তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। ছবি: সংগৃহীত।
হিন্দি বিরোধী নই, আমরা হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার বিরোধী— এ ভাবেই ভাষা বিতর্কে মুখ খুললেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। ভাষার জন্য লড়াই (মোজ়িপোর) করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন যাঁরা, তাঁদের সম্মান জানিয়ে সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই স্ট্যালিন জানান, ১৯৬৭ সালে যখন সিএন আন্নাদুরাই ক্ষমতায় এসেছিলেন, তিনি দ্বিভাষা নীতি গ্রহণ করেছিলেন। ভাষার সূত্রেই সেই সময়ে রাজ্যের নাম হয় তামিলনাড়ু।
স্ট্যালিন জানান, রাজ্যের ভাষাকে যাতে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়, তার জন্য আইনের সংশোধনী আনতে সচেষ্ট তাঁরা। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘শুধুমাত্র তামিল বলেই এটা মনে করার কোনও কারণ নেই আমরা সংকীর্ণমনস্ক। শুধু হিন্দি কেন, আমরা কোনও ভাষারই বিরোধী নই। তামিল নিয়ে বিশেষ আবেগ রয়েছে মানেই এমনটা নয় যে, আমরা অন্য ভাষাকে ঘৃণা করি।’’
কেন্দ্রের শাসক দলের হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার নীতির বিরোধিতা করলেও স্ট্যালিন জানান, কে কোন ভাষায় কথা বলবেন, কিংবা কোন ভাষা ব্যবহার করবেন, তা একেবারেই ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়। এ ক্ষেত্রে জোর করে কোনও ভাষা অন্যের উপরে চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়।
এর পরেই স্ট্যালিন জানান, যাঁরা জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দিতে চাইছেন, তাঁদের বোঝা উচিত এটা আধিপত্যবাদের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। নাম না করে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘকে (আরএসএস) নিশানা করে স্ট্যালিন বলেন, ‘‘যে ভাবে মনে করা হচ্ছে, দেশে একটিই ধর্ম থাকা উচিত তেমন ভাবেই দেশ জুড়ে একটি ভাষার পক্ষেও সওয়াল করা হচ্ছে।’’
স্ট্যালিনের অভিযোগ, সমস্ত ক্ষেত্রেই হিন্দি ভাষাভাষীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হলে অন্য ভাষার মানুষদের কার্যত দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করে রাখা হবে। চেষ্টা করা হচ্ছে, এক জনের মাতৃভাষার উপরে হিন্দি চাপিয়ে দিতে। এখানেই তাঁদের, তামিল ভাষাভাষী তথা গোটা তামিলনাড়ুর বিরোধিতা।
পাশাপাশি তামিলনাড়ুর ট্যাবলো বাতিল নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এমনটা ঘটানো হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, আরএসএস-এর দীর্ঘদিনের কর্মসূচি ‘হিন্দি, হিন্দু, হিন্দুস্তান’। কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার সেই বিষয়টিকেই বাস্তবায়নের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। যে কারণে দক্ষিণের রাজ্যগুলির তরফে বার বার অভিযোগ উঠছে, তাদের উপর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি হিন্দিকে রাজভাষা (রাষ্ট্রভাষা) বলে প্রচারের অভিযোগও রয়েছে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারের বিরুদ্ধে। যদিও সংবিধান অনুযায়ী ভারত কোনও রাষ্ট্রভাষা নেই। সেই বিষয়টি ফের উঠে এল তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর বয়ানে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy