বৃহস্পতিবার বিকাশ দুবেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ছবি: পিটিআই।
কানপুরের গ্যাংস্টার বিকাশ দুবেকে ‘ভুয়ো এনকাউন্টার’-এ মেরে ফেলা হতে পারে এমন আশঙ্কা ছিল বিভিন্ন মহলে। এমনকি, সে রকম কিছু যাতে না ঘটে এবং বিকাশের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জমা পড়েছিল গতকালই। কিন্তু সেই আবেদন জমা পড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এ দিন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হল বিকাশ দুবের। বন্দুক ছিনিয়ে বিকাশ পালানোর চেষ্টা করাতেই তাকে গুলি করা হয় বলে পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশের এই দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। আর তাতেই গতকাল আদালতে জমা পড়া ওই আবেদন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
কানপুর হত্যাকাণ্ডের পর গত কয়েক দিন ধরে পুলিশের নজর এড়িয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল বিকাশ দুবে। বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশে তার নাগাল পায় পুলিশ। তবে পুলিশই তাকে গ্রেফতার করেছিল, না সে নিজে থেকে ধরা দেয়, তা নিয়ে বিতর্ক শেষ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে আদালতের দ্বারস্থ হন ঘনশ্যাম উপাধ্যায়। ভুয়ো এনকাউন্টারে বিকাশকে মেরে ফেলা হতে পারে বলে আদালতে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। বিকাশকে যাতে নিরাপত্তা দেওয়া হয়, সেই আবেদন জানানোর পাশাপাশি, পুলিশের হাতে বিকাশের পাঁচ সহযোগীর মৃত্যু এবং কানপুরে বিকাশের বাড়িতে পুলিশের ভাঙচুর নিয়ে সিবিআই তদন্তের আর্জিও জানান।
ওই আবেদনে ঘনশ্যাম বলেন, ‘‘বিকাশ দুবে যাতে নিরাপত্তা পান, পুলিশি এনকাউন্টারে যাতে তার মৃত্যু না হয়, তা নিশ্চিত করতে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এবং রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হোক। আদালতে হাজির করার সময় সে যেন সম্পূর্ণ নিরাপত্তা পায়। তার বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপই করা হোক না কেন, তা যেন আইন মেনে হয়।’’ বিকাশের বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের দাবিও জানান ঘনশ্যাম। শুক্রবার জরুরি ভিত্তিতে আদালতে আবেদনটির শুনানি করার আবেদন জানান তিনি। কিন্তু এ দিন আদালত খোলার আগেই উজ্জয়িনীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় বিকাশ দুবের।
আরও পড়ুন: ‘গাড়ি না ওল্টালে সরকারই উল্টে যেত’, বিকাশ দুবে কাণ্ডে তোপের মুখে যোগী সরকার
তা নিয়ে এ দিন সংবাদমাধ্যমে ঘনশ্যাম বলেন, ‘‘২ জুলাই কানপুরে ৮ জন পুলিশকর্মীর হত্যার ঘটনায় গোটা দেশ কেঁপে উঠেছে। বিকাশ দুবে এবং তার শাগরেদরাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনা অবশ্যই নিন্দনীয়। কিন্তু তার পর পুলিশ যা করেছে, যে ভাবে দুবের পাঁচ সহযোগীকে মেরেছে, তা-ও অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে মামলা দায়ের করা, তদন্ত করা, প্রমাণ জোগাড় এবং আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়াই পুলিশের কাজ। অভিযুক্ত দোষী প্রমাণিত হলে আদালতের কাজ তাকে শাস্তি দেওয়া। এ ক্ষেত্রেও অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়াই যেত। তাদের তাড়া করে বেড়ানো, লোক দেখানো এনকাউন্টারে হত্যা করা কখনও সমাধান হতে পারে না।’’
আরও পড়ুন: ঠিক আধ ঘণ্টা আগে কেন আটকানো হল মিডিয়ার গাড়ি? দুবে ‘সংঘর্ষে’ রহস্য এখানেও
তবে বিকাশ দুবের মৃত্যু হলেও, আদালত যাতে তাঁর আবেদনটির শুনানি করে, সেই চেষ্টা তিনি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন ঘনশ্যাম। এই ঘটনায় যাঁরা যুক্ত রয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের হওয়া উচিত বলেও জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy