—ফাইল চিত্র
ছোঁয়া যাচ্ছে না প্রত্যাশিত সংখ্যা। মুখ ফিরিয়ে চিকিৎসকদের একটি বড় অংশ। এই পরিস্থিতিতে প্রতিষেধক নেওয়ার হার বাড়াতে দেশজ প্রতিষেধকের হয়ে আজ মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিজের কেন্দ্র বারাণসীর প্রতিষেধকপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে কথোপকথনের মাধ্যমে আজ আসলে গোটা দেশকেই বার্তা দেন মোদী। তিনি বলেন, বিজ্ঞানীদের সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরেই প্রতিষেধক বাজারে ছাড়া হয়েছে। তাই প্রতিষেধক নিতে অযথা ভয় পাওয়ার দরকার নেই। যদিও আজও ফের প্রতিষেধক নেওয়ার পরে মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। তা নিয়ে সরকারি ভাবে মুখ খোলেনি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
গত শনিবার থেকে রোজ তিন লক্ষ মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা এক দিনও ছোঁয়া যায়নি। আজ গোটা দেশে ২,২৮,৫৬৩ জন প্রতিষেধক নিয়েছেন। ফলে গত সাত দিনে প্রতিষেধক নিলেন মোট ১২,৭২,০৯৭ জন। আজ ২৬৭ জনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এসেছে মৃত্যুর খবরও। গত শনিবার গুরুগ্রামে ৫৬ বছর বয়সি এক ব্যক্তি কোভিশিল্ড প্রতিষেধক নিয়েছিলেন। আজ সকালে ঘুমের মধ্যে তিনি মারা যান। মৃত্যুর সঙ্গে প্রতিষেধকের যোগ আছে কি না, ময়না-তদন্তের আগে তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ স্বাস্থ্যকর্তারা। তবে এই ঘটনার বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
টিকাকরণ নিয়ে নেতিবাচক ধ্যান-ধারণা কাটানোর চেষ্টাই আজ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিষেধক নিয়েছেন, বারাণসীর এমন পাঁচ জন চিকিৎসক, মেট্রন, আশা কর্মীর সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে কথা বলেন তিনি। পাঁচ জনই দেশের অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিষেধক নিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। গত কালই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন অভিযোগ করেছিলেন যে, ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে দেশের মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। আজ বিরোধীদের কিছুটা পরোক্ষ আক্রমণ শানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রতিষেধক কেন আসছে না, সেই প্রশ্ন তুলে প্রথমে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। সরকার প্রথম থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, প্রতিষেধকের ব্যাপারে বিজ্ঞানী তথা বিশেষজ্ঞদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তাঁরা যা বলবেন, সেই পথেই এগোনো হবে। সেটাই করা হয়েছে।’’ করোনার প্রতিষেধক নিয়ে ভয় ও ভুল ধারণা ভেঙে বেরিয়ে আসার জন্য আজ নিজের বক্তৃতায় স্বাস্থ্যকর্মীদের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। পাঁচ স্বাস্থ্যকর্মীর উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, “যখন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কোনও প্রতিষেধককে ক্লিনচিট দেন, তখন তা জনমানসে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেয়।”
ভারতে প্রথম দফায় যে দু’টি প্রতিষেধক ব্যবহার হচ্ছে, সেই কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিনের মধ্যে দেশজ কোভ্যাক্সিন পরীক্ষামূলক প্রয়োগের তিনটি ধাপ শেষ হওয়ার আগেই ছাড়পত্র পেয়ে যাওয়ায় সেটির কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। বহু চিকিৎসক কোভ্যাক্সিন নিতে আপত্তি জানানোয় গণ-টিকাকরণের উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। দিল্লির মতো কিছু বিরোধী রাজ্য অভিযোগ তুলেছে, পরিকল্পিত ভাবে তাদের কাছে কোভ্যাক্সিন পাঠানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ব্যাখ্যা— সব রাজ্যেই ধাপে ধাপে দু’ধরনের প্রতিষেধক যাবে। কারণ গোটাটাই প্রতিষধকের জোগানের উপর নির্ভর করছে। আজ মোদীও দাবি করেন, কোথায় কোন প্রতিষেধক যাবে, তা নিয়ে রাজনীতি হয়নি।
কোভ্যাক্সিনের নির্মাতা ভারত বায়োটেকের বিরুদ্ধে অন্যতম অভিযোগ ছিল যে, তাদের গবেষণা কোনও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়নি। চলতি সপ্তাহেই কোভ্যাক্সিনের গবেষণা সংক্রান্ত একটি প্রবন্ধ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিষয়ক জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত হয়েছে। ব্রিটিশ ওই জার্নালে কোভ্যাক্সিনের প্রথম দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের রিপোর্টের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, ৩৭৫ জন স্বেচ্ছাসেবককে ওই প্রতিষেধক দেওয়ার পরেও তাঁদের শরীরে কোনও নেতিবাচক প্রভাব দেখা যায়নি। বরং করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের আশা, ল্যানসেটের ওই রিপোর্টের পরে কোভ্যাক্সিন নিয়ে সংশয় অনেকটাই কেটে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy