কান্নুরের বার্নাসেরিতে পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চে পিনারাই বিজয়ন। নিজস্ব চিত্র
বাংলায় দেড় দশক আগে বাম সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির পক্ষে যে যুক্তি দিতেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, এ বার পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চে সেই সুরই শোনা গেল কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের গলায়! কৃষি থেকে তাঁর সরকার আয় বাড়িয়েছে, মানুষকে সামাজিক সুরক্ষা দিয়েছে এবং এখন উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে জমি নিয়েই উন্নয়নমুলক প্রকল্পে এগোনো হবে— কেরলের দ্রুতগামী রেল প্রকল্প ‘সিলভার লাইনে’র পক্ষে বুধবার গোটা দেশের ৮১১ জন প্রতিনিধির সামনে বিজয়নের এই সওয়াল সিঙ্গুর-পর্বের বুদ্ধবাবুকেই মনে পড়িয়ে দিয়ে গেল!
দক্ষিণী এই রাজ্যে কে-রেল বা ‘সিলভার লাইন’ প্রকল্প ঘিরে বিরোধিতার সুর চড়ছে। বিরোধী দল কংগ্রেস ও বিজেপি কড়া বিরোধিতা করছে, বামপন্থী কিছু দলও এই প্রকল্প নিয়ে সংশয়ের সুর শুনিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে কান্নুরের বার্নাসেরিতে সিপিএমের ২৩তম পার্টি কংগ্রেসের শুরুতে প্রতিনিধিদের স্বাগত জানাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন বলেছেন, ‘‘মাঝারি-দ্রুত গতির রেল চালু হলে কেরলের দক্ষিণ থেকে উত্তরে চার ঘণ্টায় পৌঁছনো যাবে। আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন আদায় করে এই প্রকল্প রূপায়ণের সব রকম চেষ্টা করছি। কিন্তু এমন প্রকল্পে বাধা দেওয়ার জন্য বিরোধীরা যা বলছেন, যুক্তির নিরিখে তা দাঁড়ায় না।’’ তাঁর আশ্বাস, ‘‘যে মানুষকে ছেড়ে অন্য জায়গায় সরে যেতে হবে, তাঁদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিয়েই আমাদের সরকার পরিকাঠামো উন্নয়নের নীতিতে বিশ্বাস করে। এই বক্তব্য তুলে ধরার জন্য দলের তরফে আমরা প্রচার কর্মসূচির আয়োজন করছি।’’ অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে গিয়ে তাঁরা কোনও ভাবেই সামাজিক ন্যায়ের আদর্শ ও পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছেন না বলেও দাবি করেছেন বিজয়ন। খাদ্য সুরক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা বা ইন্টারনেট-সহ নানা পরিষেবা নাগরিকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এলডিএফ সরকার যে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন একমাত্র বাম-শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
‘সিলভার লাইন’ প্রকল্পের জন্য সমীক্ষার কাজেই নানা জায়গায় প্রতিবাদ, বিক্ষোভ হয়েছে। বিরোধীদের ঘোষণা, মানুষকে উচ্ছেদ করে ও পরিবেশ ধ্বংস করে এমন প্রকল্প হতে তারা দেবে না। যে বাতাবরণের সঙ্গে বাংলার সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম-পর্বের মিল পাচ্ছেন অনেকে। দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফিরে উন্নয়নের দ্রুত গতিই কি কেরলের বাম সরকারের ‘ওয়াটারলু’ ডেকে আনবে? সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির মতে, ‘‘প্রকল্প একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। এখনই আতঙ্ক ছড়ানোর কোনও কারণ নেই। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা এবং মানুষকে সঙ্গে নিয়ে লক্ষ্যের দিকে এগোনোই বামেদের কাজ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy