শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তামিল নিপীড়নের অভিযোগে এ বার সক্রিয় রাষ্ট্রপুঞ্জ। ফাইল চিত্র।
শুধু চিন অধিকৃত শিনজিংয়ায়ে উইঘুর মুসলিমদের উপর নির্যাতন নয়, শ্রীলঙ্কায় সংখ্যালঘু তামিল জনগোষ্ঠীর নিপীড়নের অভিযোগ নিয়েও রাষ্ট্রপুঞ্জে নীরব রইল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। বৃহস্পতিবার জেনিভায় রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আনা প্রস্তাবে ভোটাভুটি থেকে বিরত রইল ভারত।
রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদের ৫১তম অধিবেশনে ৪৭টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইউক্রেন-সহ ২০টি দেশ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাব সমর্থন করে। অন্য দিকে, কলম্বোর পাশে দাঁড়িয়ে প্রস্তাবের বিরোধিতা করে চিন, পাকিস্তান-সহ সাতটি দেশ। ভারত, জাপান, নেপাল-সহ ২০টি দেশ ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি। সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থনের ভিত্তিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবটি গৃহীত হয়।
তামিল আবেগের বিরুদ্ধে গিয়ে কেন রাষ্ট্রপুঞ্জে শ্রীলঙ্কা সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি থেকে বিরত থাকল মোদী সরকার? কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষার বাধ্যবাধকতার কারণেই সরাসরি কলম্বোর বিরোধিতা করতে পারেনি নয়াদিল্লি। তামিল নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে চিন এবং পাকিস্তান সরাসরি শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মোদী সরকার মানবাধিকার পরিষদে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাব সমর্থন করলে ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্রের সঙ্গে বেজিং এবং ইসলামাবাদের ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়ার সম্ভাবনা ছিল।
তবে সরাসরি শ্রীলঙ্কার বিরোধিতা না করলেও রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি ইন্দ্রমণি পান্ডে জানিয়েছেন, তামিলদের প্রতি শ্রীলঙ্কা সরকারের যে দায়বদ্ধতা তা ‘সঠিক’ ভাবে পালন করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আশা করব ১৩তম সংবিধান সংবিধানের মাধ্যমে আঞ্চলিক স্বশাসনের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, শ্রীলঙ্কা তা পালন করবে।’’
প্রসঙ্গত, ‘২০০৯ সালের গৃহযুদ্ধে অসহায় এবং নিরপরাধী তামিলদের উপর অত্যাচার এবং গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের সরকারের বিরুদ্ধে। মানবাধিকার পরিষদের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছিল, তামিল জঙ্গিগোষ্ঠী এলটিটিই-র বিরুদ্ধে লঙ্কাফৌজের চূড়ান্ত পর্বের অভিযানের সময় ‘নিখোঁজ’ হয়ে গিয়েছিলেন প্রায় ২০ হাজার তামিল। আশঙ্কা, তাঁদের অধিকাংশই নিহত হন।
পরবর্তী সময় উত্তর এবং পূর্ব শ্রীলঙ্কার তামিল গরিষ্ঠ অঞ্চলগুলিতে জোর করে জনবিন্যাস বদলানোর চেষ্টা এবং ধারাবাহিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকারের বিরুদ্ধে। যদিও বিজেপির একটি সূত্র খবর, এক মাত্র তামিলনাড়ু বাদ দিলে গোটা দেশে তামিল আবেগ নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই। তামিলনাড়ু ছাড়া কোনও রাজ্যের নির্বাচনের বিষয়ও এটি নয়। আর আগামী লোকসভা ভোটে ওই রাজ্যে ভাল ফলের বিষয়েও তেমন আশাবাদী নয় পদ্ম-শিবির। ফলে মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক লোকসানের কোনও আশঙ্কা থাকছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy