‘রেপ ইন ইন্ডিয়া’ মন্তব্যের জেরে রাহুল গাঁধীকে লোকসভায় আক্রমণ স্মৃতি ইরানির।
রাহুল গাঁধীর ‘রেপ ইন ইন্ডিয়া’ মন্তব্যের জেরে বিতর্কে উত্তাল সংসদ। লোকসভায় রাহুলকে তীব্র আক্রমণ করলেন স্মৃতি ইরানি সহ বিজেপি সাংসদরা। বৃহস্পতিবার ঝাড়খণ্ডের একটি সভায় রাহুলের এই মন্তব্য করেন রাহুল। তাঁকে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে ওয়েলে তুমুল হই হট্টগোলর করেন শাসক দলের সাংসদরা। তার জেরে দুপুর পর্যন্ত লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দেন স্পিকার ওম বিড়লা। যদিও রাহুল গাঁধী অবস্থানে অনড় থেকে সংসদের বাইরে বলেছেন, তিনি ক্ষমা চাইবেন না।
বিজেপির বক্তব্য, এই মন্তব্য করে ধর্ষণে উস্কানি দিয়েছেন রাহুল গাঁধী। স্মৃতি ইরানির তোপ, ‘‘দেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও নেতা আহ্বান জানালেন, মহিলাদের ধর্ষণ করুন। এটাই কি রাহুল গাঁধীর বার্তা দেশকে? ওঁর শাস্তি হওয়া উচিত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ সব মানুষ ধর্ষক নন। এটা দেশবাসীর অপমান।’’ রাহুলকে স্মৃতির কটাক্ষ, ‘‘রাহুল গাঁধীর বয়স ৫০ ছুঁইছুই। কিন্তু তার পরেও তিনি বুঝতে পারছেন না, এই ধরনের মন্তব্য ধর্ষণকে আমন্ত্রণ জানানো।’’
গত লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশের অমেঠী কেন্দ্র থেকেই রাহুল গাঁধীকে হারিয়েছিলেন স্মৃতি ইরানি। তিনি যখন রাহুলের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছেন, তখন বিজেপি সাংসদদের হই-হট্টগোল আরও বেড়ে যায়। রাহুলের শাস্তি এবং ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে ওয়েলে নেমে চলতে থাকে বিক্ষোভ। তার মধ্যেই সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধীর এই মন্তব্য দেশের প্রতিটি মহিলার অপমান।’’ সাধারণত অধিবেশন মুলতুবি করতে চান না বলে লোকসভা চালানোর সুনাম রয়েছে ওম বিড়লার। কিন্তু পরিস্থিতি এমনই দাঁড়ায় যে দুপুর পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি করে দেন লোকসভার স্পিকার।
সংসদে উত্তাপ ছড়ালেও রাহুল কার্যত তাঁর মন্তব্য থেকে সরে আসছেন না। পরে তিনি বলেন, ‘‘আমি ক্ষমা চাইব না।’’ পাল্টা আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘‘আমি আপনাদের দেখিয়ে দেব, নরেন্দ্র মোদী দিল্লিকে ‘রেপ ক্যাপিটাল’ বলেছিলেন। আসল ইস্যু হচ্ছে অসম জ্বলছে। সেটা থেকে নজর ঘোরাতেই এটা করা হচ্ছে।’’
মোদী সরকারের অন্যতম স্লোগান ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’। সেই স্লোগানকেই কটাক্ষ করে বৃহস্পতিবার ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় একটি সভায় বলেছিলেন, নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’। কিন্তু আজকাল যেদিকেই তাকান দেখবেন, ‘রেপ ইন ইন্ডিয়া’। উত্তরপ্রদেশে নরেন্দ্র মোদীর বিধায়ক এক মহিলাকে ধর্ষণ করেছিলেন, তার পর তিনি দুর্ঘটনার শিকার হলেন। কিন্তু মোদী একটা কথাও বলেননি।’’
ওই সভায় ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ স্লোগানকেও নিশানা করে রাহুল বলেছিলেন, মোদী বলেন ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’। কিন্তু কাদের থেকে মেয়েদের রক্ষা করতে হবে, সেটা তিনি কখনও বলেননি। তাঁদের বিজেপির বিধায়কদের থেকে বাঁচানো উচিত।
হায়দরাবাদে তরুণী চিকিৎসককে গণধর্ষণ ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় চলছিল। ঘটনায় ধৃত চার অভিযুক্তের এনকাউন্টার নিয়েও শোরগোল হয়েছে। তার মধ্যে আবার উন্নাওয়ের এক মহিলাকে ধর্ষণের পর জামিনে ছাড়া পেয়ে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ধর্ষণে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পাশাপাশি ধর্ষণে দোষীদের দ্রুত শাস্তির দাবি উঠেছে সারা দেশ থেকে। তার মধ্যেই রাহুলের এই মন্তব্য ঘিরে বিতর্কও তৈরি হয়েছিল। সেই ইস্যুকেই সংসদে নিয়ে গিয়ে রাহুল তথা কংগ্রেসকে কোণঠাসা করল শাসক দল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy