অশ্বিনী বৈষ্ণব। —ফাইল চিত্র।
প্রায় এক দশকের বেশি সময় থমকে থাকার পরে বিহারের শোননগর থেকে ডানকুনি পর্যন্ত প্রস্তাবিত রেলের পণ্যবাহী করিডরের একাংশ নির্মাণের অনুমতি দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। রেল মন্ত্রক সূত্রে খবর, বিহারের শোননগর থেকে পশ্চিমবঙ্গের অন্ডাল পর্যন্ত ৩৭৪.৫ কিলোমিটার পথে ১৩,৬০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই চার লাইনের করিডর নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যদিও তা যাত্রিবাহী ট্রেন করিডরের সঙ্গে মিশে যাবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। আজ রেলমন্ত্রী যা ইঙ্গিত দিয়েছেন তাতে পূর্ব পণ্যবাহী করিডর অন্ডালেই এসে থেমে যাবে। এর ফলে অতীতে ডানকুনি পর্যন্ত ওই করিডর যাওয়ার যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল, তা আদৌ রূপায়ণ হবে কি না সংশয় তৈরি হয়েছে।
আজ নরেন্দ্র মোদীর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা রেলের মোট ৭টি প্রকল্পে ছাড়পত্র দিয়েছে। এই ৭টি প্রকল্পে মোট ২৩৩৯.৪৫ কিলোমিটার রেল লাইন পাতা হবে। খরচ হবে ৩২,৫০০ কোটি টাকা। এই ৭টির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গকে ছুঁয়েছে একটিই রেল প্রকল্প। সেটি— শোননগর থেকে অন্ডাল পর্যন্ত পূর্ব পণ্যবাহী করিডর।
তবে গোড়ায় ওই প্রকল্প শোননগর থেকে ডানকুনি পর্যন্ত করার কথা ঘোষণা করেছিল রেল। রেলমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাব ছিল কুলপি বন্দর পর্যন্ত পূর্ব পণ্যবাহী করিডর সম্প্রসারণ। আগামী দিনে ডানকুনি পর্যন্ত ওই প্রকল্প রূপায়ণ রেলের অগ্রাধিকারে যে নেই, তা স্পষ্ট হয়েছে মন্ত্রীর বক্তব্যে। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হল শোননগর থেকে অন্ডাল পর্যন্ত চার লাইন করা। কারণ অন্ডালের পরে লাইনে সে ভাবে ট্র্যাফিকের চাপ নেই। যাত্রী ও পণ্য মসৃণ ভাবে চালানোর প্রশ্নে মিসিং লিঙ্ক ছিল শোননগর থেকে অন্ডাল। অন্ডালে বাংলা, ওড়িশা ও এবং উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে ট্রেন আসায় সেখানে ট্রেনের জট তৈরি হচ্ছিল। তাই শোননগর থেকে অন্ডাল পর্যন্ত চার লাইন হচ্ছে। কিন্তু অন্ডাল থেকে আর পিপিপি মডেলে নতুন করে করিডর তৈরি হচ্ছে না।’’
এই করিডর কেবল মাত্র (ডেডিকেটেড) পণ্য যাতায়াতের কথা ভাবা হলেও, আজ বৈষ্ণব বলেছেন, “পূর্ব ও পশ্চিম পণ্যবাহী করিডরের মধ্যে ১৮টি পয়েন্ট করা হচ্ছে, যাদের মাধ্যমে পণ্যবাহী ও যাত্রী করিডরের যোগাযোগ থাকবে। যে শোননগর-অন্ডাল প্রকল্প ঘোষিত হয়েছে সেই চার লাইনও যাত্রিবাহী করিডরে মিশে যাবে।” এর ফলে ওই লাইনে যাত্রী ও পণ্য বহন ক্ষমতা বাড়বে।
রেল সূত্র জানিয়েছে, নতুন পণ্যবাহী করিডর দিল্লি হাওড়া লাইনের সমান্তরালে সম্পূর্ণ পৃথক লাইন হিসাবে পাতা হবে। বিহার থেকে ঝাড়খণ্ডের রাঁচী হয়ে তা পশ্চিমবঙ্গে আসবে। নতুন রেলপথে নিউ কাস্থা, নিউ কোডার্মা , নিউ গোমো, নিউ প্রধানখন্তা, নিউ মুগমা এবং নিউ অন্ডাল নামের ছয়টি নতুন জংশন স্টেশন তৈরি হবে। ওই সব জংশন স্টেশন রেলের বর্তমান লাইনের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। ফলে প্রয়োজনে ট্রেন যে কোনও পথে ঘুরিয়ে দেওয়ার সুবিধা থাকবে। পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে রানিগঞ্জে মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের যে সংযোগকারী লাইন রয়েছে তা পণ্যবাহী করিডরে যুক্ত হবে। কালীপাহাড়ি থেকে দক্ষিণ পূর্ব রেলের আদ্রাগামী লাইন ভট্টনগরের মাধ্যমে পণ্যবাহী করিডরের সঙ্গে যুক্ত হবে। এর ফলে দক্ষিণ পূর্ব রেলের কয়লা ও আকরিকবাহী ট্রেন সহজেই নতুন করিডরে আসতে পারবে।
পাশাপাশি অন্ডাল পর্যন্ত সম্প্রসারণের ফলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ থাকছে। নতুন করিডর নির্মাণের জন্য ৫ বছর সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে রাখা হয়েছে। ওই পথ তৈরি হলে পশ্চিম বর্ধমান জেলার একাধিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ইস্পাত শিল্প উপকৃত হবে। এ ছাড়াও সীতারামপুর থেকে গয়া এবং পটনা শাখায় ট্রেন চলাচল মসৃণ হবে।দিল্লি-হাওড়া পথে যাত্রিবাহী ট্রেনেরও সময় কমবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy