Advertisement
E-Paper

জোশীমঠের নিখোঁজরা জীবিত নেই বলেই আশঙ্কা, উদ্ধারবাহিনী পাঠালেন অমিত শাহ

আইটিবিপি জানিয়েছে, পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। তবে জলের তোড়ে ঋষিগঙ্গা বাঁধ ভেঙে যাওয়াতেই বিপত্তি বাড়ে।

তুষারধসের জেরে তীব্র জলোচ্ছ্বাস  চামোলিতে।

তুষারধসের জেরে তীব্র জলোচ্ছ্বাস চামোলিতে।

সংবাদসংস্থা

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:৪৮
Share
Save

দেবভূমিতে রবিবার তুষারধসে যে শ্রমিকদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না, তাঁদের সকলেই মারা গিয়েছেন বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। সেক্ষেত্রে জোশীমঠে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা কম করে ১০০-১৫০ জন হতে পারে বলে মনে করছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যসচিব ওম প্রকাশ। ইতিমধ্যেই ১০ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী মৃতদের পরিবারের জন্য ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে খবর, তপোবন বিষ্ণুগড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নিকটবর্তী টানেলে আটকে পড়েছিলেন বহু শ্রমিক। এ ছাড়া ঋষিগঙ্গা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটিও পুরোপুরি ভেসে গিয়েছে বলে রবিবার জানিয়েছে চামোলির ডিজিপি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, খোঁজ মিলছে না আরও অনেকেরই। ঋষিগঙ্গা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটির পাশাপাশি তপোবন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের টানেলেও আটকে থাকতে পারে বহু শ্রমিক। প্রশ্ন উঠছে, প্রকৃতি ধ্বংস করে একের পর পাহাড় কেটে টানেল এবং জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের জন্যই কি এত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি?

সরকারের তরফে অবশ্য এ নিয়ে কোনও বিবৃতি মেলেনি। আপাতত কারণ ব্যখ্যায় না গিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার দিকেই মন দিয়েছে তারা। তবে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিংহ রাওয়ত জানিয়েছেন, কেন এমন ঘটনা ঘটল বিশেষজ্ঞরা তা খতিয়ে দেখবেন। তবে আগে মানুষের জীবন বাঁচানোই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

সরকারি সূত্রে খবর, হিন্দন থেকে অতিরিক্ত তিন কোম্পানি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী পাঠানো হচ্ছে। রবিবার রাতের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছবে দলটি। এ ছাড়া ২০০ আইটিবিপি জওয়ান এবং সেনা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। নিয়ে আসা হয়েছে নৌবাহিনীর ডুবুরিদের। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার এবং বিমানকে।

উদ্ধার কাজে নেমেছে বায়ুসেনা। রবিবার দুপুরে বায়ুসেনার দু’টি বিমান সি ১৩০ এবং এএন ৩২-এ জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর বেশ কয়েকটি দলকে দেরাদুনের জলি গ্রান্ট বিমানবন্দর থেকে উড়িয়ে আনা হয় উত্তরাখণ্ডের ওই এলাকায়। এছাড়া ভারতীয় সেনা বাহিনীর প্রায় ৬০০ জনের বাহিনীও রওনা হয়েছে জোশীমঠের উদ্দেশে। উদ্ধার কাজের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে সেনা বাহিনীর কপ্টার। এ ছাড়া ভারতীয় বায়ু সেনাবাহিনীর কপ্টারও রয়েছে এলাকায়। সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওমপ্রকাশ জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করেছে ভারত-তিব্বত সীমান্তরক্ষী বাহিনী (আইটিবিপি) এবং কেন্দ্র-রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।

এছাড়া চামোলির রেনি গ্রামে চিকিৎসক দল পাঠানো হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতির জন্য জোশী মঠে তৈরি করা হয়েছে ৩০ শয্যার একটি হাসপাতালও। শ্রীনগর, ঋষিকেশ, জলিগ্রান্ট এবং দেরাদুনেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে হাসপাতাল। ২০১৩ সালের মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও হরপা বাণের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্রুত নেওয়া হয়েছে পদক্ষেপ। এছাড়া পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে রবিবার বিকেল সাড়ে চারটে মন্ত্রিসভার সচিব রাজীব গৌবার নেতৃত্বে বৈঠকে বসে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কমিটি (এনসিএমসি)। উদ্ধার কাজ কোন পথে, তা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বৈঠকে আলোচনা করা হবে পুনর্বাসনের বিষয়েও।

রবিবারের ঘটনায় টুইট করে উদ্বেগ জানান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাষ্ট্রপতি লেখেন, ‘উদ্বিগ্ন বোধ করছি। জোশীমঠের এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের জন্য প্রার্থনা করছি’। প্রধানমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি পুরো বিষয়টির উপর নজর রাখছেন। উত্তরাখণ্ডের প্রশাসন এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর থেকে প্রতিমুহূর্তের খবর নিচ্ছেন। মোদী টুইটারে লেখেন, ‘গোটা দেশ উত্তরাখণ্ডের পাশে আছে। উত্তরাখণ্ডের জন্য প্রার্থনা করছে’। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহও লেখেন, দেবভূমিকে এই সঙ্কটকালে সবরকম সাহায্য করবে কেন্দ্র। উদ্ধারকাজের জন্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও বায়ুসেনা পাঠানোর ঘোষণাও করেন টুইটে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্তদের পরিবারকে সহানুভূতি জানিয়েছেন।

জানা গিয়েছে, উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় হিমবাহে ফাটল ধরার পর যে তুষারধস নামে, তার জেরেই ধউলিগঙ্গার জলস্তর বেড়ে যায়। প্রবল জলচ্ছ্বাসে ঋষিগঙ্গা বাঁধ ভেঙে যাওয়াতেই বাড়ে বিপত্তি। বন্যার জল বেড়ে ধৌলিগঙ্গার দুই তীরের বেশ কয়েকটি গ্রাম ভাসিয়ে নিয়ে যায়। বেশ কয়েকটি সেতু ভেঙে যায়। ভেসে যায় ধউলিগঙ্গার দুই তীরের দুটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ঋষিগঙ্গা ও তপোবন বিষ্ণুপুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পও। জল গিয়ে অলকানন্দা নদীতে পৌঁছেছে বলেও জানিয়েছে আইটিবিপি।

রবিবার দুপুর দু’টো নাগাদ ভাগিরথী নদীর উপর তেহরি বাঁধটিকে অবশ্য ঠিক করা গিয়েছে। আইটিবিপি জানিয়েছে, পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। তবে এখনও অনেক কাজ বাকি। আইটিবিপি-র ২৫০ জনের একটি বাহিনী কাজ করছে ধউলিগঙ্গার তীরে জলচ্ছ্বাসে বিধ্বস্ত গ্রামগুলিতে।

তবে সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা কঠিন। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। বাড়তে পারে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও।

Amit Shah Uttarakhand Glaciers avalanche PM Narendra Modi

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।