চেতন সিংহের বৌদি (বাঁ দিকে) এবং চেতন সিংহ। ছবি: সংগৃহীত।
চলন্ত ট্রেনেই টহল দিতে দিতে এক পুলিশ আধিকারিক-সহ চার যাত্রীকে গুলি করে হত্যা করে সংবাদ শিরোনামে এসেছিলেন আরপিএফ কর্মী চেতন সিংহ। তাঁর বাড়ি উত্তরপ্রদেশের মথুরায়। বুধবার তাঁর পরিবারের তরফে দাবি করা হল, চেতন চাপের মধ্যে ছিলেন। তাঁর চিকিৎসা চলছিল বলেও জানানো হয়েছে পরিবারের তরফে।
এই প্রসঙ্গে চেতনের বৌদি বলেন, “কয়েক দিন ধরেই চেতনের শরীর ভাল ছিল না। ওর চিকিৎসাও চলছিল। মাথার একাংশে রক্ত জমাট বাঁধারও ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল।” চেতন রাগের চোটে চার জনকে হত্যা করেছেন কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “রাগ থেকে এই কাজ সে করেনি। কিন্তু সে সব সময় উদ্বেগের মধ্যে থাকত। বাড়ি থেকে দূরে থাকায় বুঝতেও পারতাম না যে, ওষুধগুলো ঠিক করে খায় কি না।” চেতনের পরিবারের বক্তব্য, ১৪ বছরের কর্মজীবনে কখনও কোনও সহকর্মীর সঙ্গে বিবাদে জড়াননি তিনি।
সোমবার ভোর ৫টা ২৩ মিনিটে রাজস্থানের জয়পুর থেকে মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ের উদ্দেশে যাওয়া জয়পুর এক্সপ্রেসে টহল দেওয়ার সময় নিজের আগ্নেয়াস্ত্র দিয়েই চলন্ত ট্রেনে চার যাত্রীকে হত্যা করেন আরপিএফ কর্মী চেতন। হত চার জনের মধ্যে রেলপুলিশের এক সাব-ইনস্পেক্টর এবং ট্রেনটির প্যান্ট্রি কারের এক কর্মীও ছিলেন। রেলের তরফে জানা গিয়েছে, সোমবার ভোর ৫টা ২৩ মিনিটে যখন ট্রেনটি পালঘর স্টেশন দিয়ে যাচ্ছিল, সে সময় হঠাৎই নিজের স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেন ওই পুলিশকর্মী।
সংবাদ সংস্থা এএনআই পশ্চিম রেলকে উদ্ধৃত করে জানায়, জয়পুর এক্সপ্রেসের বি ফাইভ কোচে যাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন অভিযুক্ত পুলিশকর্মী। গুলি চালিয়ে চার জনকে হত্যা করার পরেই পালঘরের পরের স্টেশন দাহিসারে ট্রেনের চেন টেনে এবং ঝাঁপ দিয়ে নামার চেষ্টা করেন তিনি। তার আগেই অবশ্য তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর সঙ্গে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়।
কী কারণে ওই আরপিএফ কর্মী এমন কাণ্ড ঘটালেন, তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। প্রাথমিক ভাবে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে এক জন ওই আরপিএফ আধিকারিকের পূর্বপরিচিত হলেও, কারও সঙ্গেই বিবাদ ছিল না তাঁর। পুলিশ সূত্রে অবশ্য জানা যায়, মানসিক ভাবে সুস্থ ছিলেন না অভিযুক্ত ব্যক্তি। বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি চাইছিলেন। ঘটনার আগের দিন তিনি নাকি বলেছিলেন, তাঁর অসহিষ্ণু লাগছে। তখন তাঁকে বিশ্রাম নেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পরে নাকি তিনি জানিয়েছিলেন, একদম সুস্থ রয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy