়ান নাগরিকদের জন্য দুয়ারে দু’হাজার টাকা পৌঁছে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ইস্তাহার প্রকাশ করতে গিয়ে বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দাবি, ‘‘বাংলার মডেল সফল। সুযোগ পেলে ত্রিপুরাতেও আমরা কাজ করে দেখাব।’’ ত্রিপুরার বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, ‘‘তৃণমূল পরিযায়ী পাখি! এখানে ৬% ভোটের জন্য বারবার আসে!’’
এখনও পর্যন্ত যা ঠিক আছে, সেই সূচি অনুযায়ী, আগরতলা বিমানবন্দরে নেমে মমতার আজ, সোমবার উদয়পুরে যাওয়ার কথা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিতে। পর দিন, মঙ্গলবার তাঁর আগরতলায় রোড-শো করার কথা। রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে থেকে শুরু করে শহর পরিক্রমা করে এসে আবার সেখানেই ফিরে সভা করতে পারেন তিনি। মমতার কর্মসূচির জন্য সব রকম প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃণমূল। তার আগে রবিবার আগরতলায় ইস্তাহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে বাংলার দুই মন্ত্রী ব্রাত্য ও শশী পাঁজা, সাংসদ সুস্মিতা দেব। মাতৃ-বিয়োগের ধাক্কা সামলেও ত্রিপুরায় তৃণমূলের নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পাশাপাশি তৃণমূলের ত্রিপুরা রাজ্য সভাপতি পীযূষ বিশ্বাসও ছিলেন ইস্তাহার প্রকাশে।
ব্রাত্য এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের ইস্তাহারে ত্রিপুরার জন্য মানানসই করে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। এই রাজ্যের বিজেপি সরকার কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি সঠিক ভাবে রূপায়িত করতে পারেনি। কারণ, তারা স্বৈরাচারী সরকার। ক্ষমতায় এসে তারা কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারেনি।’’ ব্রাত্যের দাবি, কেন্দ্রের এবং রাজ্যের বিজেপি সরকার শুধুমাত্র উচ্চবিত্তের স্বার্থের কথা ভাবে। কিন্তু মমতা হচ্ছেন ‘মা-মাটি-মানুষের নেত্রী’। তিনি তৃণমূল স্তরের মানুষের কথা ভাবেন ও তাঁদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প তৈরি করেন। তৃণমূলে ত্রিপুরার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজীবের বক্তব্য, ‘‘শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের সমস্যার সমাধান করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। পানীয় জল একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। ১০,৩২৩ জন শিক্ষক চাকরি খুইয়েছেন। তাঁদের সমস্যার আইনি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাঁদেরও ভাতা দেবে তৃণমূল।’’
সাংসদ সুস্মিতা দেবের মতে, ‘‘ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন খুবই গুরত্বপূর্ণ। কারণ, ২০১৮ নির্বাচনে দেওয়া ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ মেনে কাজ করছে না বিজেপি।’’ পাঁচ বছরে দু’লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহ দিতে ‘ভিশন ত্রিপুরা ২০২৮’ তৈরি করেছে তৃণমূলও। সুস্মিতার দাবি, বর্ষীয়ান নাগরিকদের পেনশন সরকার থেকে অনুমোদন করা হলেও অনেক ক্ষেত্রে তা নাগরিকদের কাছে পৌঁছয় না। তাঁদের মাসে দু’হাজার টাকা দেবে তৃণমূল। উত্তর ত্রিপুরায় আলাদা সচিবালয় তৈরি করা হবে।
বিজেপি মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, ‘‘এই রাজ্যে তৃণমূলের মূলই গজায়নি!’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পবিত্র করের প্রশ্ন, ‘‘তৃণমূল ৬০টি আসনের মধ্যে ২৮টিতে প্রার্থী দিয়েছে। সব আসনে জিতলেও সরকার গড়বে কী ভাবে? তার পরে তো ইস্তাহারের কাজ!’’ তৃণমূলের তরফে রাজীব অবশ্য বলেন, যে সব আসনে তাঁদের প্রার্থী নেই, সেখানে বিজেপিকে হারাতে ‘রাজনৈতিক কৌশল’ নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy