সাংবাদিক বৈঠকে সুস্মিতা দেব। ছবি পিটিআই।
তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আজ দিল্লিতে প্রথম সাংবাদিক বৈঠক করলেন সুস্মিতা দেব। কার্যত সেই সাংবাদিক বৈঠকটি পরিণত হল, তাঁর কংগ্রেস ছাড়া নিয়ে ধারাবাহিক প্রশ্নোত্তরে। একই সঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল দল ভাঙানোর। যার উত্তরে তৃণমূলের মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছেন, “আমরা দল ভাঙানোয় বিশ্বাস করি না। কিন্তু যাঁরা আমাদের সঙ্গে আরও উন্নততর দেশ গঠনের কাজে অংশ নিতে চান তাঁদের আমরা স্বাগত জানাই।” পাশাপাশি সুস্মিতা দেবের কথায়, “আমার বিবেক যেমন বলেছে, তেমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধী এবং রাহুল গাঁধীর প্রতি আমার শ্রদ্ধা অটুট। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আমার ধারণা, যে কাজটা আমি করতে চাই, তা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আরও ভাল ভাবে করতে পারব।” তাঁর বক্তব্য, মমতার সঙ্গে তাঁদের পারিবারিক সম্পর্ক চার দশকের। বরাবরই তিনি মমতার সাহস এবং লড়াই দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন।
সব মিলিয়ে দল ছাড়ার জন্য কংগ্রেসের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ না-করে আজ বিরোধী জোটের প্রতি ইতিবাচক বার্তাই দিতে চেয়েছেন সন্তোষমোহন দেবের কন্যা সুস্মিতা দেব। রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বরাবরই সুসম্পর্ক সুস্মিতার। তিনিই সোমবার অভিষেকের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিলেন। এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাহুল গাঁধী ভবিষ্যতে কাছাকাছি এলে ম্যাজিক হতে পারে।” কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর পরিবারের চার প্রজন্মের সম্পর্ক। তাঁর কংগ্রেস ছাড়ার সিদ্ধান্তে সেই সম্পর্ক ছিন্ন হবে না বলেই মনে করেন সুস্মিতা। বলেন, “সনিয়া গাঁধীর আশীর্বাদ আমার সঙ্গে থাকবে বলেই আশা রাখি।’ ’
‘টিম রাহুল’-এর সদস্য বলে পরিচিত সুস্মিতা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় বিরোধী জোটে দুই দলের সমীকরণ কী দাঁড়াবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এআইসিসি-র এক নেতা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘তৃণমূলের মতো এনসিপি-ও কংগ্রেস ভেঙেই তৈরি হয়েছিল। হালফিলেও কংগ্রেসের অনেক নেতা এনসিপি-তে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু তাতে কংগ্রেস, এনসিপি সমীকরণে তিক্ততা আসেনি। জাতীয় রাজনীতিতে যেমন কংগ্রেস, এনসিপি একই মেরুতে রয়েছে, তেমন মহারাষ্ট্রেও শিবসেনা, এনসিপি, কংগ্রেসের জোট সরকার চলছে। ফলে সুস্মিতাকে নিয়ে কংগ্রেস, তৃণমূলের সম্পর্কে জটিলতা তৈরির সম্ভাবনা কম।’’
তবে রাহুলের আরও এক আস্থাভাজনের কংগ্রেস ছাড়াকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ হিসেবেই বলেই মনে করছেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা। রাহুল-ঘনিষ্ঠ নেতাদের বক্তব্য, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, জিতিন প্রসাদ, সুস্মিতা দেবদের সংগঠনে তুলে আনার জন্য রাহুলকে বৃদ্ধতন্ত্রের বিরুদ্ধে যথেষ্ট লড়াই করতে হয়েছিল। অথচ তাঁরা দল ছাড়ায় রাহুলের দিকেই আঙুল উঠছে।
সুস্মিতা নিজে যেমন এ দিন কংগ্রেসের নিন্দা করতে চাননি, তেমনই কংগ্রেস নেতারাও সুস্মিতা সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করতে চাননি। কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘বরাক উপত্যকার মানুষের কথা ভেবে সুস্মিতাকে সিএএ-র পক্ষে অবস্থান নিতে হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস সিএএ-র বিরুদ্ধ অবস্থান নেওয়ায় তাঁর পক্ষে বরাকে রাজনীতি করা কঠিন হয়ে যায়। সে কারণে তিনি বাবা সন্তোষমোহন দেবের মতোই ত্রিপুরায় যেতে চাইছিলেন। একই কারণে তৃণমূলের হয়েও সুস্মিতার কাছে বরাকের বদলে ত্রিপুরা পছন্দের মাঠ হবে।’’ সে ক্ষেত্রে কংগ্রেসই কেন সুস্মিতাকে ত্রিপুরায় কাজে লাগাল না, সে প্রশ্নের অবশ্য উত্তর এআইসিসি-র নেতাদের কাছে নেই। সুস্মিতার পদত্যাগে সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রীর পদ খালি হয়ে যাওয়ায় আজ নেত্তা ডি’সুজাকে ভারপ্রাপ্ত সভানেত্রী নিয়োগ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy