মাঠ উপচে পড়েছে ফলনে। অসমের নগাঁও জেলায়। ছবি- পিটিআই।
লকডাউনে বেকারত্বের যে গভীরতর খাদে নেমে গিয়েছিল ভারত, তার থেকে দেশকে টেনে তুলেছে গ্রাম। গ্রামীণ ভারত। ঠিক সময়ে বর্ষা, খরিফ শস্যের পর্যাপ্ত ফলন আর গ্রামভারতে কর্মসংস্থানের নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হওয়ায় দেশে বেকারত্বের হার লকডাউনের আগে যা ছিল, আবার সেখানে ফিরেছে। সাড়ে ৮ শতাংশ।
লকডাউন উঠতে শুরু করায় হাল ফিরতে শুরু করেছে শহরেরও। মানুষ কর্মক্ষেত্রে ফিরে গিয়েছেন। ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন নানা ধরনের জীবিকায়।
করোনা পরিস্থিতি ও তার পরিণতিতে বেকারত্ব বৃদ্ধির আশঙ্কায় প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে বেসামাল কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে এই স্বস্তির খবর এনে দিল একটি সমীক্ষা। ‘সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সিএমআইই)’-র সমীক্ষা জানিয়েছে, গত সাড়ে তিন মাসে গভীরতর খাদে নেমে যাওয়া বেকারত্বের হার আবার লকডাউনের আগের মাত্রায় ফিরে গিয়েছে। সাড়ে ৮ শতাংশ।
লকডাউন শুরু হতে না হতেই যে হার দ্রুত চড়তে শুরু করেছিল। সাড়ে ৮ শতাংশ (লকডাউনের আগে) থেকে বেড়ে এপ্রিল ও মে মাসে পৌঁছেছিল সাড়ে ২৩ শতাংশে। বেড়ে গিয়েছিল প্রায় ৩ গুণ। গত ৩ মে যে সপ্তাহটি শেষ হয়, তাতে সেই হার আরও চড়ে যায়। হয় ২৭.১ শতাংশ।
আরও পড়ুন: লাদাখ সফরে সেনাপ্রধান, সেনা সরাতে রাজি দু’দেশ
আরও পড়ুন: স্বার্থের অঙ্কেই ভারত-চিন দ্বন্দ্ব মেটাতে সক্রিয় রাশিয়া
সিএমআইই-র সমীক্ষা জানাচ্ছে, জুনে পা পড়তেই সেই হার নামতে শুরু করে। জুনের প্রথম তিন সপ্তাহে তা পর্যায়ক্রমে কমে হয় সাড়ে ১৭, ১১.৬ এবং এখন সাড়ে ৮ শতাংশ।
রেজাল্ট সবচেয়ে ভাল গ্রামভারতের। সেখানে বেকারত্বের হার নেমে হয়েছে ৭.৩ শতাংশ। গত ২১ জুন যে সপ্তাহটা শেষ হয়েছে তাতে গ্রামে এই হার ছিল ৭.২৬ শতাংশ। লকডাউনের আগেও গ্রামে বেকারত্বের হার এতটা নামেনি। এই হার গ্রামে গত ফেব্রুয়ারি ও মার্চের বেকারত্বের হার (যথাক্রমে ৭.৩৪ শতাংশ এবং ৮.৪০ শতাংশ)-এর গড়েরও কম। যদিও, ১৩ সপ্তাহের লকডাউনে গ্রামে গড়ে বেকারত্বের হার পৌঁছেছিল ২০.৩০ শতাংশে।
কী ভাবে এটা সম্ভব হল?
সিএমআইই-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও মহেশ ব্যাস বলেছেন, ‘‘লকডাউনের প্রত্যাহার সাধারণ ভাবে গোটা দেশেই বেকারত্বের বোঝাটা হাল্কা করেছে। তবে গ্রামভারতে সেটা বেশি হয়েছে। তার সম্ভাব্য কারণগুলির মধ্যে অন্যতম ‘মহাত্মা গাঁধী জাতীয় গ্রামীণ কর্ম সুনিশ্চিতকরণ কর্মসূচি (এমজিএনআরইজিএ)’। এই কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে ঢল নামায় কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেকটাই বেড়েছে গ্রামে। যথা সময়ে বর্ষা আসায় খরিফ শস্যের প্রচুর ফলনও আর একটা কারণ। গ্রামের অর্থনীতির এই উন্নতি আরও কয়েক মাস থাকবে। তা আরও উন্নত হতে পারে। বা এমনটাই থাকতে পারে। এ ব্যাপারে ভূমিকা রয়েছে কেন্দ্রীয় গরিব কল্যাণ রোজগার যোজনারও।’’
সমীক্ষা জানিয়েছে, মে মাসে এমজিএনআরইজিএ কর্মসূচির দৌলতে গ্রামে ৩ কোটি ৩৩ লক্ষ পরিবার উপকৃত হয়েছে। যা এক বছর আগের চেয়ে ৫৫ শতাংশ বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy