মার্গারেট আলভা। — ফাইল চিত্র।
দীর্ঘদিনের রাজনীতিক। কংগ্রেসের বহু পুরনো সৈনিক। একাধিক বারের সাংসদ। ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, রাজ্যপালও। সেই মার্গারেট আলভা এ বারে উপরাষ্ট্রপতি ভোটে সম্মিলিত বিরোধী জোটের প্রার্থী। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি সমর্থিত এনডিএ জোটের প্রার্থী জগদীপ ধনখড়। পশ্চিমবঙ্গের সদ্যপ্রাক্তন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রার্থী হলেও জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ভোট আলভার পক্ষে নেই। এ দিকে সম্মিলিত বিরোধী জোটের প্রার্থী হলেও বিরোধী জোটের দলগুলির মধ্যে নানা বিষয়ে টানাপড়েন ক্রমশ বাড়ছে। এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও হার মেনে লড়াইয়ের ময়দান ছাড়তে নারাজ মার্গারেট আলভা। তাঁর আশা, সংখ্যা এখন না থাকলেও ভবিষ্যতে তার বদল হতেই পারে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের হাতে সংখ্যা নেই বলে আমরা চুপ করে বসে থাকতে পারি না। বলতে পারি না, আমরা ভোটেলড়ব না।’’
আগামী ৬ অগস্ট উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য নির্বাচন হবে। তার আগে সংবাদসংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন রাজ্যপাল আলভা মুখ খুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসকে নিয়েও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল সম্প্রতি জানিয়ে দিয়েছে, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তারা জগদীপ ধনখড় বা মার্গারেট আলভা কাউকেই সমর্থন করবে না। তার পরেই মমতাকে সব অভিমান সরিয়ে সমর্থন করার জন্য ডাক দিয়েছিলেন আলভা। সে কথাই ফের তুলে সাক্ষাৎকারে আলভা জানান, ভোটদানে বিরত থাকার বিষয়টি নিয়ে পুনর্বিবেচনা করার মতো যথেষ্ট সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে আছে।
একাধিক বারের সাংসদ আলভা একই সঙ্গে গত কয়েক বছরে জনজীবনে যে বিপুল পরিবর্তন হয়েছে, সে সম্পর্কেও নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন সাক্ষাৎকারে। তাঁর কথায়, ‘‘চারপাশে তাকালে একটা আতঙ্কের ছবি দেখতে পাই। আপনার ইচ্ছে মতো আপনি খেতে পারবেন না, আপনার ইচ্ছে মতো আপনি পোশাক পরতে পারবেন না, আপনার কথা বলার স্বাধীনতা নেই, এমনকি আপনি আপনার পছন্দ মতো লোকের সঙ্গে কথাবার্তাও বলতে পারবেন না। এটা কোন সময়?’’
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ‘‘বিরোধীদের পক্ষে যথেষ্ট ভোট নেই। এটা স্পষ্ট। অনেকেই প্রশ্ন করছেন, একটা হারা ভোটে লড়াই কোন যুক্তিতে? জবাবে আলভা বলেন, ‘‘যেহেতু সংখ্যা আমাদের পাশে নেই,আমরা লড়ব না? আমি মনে করি, একটা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হার হোক বা জিত, আপনাকে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে এবং নতুন সাংসদ যাঁরা এসেছেন, তাঁদের বোঝাতে হবে। সরকারের থেকে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। এবং লড়াইটা তাদের জন্য যারা একই অবস্থানে দাঁড়িয়ে এবং লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করতে প্রস্তুত।’’ তিনি জানান, সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে বেঙ্গালুরুতে নিজের মতো করে থিতু হয়েছিলেন তিনি। বিরোধী জোটের পক্ষ থেকে তাঁর কাছে উপরাষ্ট্রপতি ভোটে লড়াব প্রস্তাব দেওয়ার পরে তিনি সম্মত হন। বর্তমানে যা চলছে, তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ‘উপযুক্ত পরিস্থিতি’ তৈরি হয়েছে মনে করে তিনি সেই প্রস্তাবে রাজি হন।
বিজেপির বিরুদ্ধে তিনি প্রার্থী হলেও বিরোধী দলগুলির অন্যতম তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে সমর্থনে রাজি না হওয়ায় তিনি যে হতাশ, তা গোপন করেননি আলভা। তবে একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘মমতা বিরোধী দলগুলিকে একজোট করারচেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। আমি মনে করি, তাঁর মত বদলের জন্য এখনও যথেষ্ট সময় আছে।’’ বিরোধীদের মধ্যেকার সমস্যাকে ‘ঘরোয়া ঝগড়া’ বলেও মনে করেন তিনি।
রাজনীতিতে তাঁর পথপ্রদর্শক প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধী। প্রয়াত কংগ্রেস নেত্রীর মতো কঠিন পথে লড়েই নিজের লক্ষ্যে পৌঁছনোর ব্যাপারে প্রত্যয়ী আলভা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy