তিন দিনের সফরে ভারতে এলেন আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স। সোমবার সকাল ১০টার কিছু আগে দিল্লির পালাম বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে তাঁর বিমান। ভান্সের সঙ্গে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী, ভারতীয় বংশোদ্ভূত উষা ভান্স এবং তিন শিশুসন্তান— ইওয়ান, বিবেক ও মিরাবেল। তিন খুদের পরনেই ছিল ভারতীয় পোশাক। সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করার কথা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ডেপুটি’র।
আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এই প্রথম ভারতে এলেন ভান্স। পালাম বিমানঘাঁটিতে তাঁকে স্বাগত জানান কেন্দ্রীয় রেল এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। বিমানঘাঁটিতে ভান্সকে ‘গার্ড অফ অনার’ দেওয়া হয়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ভান্সকে স্বাগত জানাতে যাননি উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। অথচ ‘প্রোটোকল’ মোতাবেক ভান্সের সমান পদমর্যাদার অধিকারী ধনখড়েরই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানাতে যাওয়ার কথা। শুধু তা-ই নয়, ভান্সের সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করার কথা উপরাষ্ট্রপতির। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ভান্সকে নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মোদী।
যদিও বিদেশমন্ত্রকের একটি সূত্রের বক্তব্য, এমন কোনও ‘প্রোটোকল’ নেই। উদাহরণ দিয়ে ওই সূত্র জানাচ্ছে, কমলা হ্যারিস আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন যখন ভারত সফরে এসেছিলেন, তখনও তাঁকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে যাননি উপরাষ্ট্রপতি ধনখড়। ফলে ভান্সকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে ধনখড়ের না-যাওয়ার মধ্যে ‘অন্য কিছু’ খোঁজা অর্থহীন।
মোদীর আমেরিকা সফরের সময়ই দুই দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। প্রস্তাবিত সেই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত করতে গত কয়েক দিনের মধ্যে দুই দেশের প্রশাসনের মধ্যে একাধিক বার আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের প্রশাসনই চুক্তি নিয়ে আশাবাদী। সূত্রের খবর, মোদী–ভান্সের বৈঠকে উঠবে বাণিজ্যচুক্তি প্রসঙ্গ। চুক্তি দ্রুত চূড়ান্ত করার পথ আরও প্রশস্ত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। একই সঙ্গে শুল্কনীতি নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারতে পৌঁছোনোর কয়েক ঘণ্টা পরেই ভান্সের সপরিবার স্বামীনারায়ণ অক্ষরধাম মন্দির পরিদর্শন করতে যাওয়ার কথা। তার পর হস্তশিল্পের একটি শপিং মলেও যেতে পারেন তাঁরা। দিল্লি ছাড়াও ভান্স ও তাঁর পরিবার আগরা এবং জয়পুরও যাবেন। ভান্সের সঙ্গে এই সফরে এসেছেন পাঁচ জন মার্কিন প্রশাসনিক কর্তা। তাঁদের মধ্যে কেউ পেন্টাগনের, কেউ আবার আমেরিকার বিদেশ দফতরের সঙ্গে যুক্ত।
আরও পড়ুন:
মোদীর সঙ্গে নৈশভোজ সারার পর সোমবার রাতেই জয়পুরের উদ্দেশে পাড়ি দেবেন ভান্স। মঙ্গলবার জয়পুরের বেশ কিছু ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করবেন তিনি। বিকেলে জয়পুরের একটি অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত থাকার কথা তাঁর। সূত্রের খবর, তাঁর বক্তৃতায় জায়গা করে নেবে ট্রাম্প জমানায় ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্কের দিকগুলি। এ ছাড়াও, কূটনীতি, বিদেশনীতির মতো বিষয়গুলি নিয়েও কথা বলতে পারেন ভান্স।
বুধবার ভান্স সপরিবার জয়পুর থেকে আগরার উদ্দেশে রওনা দেবেন। তাজমহলের মতো ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখার কথা তাঁর। বিকেলে আবার জয়পুরে ফিরে আসার কথা ভান্সের। বৃহস্পতিবার সেখান থেকেই আমেরিকার উদ্দেশে পাড়ি দেবেন তিনি।