প্রতীকী ছবি।
একের পর এক কবর খুঁড়ছেন গ্রামবাসীরা আর মৃতদেহের মুখে পাইপ দিয়ে জল ঢালছেন। গ্রামবাসীদের দাবি, ‘ওরা’ নাকি তৃষ্ণার্ত! আর সেই তেষ্টা মেটাতেই মৃতদেহগুলির মুখে জল ঢালছেন। গত এক মাসের মধ্যে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের আত্মীয়দের সঙ্গে নিয়েই গ্রামবাসীরা কবরস্থানে যান এবং এক এক করে কবর খুঁড়ে জল দেন। এমনই দৃশ্য ধরা পড়ছে কর্নাটকের একটি গ্রামে।
রাজ্যের বিজয়পুরা জেলার কালাকেরি গ্রামে এখন এই কাজেই ব্যস্ত গ্রামবাসীরা। কিন্তু হঠাৎ মৃতদহের মুখে জল ঢালার প্রয়োজন পড়ল কেন? এ বিষয়ে গ্রামবাসীদের যুক্তি, গ্রামে নাকি ‘অভিশাপ’ লেগেছে। আর সে কারণে রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে বৃষ্টি, বন্যার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও ওই গ্রাম বৃষ্টির জন্য চাতকের মতো চেয়ে আছে।
রাজ্যের চার দিকে যখন বরুণদেব সহায় হয়েছেন, এই গ্রাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তিনি। তাই বরুণদেবকে সন্তুষ্ট করতেই এই আয়োজন। বৃষ্টি কী ভাবে নামানো যায় তা নিয়ে একজোট হন গ্রামবাসীরা। বিষয়টি নিয়ে সকলেই অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ছিলেন। আলোচনাসভায় গ্রামবাসীদেরই এক জন প্রস্তাব দেন, যদি মৃতদেহের তৃষ্ণা মেটানো যায়, তা হলে বৃষ্টি নামবে।
সেই প্রস্তাবে সকলেই সায় দেন। গত এক মাসের মধ্যে গ্রামের কারা মারা গিয়েছেন সেই তালিকা তৈরি করেন গ্রামবাসীরা। তার পর সেই তালিকা নিয়েই এক এক করে কবর খুঁড়ে পাইপ দিয়ে মৃতদেহের মুখে জল ঢালতে থাকেন। এ ভাবে ২৫টি কবর খুঁড়ে মৃতদেহগুলির মুখে জল ঢেলে বৃষ্টি জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন তাঁরা। কাকতালীয় ভাবে শেষ মৃতদেহের মুখে জল ঢালতেই ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয় গ্রামে। আর এটাকেই এখন থেকে রীতি হিসাবে মান্যতা দিয়ে দেন গ্রামের মাতব্বরা।
এই গ্রামে ১৫০০ লোকের বাস। মূলত মটর ডালের চাষ করেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু প্রতি বারই বৃষ্টির অভাবে চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, বেশ কয়েক বছর আগে এক বৃদ্ধ মুখ খোলা অবস্থায় মারা গিয়েছিলেন। মুখ বন্ধ না করিয়েই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। আর সেই বছরেই খরা দেখা দেয় গ্রামে। আর তার প্রভাবে খাদ্যসঙ্কট দেখা দিয়েছিল। কেন এ রকম হচ্ছে তা জানতে এক জ্যোতিষীর শরণাপন্ন হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। তখন জ্যোতিষী জানিয়েছিলেন যে, গ্রামে ওই বৃদ্ধার ‘অভিশাপ’ লেগেছে। আর সে কারণেই বৃষ্টি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রাম। মুক্তির উপায়ও বাতলে দেন তিনি। জ্যোতিষী নাকি গ্রামবাসীদের বলেন, কবর খুঁড়ে মৃতদেহের মুখে জল ঢাললেই বৃষ্টি হবে। ঘটনাচক্রে, ২৫টি মৃতদেহের মুখে জল ঢালার পর বৃষ্টি নামে গ্রামে। আর এই প্রথাকেই ধ্রুবসত্য বলে মান্যতা দিয়েছেন গ্রামবাসীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy