Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

অর্থনীতির ওঠানামা স্বাভাবিক, মত মোদীর

প্রধানমন্ত্রী বললেন, অর্থ ব্যবস্থায় ওঠানামা আগেও এসেছে। প্রতি বারেই ভারত সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসেছে। এ বারেও আসবে।

নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৩
Share: Save:

শিল্পমহল শুনতে চাইছিল, অর্থনীতির ঝিমুনি কাটাতে নরেন্দ্র মোদী সরকার কী কী করতে চলেছে!

প্রধানমন্ত্রী বললেন, অর্থ ব্যবস্থায় ওঠানামা আগেও এসেছে। প্রতি বারেই ভারত সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসেছে। এ বারেও আসবে।

বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের বার্ষিক অধিবেশনে এ কথা শোনার পরে এক শিল্পপতি আর প্রশ্নটা চেপে রাখতে পারলেন না, ‘‘মোদীজি অর্থনীতির ঝিমুনির কথা স্বীকার করলেন বটে। কিন্তু তার হাল শোধরানোটা কি ভবিতব্যের হাতেই ছেড়ে দিলেন?’’

দেশ জুড়ে নয়া নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। বিরোধীদের অভিযোগ, অর্থনীতির করুণ দশা থেকে নজর ঘোরাতেই মোদী সরকার এনআরসি-র জুজু দেখাচ্ছে। কারণ, আর্থিক বৃদ্ধির হার ৪.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। শিল্পোৎপাদন কমছে। এই সঙ্কটে দিশা দেখানোর বদলে মোদী শিল্পমহলকে অর্থনীতির স্বাভাবিক ওঠানামার নিয়মের ভরসায় থাকতে বলেছেন।

মোদীর এই দাবির ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই দিল্লিতে আর এক বণিকসভা ফিকির অনুষ্ঠানে আইএমএফ-এর মুখ্য অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ বলেন, চলতি অর্থ বছরের দ্বিতীয়ার্ধেও দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে না। চলতি ঝিমুনি অর্থনীতির স্বাভাবিক ওঠানামার
অঙ্গ, না কি কাঠামোগত সমস্যার ফল, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। গোপীনাথের বক্তব্য, ওঠানামার নিয়মে আসা ঝিমুনিও যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, অনেক দিন ধরে যদি লগ্নি না আসে, তবে কাঠামোতেই সমস্যা দেখা দেবে।

চলতি অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে বৃদ্ধির হার ছিল ৫ শতাংশ। জুলাই-সেপ্টেম্বরে তা নেমে এসেছে ৪.৫ শতাংশে। কেন্দ্রের দাবি, অক্টোবর থেকেই আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়তে শুরু করবে। কিন্তু আজ গোপীনাথ বলেন, ‘‘আশা করেছিলাম, অর্থ বছরের শেষ ছয় মাসে জিডিপি বাড়বে। কিন্তু বিভিন্ন মাপকাঠি বলছে, হাল শোধরানোর সম্ভাবনা কম। তাই বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে আনছি।’’

দিল্লির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফিনান্স অ্যান্ড পলিসির অর্থনীতিবিদ ইলা পট্টনায়কও আজ বলেন, ‘‘আমরা যা হিসেব কষছি, তাতে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরে বৃদ্ধির হার আরও খারাপ হবে।’’

আজ মোদীর বক্তব্য শোনার পরে শিল্পপতিদের একাংশের মত, তিনিও এখন ‘রক্ষণাত্মক’ অবস্থানে। কারণ, মোদী আজ স্মরণ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন যে, আগের সরকারের আমলে এক সময় আর্থিক বৃদ্ধির হার ৩.৫ শতাংশে নেমে গিয়েছিল। এক শিল্পপতি বলেন, ‘‘এ যেন অন্য নরেন্দ্র মোদী। কোথায় উনি বলবেন, মনমোহন জমানায় বৃদ্ধির হার ৮ শতাংশে ছিল, আমি ৯ শতাংশ করে দেখিয়েছি। তা না উনি মনমোহন
জমানায় সবথেকে খারাপ সময়ের সঙ্গে নিজের জমানার তুলনা করছেন!’’

আজ মোদী এ-ও বলেন, ‘‘পাঁচ-ছয় বছর আগে অর্থনীতি বিপর্যয়ের মুখে পড়তে চলেছিল। আমাদের সরকার তাকে থিতু করেছে।’’ শিল্পপতিদের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী কি পরিস্থিতি আরও কত খারাপ হতে পারত, তা দেখিয়ে আমাদের আশ্বস্ত করতে চাইছেন?

মোদী সরকারেরই প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন বলেন, পাঁচ-ছয় বছর আগের সমস্যা ও এখনকার সমস্যা একেবারে আলাদা। আজ অর্থনীতির সমস্যা অনেক গভীরে। একে ‘স্লোডাউন’ না বলে ‘গ্রেট স্লোডাউন’ বলে আখ্যা দিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এক সময় না এক সময় তো বৃদ্ধির হার বাড়বেই। কিন্তু তাকে যেন অর্থনীতির সঙ্কটের পাকাপাকি সমাধান বলে ধরে নেওয়া না হয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Nrendra Modi Economy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy