সংসদে জগদীপ ধনখড় এবং জয়া বচ্চন (ডান দিকে)।
এক জন, বাংলার ‘ধন্যি মেয়ে’। অন্য জন, বাংলার রাজ্যপালের দায়িত্ব সামলেছেন বছর তিনেক। এক জন পর্দায় মুখরার চরিত্রে অভিনয় করে আজও বাঙালির মনে জায়গা করে নিয়েছেন। অন্য জন রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের সংঘাতের নজির তৈরি করে বিখ্যাত। এ হেন দু’জনকে শুক্রবার দুপুরে ঠাট্টা তামাশা বিনিময় করতে দেখা গেল ভরা সংসদ ভবনে। এক জন এক কথা বলেন, অন্য জন তার উত্তর দেন। এক জন সাংসদ জয়া বচ্চন অন্য জন দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই দ্বৈরথে থামলেন কে?
কর্মসূত্রে দু’জনেরই মাঝে মধ্যে দেখা হয়। কথাও হয়। তবে সে সবই কেজো আলাপচারিতা। কখনও বিতর্ক, কখনও ক্ষোভ। শুক্রবার কিন্তু তেমন হল না। শুক্রবার দু’জনেরই মুখেই দেখা গেল হাসি। কথার মাঝে উঠে এল হালকা মেজাজের আদান প্রদান। উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়কে দেখে সাংসদ জয়া বচ্চন বললেন, ‘‘আপনার চেয়ারটাই এই সংসদ ভবনের মধ্যে সবচেয়ে মজাদার’’। ধনখড়ও বললেন, ‘‘আপনার আগুনে ক্ষমতার কথাও কি আমি জানি না।’’
শুক্রবার নতুন সংসদ ভবনে রাজ্য়সভার অধিবেশন চলছিল। সেখানে পেশ করা হয় মহিলা সংরক্ষণ বিল। আগেই সংসদের নিম্ন কক্ষ লোকসভায় পাশ হয়েছে বিলটি। শুক্রবার উচ্চ কক্ষ অর্থাৎ রাজ্যসভার অনুমোদনের জন্যই সেটি পাঠানো হয়। বিলটি সমর্থন করলেও বিরোধী দলের সাংসদেরা নিজেদের বক্তব্য জানান। সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জয়ারও নাম ধরে ডেকে নিজের মতামত জানাতে বলেন ধনখড়। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেন, সময় চার মিনিট।
জয়া উঠে দাঁড়িয়েই ধনখড়ের উদ্দেশে বলেন, ‘‘সবার শেষে বলার এক সমস্যা! সবাই সব কিছু বলে দিল, আমার ভাগে আর কিছু নেই। এর মধ্যে আপনি আবার সময় বেঁধে দিচ্ছেন।’’ শুনে ধনখড় জবাব দেন জগজিৎ সিংহের গানে। বলেন, ‘‘ইতনে হিস্সে মে বট গয়া হু ম্যায়, মেরে হিস্সে মে কুছ বচা হি নহি।’’
এর পরেই আসে মহিলা সংরক্ষণ বিলের কথা। জয়া বলেন, ‘‘আপনারা মহিলাদের জন্য বিধানসভা এবং সংসদে ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের কথা বলেছেন। এ জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই। তবে একই সঙ্গে আমার আর্জি, এটা যেন কসমেটিকের মতো স্রেফ বাইরের সৌন্দর্যবর্ধনকারী না হয়। তা হলে কিন্তু এই রাজ্যসভার সমস্ত মহিলা আপনাদের প্লাস্টিক সার্জন ভাববে!’’ শুনে এ বারও ধনখড় জবাব দিলেন, ‘‘সে কি আর জানি না! ওঁদের এবং আপনার আগুনে শক্তির কথা আমার ভালই জানা আছে।’’
এর পরেই জয়া বলেন, ‘‘আপনার চেয়ারটা কিন্তু বেশ মজাদার। ওতে বসলেই ওটা কখনও সামনে কখনও পিছনে দুলতে থাকে। এই বিলাসবহুল সংসদ ভবনের যদি কোনও একটি জিনিস ভাল হয়, তা হল আপনার চেয়ার। আমার দারুণ মজার লাগে ওই চেয়ারটা। রাজ্যসভায় শাসক এবং বিরোধী দলের সাংসদদের কথা সমান ভাবে শুনতে হয় উচ্চকক্ষের দায়িত্বে থাকা উপরাষ্ট্রপতিকে। জয়া সম্ভবত সে দিকেই ইঙ্গিত করেছিলেন। কিন্তু আগের প্রশ্নগুলির মতো এ বার আর কান থেকে হেডফোনটি নামিয়ে জবাব দিতে দেখা যায় না ধনখড়কে। তিনি শুধু একটু হাসেন। এবং চুপ করে থাকেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy