কুলদীপ সেঙ্গার। ফাইল চিত্র।
উন্নাওয়ের নাবালিকা ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত বিজেপির ‘বহিষ্কৃত’ বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারকে আজ আমৃত্যু কারাদণ্ডই দিল দিল্লির তিসহাজারি আদালত। সঙ্গে ২৫ লক্ষ টাকার জরিমানা। আদালতের মতে, ধর্ষণের মামলা তুলে নিতে নির্যাতিতাকে নানা ভাবে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছে কুলদীপ। তাকে তাই নির্যাতিতার পরিবারকেও ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে বলে জানাল আদালত। রায় শুনে কোর্টরুমে দাঁড়িয়ে আজ ফের কাঁদতে দেখা গেল বছর চুয়ান্নর ‘বাহুবলী’ কুলদীপকে। পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন তার বোন, মেয়েও। আর নির্যাতিতার দিদি বললেন, ‘‘আশা করেছিলাম, আদালত মৃত্যুদণ্ড দেবে। একমাত্র তা-হলেই আমরা সম্পূর্ণ সুবিচার পেতাম। ও জেলে থাকলেও যে আমাদের ভয়ে-ভয়ে থাকতে হয়।’’
গত সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডের সপ্তম বর্ষপূর্তির দিনই ২০১৭-র অপহরণ ও ধর্ষণের মামলায় বাঙ্গেরমউয়ের চার বারের বিধায়ক কুলদীপকে ভারতীয় দণ্ডবিধি ও পকসো আইনে দোষী সাব্যস্ত করেছিল এই আদালত। মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই গোড়া থেকেই দোষীর যাবজ্জীবন সাজা চেয়ে এসেছে। আজ সাজার শুনানি শুরু হতেই কুলদীপের আইনজীবী বলতে শুরু করেন, তাঁর মক্কেলের দীর্ঘ রাজনৈতিক কেরিয়ারে যে-হেতু কোনও ‘দাগ’ নেই, তাই তাকে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হোক। বিচারক শর্মা যদিও সেই আর্জি খারিজ করে যাবজ্জীবনের সাজা শোনাতে গিয়ে বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানুষের বিশ্বাসভঙ্গ করেছে সেঙ্গার।’’
গোড়ায় অবশ্য বিধায়কের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগই নিতে চায়নি উন্নাও পুলিশ। বরং নির্যাতিতার বাবাকে ভুয়ো মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ ওঠে কুলদীপের বিরুদ্ধে। বিচার বিভাগীয় হেফাজতে বাবার রহস্যমৃত্যুর পরে বিচার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাড়ির সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ধর্ষিতা। তাতে নড়ে বসে প্রশাসন। ধর্ষণ-পরবর্তী কুলদীপ ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে চারটি মামলা এখনও বিচারাধীন দিল্লির তিসহাজারি আদালতে।
কুলদীপের জরিমানা এবং ক্ষতিপূরণের অঙ্ক ঠিক করতেই নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় তার সম্পত্তির পরিমাণ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় আদালত। কুলদীপের আইনজীবী সেই নথি পেশ করার পরেই আজ সাজা ঘোষণা করল আদালত। জেলা জজের স্পষ্ট নির্দেশ, এক মাসের মধ্যেই জরিমানা মেটাতে হবে কুলদীপকে। অনাদায়ে তা দেবে যোগী সরকার। কোর্টের নির্দেশ, তিন মাস অন্তর নির্যাতিতার পরিবারের নিরাপত্তা যাচাই করতে হবে সিবিআইকে। উন্নাওয়ের ওই পরিবারটি এখন দিল্লিতে। দিল্লির মহিলা কমিশন তাঁদের থাকার জন্য যে বন্দোবস্ত করেছে, আগামী অন্তত এক বছর সেখানেই থাকতে বলা হয়েছে তাঁদের। কোর্টের নির্দেশ, ঘরভাড়া বাবদ মাসে ১৫ হাজার টাকা করে দিতে হবে উত্তরপ্রদেশ সরকারকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy