ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা এবং পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মেফতি।
সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচনে ‘বাইরের লোক’কেও ভোটাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এ বার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যৌথ ভাবে প্রতিবাদ জানাল কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলি। সোমবার পিডিপি, ন্যাশনাল কনফারেন্সের মতো রাজনৈতিক দলগুলি সাংবাদিক বৈঠক করে জানায়, উপত্যকার প্রতিটি রাজনৈতিক দল এই নতুন আইনের বিরোধিতা করছে এবং এই বিষয়ে তারা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছে।
ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ফারুক আবদুল্লা উপত্যকার বিরোধী দলগুলির তরফে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমরা দেশের সমস্ত জাতীয় দলকে সেপ্টেম্বর মাসে জম্মু ও কাশ্মীরে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা তাঁদের সামনেই এই বিষয়টাকে তুলে ধরতে চাই।” আবদুল্লা জানান, তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিন্হাকে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তা গ্রাহ্য হয়নি বলে আবদুল্লার দাবি। তাঁরা যে এই পরিবর্তিত নীতি মেনে নেবেন না, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও প্রতিটি দল বুঝতে পেরেছে যে, নতুন নীতি মেনে নিলে জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভায় উপত্যকার দলগুলিরই ঠাঁই হবে না।
নতুন ভোটাধিকার নীতির বিরুদ্ধে আরও কড়া অবস্থান নিতে দেখা গিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীর পিপলস কনফারেন্সের নেতা সাজাদ গনি লোনকে। জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষকে তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলে দিল্লির সংসদ ভবনের সামনে তিনি অনশনে বসবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন লোন। লোনের কথায়, “এটা কোনও আইনই নয়, এটা আসলে আমাদের হুমকি দেওয়ার শামিল।” সোমবারের সাংবাদিক বৈঠকে অবশ্য লোন বা লোনের দলের তরফে কাউকে দেখা যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ অগস্ট দেশের নির্বাচন কমিশন একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ করার পর, সেখানকার বাসিন্দা না হলেও ভোটার তালিকায় নাম তোলা যাবে। নির্বাচন কমিশনের একাংশের তরফে এ-ও জানানো হয় যে, এর জন্য সেখানকার ‘স্থায়ী বাসিন্দা’ হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসার পরেই সমালোচনায় মুখর হয় বিজেপি বাদে উপত্যকার অন্য রাজনৈতিক দলগুলি। দলগুলি অভিযোগ করে, কাশ্মীরের স্বাধিকার কেড়ে নিয়ে সেখানে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে দেশের শাসক দল বিজেপি। বর্তমানে কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক অবশ্য জানিয়েছেন, জম্মু ও কাশ্মীরের বাইরের কেউ সেই জায়গায় সম্পত্তি কিনতে পারবেন না বা সরকারি চাকরি পাবেন না- এই নিয়মে কোনও ব্যত্যয় ঘটানো হচ্ছে না।
পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি এই সিদ্ধান্তকে ‘সংসদীয় গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক’ বলে অভিহিত করেছেন। বসে নেই বিজেপিও। জম্মু ও কাশ্মীরের দলগুলি একত্রিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে পদ্ম শিবির। সেখানকার বিজেপি সভাপতি রবীন্দ্র রায়নাও দলের তরফে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। সেই বৈঠকে সম্মিলিত বিরোধী দলগুলির যুক্তির পাল্টা কী যুক্তি খাড়া করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy