ছবি: পিটিআই।
চিন নিয়ে দৃশ্যতই নাজেহাল নয়াদিল্লি গত ছ’মাস ধরে কখনও নরম, কখনও গরম কূটনীতির রাস্তা ধরে চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একদিকে অভ্যন্তরীণ রাজনীতির চাপ, অন্য দিকে চিনের কাছে ভূখণ্ড হারানোর আশঙ্কায় দু’রকম পথই নিচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিদেশ মন্ত্রক যখন আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত কমানোর চেষ্টা করছে, তখন আজ এক অনুষ্ঠানে বেজিং-এর বিরুদ্ধে তোপ দেগে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বললেন, ‘ভারত নিজের আত্মসম্মান সম্পর্কে সচেতন। শান্তিকামী হলেও সেই সম্মানে আঁচ লাগা সহ্য করা হবে না।’
রাজনাথের গরম বার্তার দিনেইসরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে চিনের পরিকাঠামোর বাড়বৃদ্ধি সংক্রান্ত একটি রিপোর্টের উল্লেখ করে আজ সরব হন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। কৃষি আইন প্রত্যাহার নিয়ে সক্রিয়তার পাশাপাশি চিন নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই মোদী সরকারকে বিভিন্ন ভাবে কোনঠাসা করার চেষ্টা করে চলেছেন রাহুল। আজ তাঁর টুইট, “আমি বারবার করে সবাইকে চিনেদের গতিবিধি নিয়ে সতর্ক করে চলেছি। ভারত সরকার যখন নিদ্রামগ্ন, তখন তারা অক্লান্ত ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঠিক সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া ভারতের জন্য ভীষণ জরুরি।“ রাহুলের এই বার্তার দিনেই চিনা সরকারি সংবাদস্থা শিনহুয়া জানিয়েছে, লাদাখ সীমান্তে সংঘাতের চলতি আবহে ওই এলাকায় চিনা সেনার কমান্ডারকে বদলি করেছেন প্রেসিডেন্ট চি শিনফিং। চিনের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনেরও প্রধান পদে রয়েছেন তিনি। লাদাখ নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ওয়েস্টার্ন থিয়েটারের কমান্ডারের বদলি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন ভারতীয় সেনা ও কূটনীতিকরা।
রাহুলের টুইট প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, নিদ্রামগ্ন হওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। নয়াদিল্লি পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত। তবে দায়িত্বজ্ঞানহীন ভাবে কোনও পদক্ষেপ করা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। চিনের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি সমান্তরাল ভাবে চিন-বিরোধী আন্তর্জাতিক অক্ষকেও পোক্ত করা হচ্ছে। সেই অক্ষ কেবল মাত্র কৌশলগত ভাবেই নয়, বাণিজ্যিক এবং অন্যান্য ক্ষেত্রেও আদানপ্রদান বাড়িয়ে কোভিড পরবর্তী বিশ্বে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। এই লক্ষ্যে গত কাল কোয়াড (ভারত, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান)-এর কর্তারা বৈঠকে বসেছিলেন। বিদেশ মন্ত্রক জানাচ্ছে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সহযোগিতা বাড়ানো থেকে শুরু করে কোভিডের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা— একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। গত মাসে টোকিওয় এই কোয়াড-এর বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে প্রকাশ্যেই চিনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন আমেরিকার বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো। এই বৈঠকের পরে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘চার দেশের নেতা এই বৈঠকে সংযোগ এবং পরিকাঠামো নির্মান, সন্ত্রাস-মোকাবিলা, সমুদ্র নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখেছেন। উদ্দেশ্য, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা বাড়ানো।’
শনিবার হায়দরাবাদের কাছে এয়ারফোর্স অ্যাকাডেমির অনুষ্ঠানে চিন নিয়ে মুখ খোলেন রাজনাথ। তাঁর কথায়, “কোভিড সঙ্কটের সময় চিনের আচরণেই তাদের উদ্দেশ্য প্রতিফলিত হয়েছে। কিন্তু ভারতও দেখিয়েছে যে, সে দুর্বল নয়। এটা নতুন ভারত। যে কোনও অনুপ্রবেশ, হিংসা এবং একতরফা আক্রমণের জবাব দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত।’’ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কথায়, “আমি এ কথা আগেও বলেছি, ফের বলতে চাই যে, ভারত সংঘাত চায় না। শান্তিই চায়। কিন্তু দেশের আত্মসম্মানের ধাক্কা দেওয়া হলে তা বরদাস্ত করা হবে না।’’
এ দিন পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন রাজনাথ। তাঁর কথায়, ‘‘সন্ত্রাসবাদীদের কাজে লাগিয়ে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy