সৌদি আরবের যুবরাজ তথা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ বিন সলমন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই
সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যা মামলায় সৌদি আরবের যুবরাজ তথা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ বিন সলমনকে অব্যাহতি দিয়েছে আমেরিকার জো বাইডেন প্রশাসন। এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামও টেনে নিয়ে এল ওয়াশিংটন। বাইডেন প্রশাসনের ব্যাখ্যা, সলমনের বিষয়টি আদৌ নতুন কিছু নয়, এর আগে মোদীকেও এই ধরনের ছাড় দেওয়া হয়েছিল।
সলমনকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয় নিয়ে আমেরিকার সরকারের মুখপাত্র বেদান্ত পটেল বলেছেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা আমেরিকায় প্রথমবার হল না। এর আগে বারবার এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে।অনেক রাষ্ট্রনেতার ক্ষেত্রেই এমনটা ঘটেছে।’’ সাংবাদিকদের সামনে উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘১৯৯৩ সালে হাইতির প্রেসিডেন্ট আরিসটাইড, ২০০১ সালে জিম্বোবোয়ের প্রেসিডেন্ট মুগাবে, ২০১৪-য় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী, ২০১৮ সালে কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট কাবিলার ক্ষেত্রে একই ধরনের উদাহরণ রয়েছে। যাঁরা বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রধান কিংবা বিদেশমন্ত্রী, তাঁদের ব্যাপারে আমেরিকা বারবার এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে এসেছে।’’ আমেরিকার বক্তব্য নিয়ে ভারত সরকারের থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
২০০২ সালে গুজরাতের দাঙ্গার তিন বছর পর, ২০০৫ সালে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভিসার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আমেরিকা। মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে তাঁর প্রশাসন কোনও পদক্ষেপই করেনি। ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের পর নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হন। তারপরেই মোদীকে আমেরিকায় আমন্ত্রণ জানায় আমেরিকার প্রশাসন। আগেই অবশ্য আমেরিকার রাষ্ট্রদূত আমদাবাদে গিয়ে মোদীর সঙ্গে দু’ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর আমেরিকা সফরের আগে সেখানকার একটি আদালত গুজরাত দাঙ্গায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় মোদীর উদ্দেশে সমন জারি করেছিল। তার তিন সপ্তাহ পর নিউ ইয়র্কের আদালতে আমেরিকা সরকার জানায়, নরেন্দ্র মোদী এখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ফলে আমেরিকার আদালতে তিনি অব্যাহতি পেতে পারেন। বিচারক আমেরিকার প্রশাসনের সেই ব্যাখ্যাকে গ্রহণ করে ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে মামলাটি খারিজ করে দিয়েছিলেন।
এত বছর পরে সোদি আরবের প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ বিন সলমনকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রসঙ্গে মোদীর উদাহরণ সামনে নিয়ে এল ওয়াশিংটন। আমেরিকার বিবৃতিতে বলা হয়েছে— সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী পদে উন্নীত হয়েছেন মহম্মদ বিন সলমন। একজন রাষ্ট্রনেতা হওয়ার সুবাদে আইনি দিকে থেকে খাশোগি মামলায় তাঁর বিচার চলে না। এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইনের উল্লেখও করা হয়েছে।
২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যার পিছনে সলমনের ভূমিকা রয়েছে বলে সন্দেহ করেছিলেন আমেরিকার গোয়েন্দারা। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময়ে বাইডেন বলেছিলেন, খোশোগির হত্যাকারীরা যাতে রেহাই না পায়, তা তিনি নিশ্চিত করবেন। সলমনকে তাঁর কৃতকর্মের মূল্য দিতে হবে। ফলে সৌদির যুবরাজকে নিয়ে বাইডেন সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy