Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Uttar Pradesh

বহুবিবাহে বাঁচে ‘মান’, অদ্ভুত প্রথা উত্তরপ্রদেশের গ্রামে

উত্তরপ্রদেশের লখিমপুরের খেরি জেলার ফতেপুর গ্রাম। আশপাশের আর পাঁচটা গ্রামের থেকে অনেকটাই আলাদা যোগীর রাজ্যের এই এলাকা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
লখনউ শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৯ ১৭:৩৮
Share: Save:

কে বলে কৌলীন্য প্রথা উঠে গিয়েছে? উত্তরপ্রদেশের এই গ্রামে এখনও বহুবিবাহ রেওয়াজ। একটি বা দুটি ঘটনা নয়, একাধিক স্ত্রী নিয়ে ‘শান্তি’তে জীবন কাটাচ্ছেন বহু গ্রামবাসীই।

উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরি জেলার ফতেপুর গ্রাম। আশপাশের আর পাঁচটা গ্রামের থেকে অনেকটাই আলাদা যোগীর রাজ্যের এই এলাকা। কেন? এখানকার ব্রাহ্মণ ও ঠাকুরদের মধ্যে বহুকাল ধরেই চলে আসছে কৌলীন্য প্রথা। গ্রামের অন্তত তিরিশটি পরিবার এখনও বহন করে চলেছে বহুবিবাহের ‘ঐতিহ্য’।

গ্রামবাসীরা বলছেন, অনেকেই গ্রামের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত। সেই সূত্রে ‘পরিবার’ পরিজনের থেকে অনেক দূরেই থাকেন তাঁরা। কর্মস্থলে ‘সুখে-স্বচ্ছন্দে’ থাকতে সেখানেও তাঁরা আরও একটি বিয়ে করেছেন। আর তাতেই নাকি গ্রামে ‘মাথা উঁচু’ থাকে তাঁদের। তবে, এ সব নিয়ে ঢাকঢাক গুড়গুড়ই বেশি। কারণ, সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে বহুবিবাহের অভিযোগ উঠলে চাকরি নিয়েও টানাহেঁচড়া হতে পারে।

আরও পড়ুন: হাতের রক্তে সিঁদুর পরিয়ে সেলফি, তার পরই শ্বাসরোধ করে খুন প্রেমিকাকে, আত্মঘাতী প্রেমিকও!

‘অন্তর্জলি যাত্রা’ ছবির সেই দৃশ্যটা অনেকেরই স্মৃতিতে টাটকা। গঙ্গার জলে পা ডুবিয়ে ‘শেষযাত্রা’র অপেক্ষায় রয়েছেন বৃদ্ধ স্বামী সীতারাম। ছবিতে সীতারামের সঙ্গেই জুড়ে দেওয়া হয়েছিল সুন্দরী যশোবতীর ভবিষ্যৎ। বাস্তবে এমন কাণ্ডেরও নাকি সাক্ষী থেকেছে ফতেপুর। অনেক সময়েই দরিদ্র পরিবারের মেয়েকে ‘উদ্ধার’ করতে ‘হাত’ বাড়িয়ে দিয়েছেন অর্থবান প্রৌঢ় বা বৃদ্ধরা। আবার ‘উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ’ আসবে ভেবে এমন বিয়েতে রাজিও হন অনেক মহিলা। অনেকের মতে, ফতেপুর গ্রামে এই প্রথার শিকড় গাঁথা রয়েছে সমাজের অন্তরেই। একাধিক বিয়েতেই নাকি ‘মান-সম্মান’ বাড়বে পুরুষের। এমন ভাবনা থেকেই এখনও চলে আসছে বহুবিবাহের রেওয়াজ।

প্রথম স্ত্রী থাকতেও দ্বিতীয় বিয়ে কেন? শেষমেষ, দাম্পত্য-কাহিনি খুলেই জানালেন গ্রামেরই বৃদ্ধ সুন্দরলাল শুক্ল। বললেন, ‘‘আমার প্রথম স্ত্রী খুব মুখরা ছিল। বারবারই ঘর ছেড়ে চলে যেত। অনেক বোঝানোর পর মাস ছ’য়েক পর পর ফিরে আসত। এ সব দেখে আমাকে দ্বিতীয় বিয়ের পরামর্শ দেন আত্মীয়রা। বিয়ের খবর পেয়েই আমার প্রথম স্ত্রী ঘরে ফিরে আসে। আমিও আমার জমিজমা দুই স্ত্রীর মধ্যে ভাগ করে দিয়েছি।’’

আরও পড়ুন: এ বার ডাইনি অপবাদে! ঝাড়খণ্ডে গণপিটুনিতে খুন দম্পতি-সহ চার জন

তবে এখন হাওয়া বদলাচ্ছে। বদলের রঙ লাগছে দীর্ঘদিন ধরে লালিত এই ভাবনায়। সঙ্গে আছে আইনের ভয়ও। শান্তিতে থাকতে, তাই বাবা-কাকার মতো দ্বিতীয় বিয়েতে আর রাজি হচ্ছেন না গ্রামের বেশিরভাগ যুবকই। নারীর অধিকার নিয়ে লড়াই-আন্দোলন, এর মাঝেই যেন ‘বুক ফুলিয়ে’ বেমানান ফতেপুর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy