মণিপুরের রাস্তায় আগামী ৮ মার্চ থেকে সাধারণ মানুষ যেন বিনা বাধায় চলাচল করতে পারেন। শনিবার মণিপুরের নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকের পরেই এই নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কেউ রাস্তা আটকানোর চেষ্টা করলে, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপেরও নির্দেশ দিয়েছেন শাহ।
উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি হওয়ার পর থেকে প্রথম কোনও পর্যালোচনা বৈঠক করলেন শাহ। লুট হওয়া সরকারি অস্ত্র এবং বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। মণিপুরে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসা হিংসায় আড়াইশোর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই অবস্থায় মণিপুরে শান্তি ফেরাতে কী করণীয়, তা নিয়ে বৈঠক করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মণিপুরের রাজ্যপাল অজয়কুমার ভল্লা এবং সরকারি আধিকারিকেরা। পাশাপাশি সেনা এবং আধাসেনার কর্তারাও উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে।
আধিকারিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, মণিপুরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কী রয়েছে, তা বিস্তারিত জানানো হয়েছে বৈঠকে। উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে কী ভাবে স্বাভাবিক ছন্দ ফেরানো যায়, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।
মণিপুরে হিংসার আবহে সে রাজ্যের বিভিন্ন গুদাম, বিভিন্ন বাহিনীর অস্ত্রশালা থেকে সরকারি অস্ত্র লুটের অভিযোগ ওঠে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। অশান্তি-কবলিত মণিপুরে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির শাসন জারি হয়। রাষ্ট্রপতি শাসনের আবহে রাজ্যপাল ভল্লাই মণিপুরের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি জানিয়েছিলেন, সাত দিনের মধ্যে লুটের অস্ত্র ফেরত দিতে হবে। অন্যথায় কঠোর ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। এই সময়ের মধ্যে যাঁরা অস্ত্র থানায় জমা দিয়ে যাবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে না। তবে যাঁরা সাত দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও বেআইনি অস্ত্র নিজেদের কাছে রেখে দেবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এই সাত দিনের মধ্যে ৩০০-র বেশি অস্ত্র সমর্পণ হয়েছে। তার মধ্যে মেইতেইদের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরামবাই তেঙ্গলের তরফে ২৪৬টি আগ্নেয়াস্ত্র জমা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
তবে অনুমান করা হচ্ছে, এখনও সব অস্ত্র জমা পড়েনি। এই অবস্থায় রাজ্যপাল ভল্লাও অস্ত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা আরও এক সপ্তাহ বৃদ্ধি করেছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি ঘোষণা করেন, আগামী ৬ মার্চ বিকেল ৪টে পর্যন্ত অস্ত্র সমর্পণ করা যাবে। লুট হওয়া সরকারি অস্ত্র এবং অন্য বেআইনি অস্ত্র সমর্পণের বিষয় নিয়েও শনিবার পর্যালোচনা বৈঠকে আলোচনা করেছেন শাহ।