Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
TMC

Amit Shah: দিনভর ধর্না শেষে শাহি-আশ্বাস

ত্রিপুরা-কাণ্ডের প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সামনে দিনভর ধর্না তৃণমূল সাংসদদের। সোমবার দিল্লিতে।

ত্রিপুরা-কাণ্ডের প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সামনে দিনভর ধর্না তৃণমূল সাংসদদের। সোমবার দিল্লিতে। ছবি— পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২১ ০৬:৩২
Share: Save:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে পা দেওয়ার ঠিক আগে সোমবার দিনভর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ঠিক দোরগোড়ায় বিক্ষোভ এবং ধর্না দিল তৃণমূল কংগ্রেস। দিনশেষে কেন্দ্রী্য় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পরে তৃণমূল সূত্রে দাবি করা হল, ত্রিপুরায় হিংসা বন্ধের আশ্বাস মিলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তরফে।

রবিবার সন্ধ্যার পরে দিল্লি পৌঁছন তৃণমূলের জনা বিশেক সাংসদ। দলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষের গ্রেফতার হওয়া এবং ত্রিপুরায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপির হিংসার অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে একটি স্মারকলিপি দেওয়ার কৌশল নেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘ অপেক্ষার পরে সোমবার বিকেলে অমিত শাহের বাসভবনে প্রায় আধ ঘণ্টা বৈঠকের পরে তৃণমূল সূত্রের দাবি, ত্রিপুরায় আর হিংসা হবে না বলে আশ্বাস মিলেছে। অমিত জানিয়েছেন, তিনি গোটা বিষয়টি নিয়ে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সঙ্গে একদফা কথাও বলেছেন। ত্রিপুরার হিংসা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একটি স্মারকলিপিও জমা দেন তৃণমূল সাংসদেরা।

গত কাল রাতেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করে শাহের সময় চাওয়া হয়েছিল। দলীয় সূত্রের দাবি, তাঁদের সোমবার সকালে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, অমিত শাহ সবে লখনউ থেকে ফিরেছেন, তিনি আজ সময় দিতে পারছেন না। এর পর সাউথ অ্যাভিনিউয়ে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে সরাসরি নর্থ ব্লকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের গেটের সামনে (চার নম্বর) পৌঁছে যান দলের ১৬ জন সাংসদ। সেখানে স্লোগান দিতে দেখা যায় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, দোলা সেন, মালা রায়, শান্তনু সেন, ডেরেক ও’ব্রায়েন, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, নাদিমুল হক, অপরূপা পোদ্দারদের। গলা মেলান অপেক্ষাকৃত প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়, সুখেন্দুশেখর রায়ও। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে ঢোকার সিঁড়ির পাঁচ গজ দুরে মাটিতে বসে পড়েন তৃণমূল সাংসদরা। সেখান থেকে চিৎকার উঠতে থাকে ‘মোদী-শাহ হঠাও, দেশ বাঁচাও।’ পাশাপাশি ত্রিপুরায় কেন অন্য রাজনৈতিক দলকে তাদের প্রচার কার্য চলানো সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মান্য করা হচ্ছে না, কেন সেখানে গুন্ডারাজ চলছে— এই সব প্রশ্নও তোলেন তাঁরা। তৃণমূলের লোকসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের জনপ্রিয় স্লোগানের ধুয়ো তুলে বলতে থাকেন, ‘হাডুডু খেলা হবে, ব্যাডমিন্টন খেলা হবে..!’ রাজনৈতিক শিবিরের মতে, কিছুটা আশ্চর্যজনক ভাবে নিরাপত্তার দিক থেকে অতি স্পর্শকাতর ওই এলাকায় (যেখানে অষ্টপ্রহর ১৪৪ ধারা জারি থাকে) প্রবল ভিড় (সংবাদমাধ্যমও ভিড় করে ফেলায়) সত্ত্বেও তৃণমূলের সাংসদদের গ্রেফতার করা হয়নি। সূত্রের মতে, সম্ভবত তাঁদের গ্রেফতার করে তৃণমূলের প্রচারে বাড়তি আলো ফেলতে চায়নি কেন্দ্র। তবে গ্রেফতার না করলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এবং আধাসামরিক বাহিনী তৃণমূল নেতাদের ঘিরে ধরে একটি বৃত্তের মধ্যে আটকে দেয়।

তৃণমূল সাংসদেরা যখন নর্থ ব্লকের সামনে ধর্না দিচ্ছেন, তখন কলকাতা থেকে দিল্লি রওনা হওয়ার আগে তৃণমূল নেত্রী ঘোষণা করেন, তিনি পৌঁছেই নর্থ ব্লকে গিয়ে তাঁর সাংসদদের পাশে দাঁড়াবেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তাঁর এই ঘোষণার কিছুক্ষণের মধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে ফোন করে তৃণমূল নেতাদের জানানো হয়, অমিত শাহ বিকেলে তাঁর বাসভবনে কথা বলার জন্য সময় দিয়েছেন।

ত্রিপুরায় বিজেপির বিরুদ্ধে হিংসার অভিযোগ তুলে মমতা আজ সরব হয়েছেন। তাঁর কথায়, “ত্রিপুরায় যে পরিস্থিতি চলছে, তা শুধু ত্রিপুরার বিষয় নয়। প্রধানমন্ত্রীকে বলব। মুম্বই যাব, সেখানেও বলব। ওখানে চিকিৎসা পর্যন্ত দেওযা হয় না। অনেককে এসএসকেএম হাসপাতালে আনা হয়েছে চিকিৎসার জন্য। বিজেপি কাউকে কাজ করতে দেবে না। এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কোথায়? জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কোথায়? ত্রিপুরায় যে ভাবে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে, সারা দেশ তা দেখেছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যের এমন শাসন ব্যবস্থায় মানুষ হাঁপিয়ে উঠেছে। এখানে তো কত মানবাধিকার কমিশন আর ৩৫৫-র কথা বলা হত। এখন সে সব কোথায়?”

দিল্লিতে তৃণমূল সূত্র বলছে, অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক ইতিবাচকই হয়েছে। এটাও লক্ষণীয় যে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরেই জামিন পেয়েছেন তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ। এই দুই ঘটনার মধ্যে সংযোগ রয়েছে বলেই মনে করছে তৃণমূল সূত্র। বৈঠক থেকে বেরিয়ে সৌগত রায় বলেন, “সায়নী ঘোষকে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করা নিয়েও ক্ষোভের কথা জানিয়ে প্রতিবিধান চেয়েছি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, বিরোধী দলও যাতে ত্রিপুরায় অবাধে তাদের রাজনৈতিক কার্যকলাপ চালিয়ে যেতে পারে। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ত্রিপুরার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়। অমিত শাহ আমাদের জানান, তাঁর সঙ্গে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের কথা হয়েছে। সায়নীর ব্যাপারে তিনি অনুসন্ধান রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন। নির্বাচন যাতে হিংসামুক্ত হয়, তা দেখার আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।”

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Amit Shah Delhi Tripura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy