মুসলিম পক্ষ কোনও অবস্থাতেই বারাণসীর জ্ঞানবাপীর ‘দখল’ ছাড়বে না বলে হুঁশিয়ারি দিলেন ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম)-এর প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। সোমবার হায়দরাবাদের সাংসদ বলেন, ‘‘আর কোনও মসজিদের দখল আমরা ছাড়ব না। অনেক হয়েছে।’’
বারাণসী জেলা আদালত দেড় বছর আগে ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’র আবেদন খারিজ করে দিয়ে হিন্দু পক্ষের আবেদন মেনে জ্ঞানবাপী চত্বরে পূজার্চনার অনুমতি চেয়ে দায়ের আবদনের শুনানিতে সম্মতি দেওয়ার পরেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন ওয়েইসি। বলেছিলেন, ‘‘অযোধ্যার রামমন্দির-বাবরি মসজিদ মামলার মতো পরিণতির দিকেই বারণসীর জ্ঞানবাপী মামলা এগোচ্ছে।’’
আরও পড়ুন:
গত ৩১ জানুয়ারি জেলা বারাণসী আদালতের বিচারক অজয়কুমার বিশ্বেস জ্ঞানবাপীর ‘সিল’ করা একটি তহখানায় হিন্দু ভক্তদের আরতি এবং পূজার্চনার অনুমতি দিয়েছিলেন। পর দিন থেকেই দৈনিক পাঁচ দফা আরতি শুরু হয়েছে সেই ‘ব্যাস কা তহখানা’-য়। মসজিদ কমিটির তরফে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে স্থগিতাদেশের আবেদন জানানো হলেও তা খারিজ হয়ে গিয়েছে গত ২ ফেব্রুয়ারি। এর পর মসজিদ কমিটি দ্বারস্থ হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের।
আরও পড়ুন:
এই আবহে ওয়েইসির দাবি, বারাণসী জেলা আদালতের নির্দেশের ফলে দেশে রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ পরিস্থিতির মতো নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর অযোধ্যায় করসেবকদের হামলায় বাবরি ধ্বংসের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘প্রতিপক্ষ যদি আর এক বার ৬ ডিসেম্বর করতে চায়, আমরাও দেখব কী করে হয়। আমরা এক বার প্রতারিত হয়েছি, আর প্রতারিত হব না।’’
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের কাঠামোর নীচে ‘বড় হিন্দু মন্দিরের অস্তিত্ব’ ছিল বলে গত ২৫ জানুয়ারি বারাণসী জেলা আদালতে জমা দেওয়া রিপোর্টে জানিয়েছিল ভারতীয় পুরতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (এএসআই)। আদালতের নির্দেশে হওয়া সমীক্ষার ৮৩৯ পাতার রিপোর্টে বলা হয়েছিল, জ্ঞানবাপী চত্বরে পাওয়া একটি লিপিতে উল্লিখিত রয়েছে মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেব ১৬৬৯ সালের ২ নভেম্বর জ্ঞানবাপীতে মন্দির ভেঙে মসজিদ নির্মাণের ফরমান দিয়েছিলেন। রিপোর্টে লেখা হয়, ‘মসজিদ তৈরির সময় কিছু বদল আনা হয়েছিল কাঠামোয়। সামান্য বদল এনে মন্দিরের স্তম্ভ এবং অন্যান্য অংশ ব্যবহার করা হয়েছে। নতুন কাঠামো তৈরি করতে হিন্দু মন্দিরের পিলারের চরিত্রে সামান্য বদল আনা হয়েছিল’। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতেই জ্ঞানবাপীতে পূজার্চনা এবং আরতির অনুমতি দেয় বারাণসী জেলা আদালত।