ছয় থেকে সাত ফুট পুরু বরফের চাদর। প্রতিকূল আবহাওয়া। দৃশ্যমানতা খুবই কম! উত্তরাখণ্ডের বদরীনাথের কাছে মানা গ্রামে তুষারধসের ঘটনায় উদ্ধারকাজ বার বার বাধা পাচ্ছে। সেখানে এখনও আটকে ২৫ জন শ্রমিক। রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী জানান, ঘটনাস্থলে দৃশ্যমানতা অত্যন্ত কম। সেই কারণেই হেলিকপ্টার ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না! অন্ধকারও নেমেছে, ফলে শুক্রবার উদ্ধারকাজ আর কতটা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
শুক্রবার দুপুরে বদরীনাথ থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে চামোলি জেলার মানা গ্রামে তুষারধসের ঘটনা ঘটে। সেই সময় ওই এলাকায় কাজ করছিলেন বেশ কয়েক জন শ্রমিক। গ্রামের তাঁদের একটি ক্যাম্পও ছিল। সেই ক্যাম্পের কাছেই তুষারধস নামে। প্রথমে অন্তত ৫৭ জন শ্রমিক আটকে পড়েন। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। একই সঙ্গে উদ্ধারকাজে হাত লাগান ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি), বর্ডার রোডস অর্গাাইজেশনের (বিআরও) সদস্যেরা। উদ্ধারকাজের নেতৃত্বে রয়েছে আইটিবিপি।
প্রথম থেকেই গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছেন ধামী। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও সারেন তিনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। আটকে থাকা শ্রমিকদের দ্রুত উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতীয় সেনাও উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে। কিন্তু দৃশ্যমানতা কম থাকায় হেলিকপ্টার ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ রাখছি।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁর সরকারের এখন প্রাথমিক কাজই হল আটকে থাকা মানুষদের উদ্ধার করা।
আরও পড়ুন:
শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ৩২ জন শ্রমিককে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। বাকিদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বার করে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। ভারতীয় মৌসম ভবন সূত্রে আগেই জানানো হয়েছে, আবহাওয়ার পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতাও। উত্তরাখণ্ড-সহ পার্বত্য এলাকায় শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে মৌসম ভবন। ফলে উদ্ধারকাজ বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকছেই। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিব বিনোদকুমার সুমন জানান, পরিস্থিতি খুবই সঙ্কটজনক। কারণ ওই এলাকা ছয় থেকে সাত ফুট পুরু বরফের চাদরে ঢেকে রয়েছে।