Advertisement
E-Paper

৫৬টি আসনে জয় নিশ্চিত করে, আদিত্য ঠাকরের জন্য কুর্সির আধখানা চাইছেন উদ্ধব

আজ যত ঘড়ির কাঁটা ঘুরেছে তত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা তো দূর, গত বারের ১২২টির চেয়ে  বেশ কয়েকটি আসন কম পেতে চলেছে বিজেপি। 

জয়ী: ফল বেরোনোর পরে শিবসেনার অফিসে বাবা উদ্ধবের সঙ্গে আদিত্য ঠাকরে। পিটিআই

জয়ী: ফল বেরোনোর পরে শিবসেনার অফিসে বাবা উদ্ধবের সঙ্গে আদিত্য ঠাকরে। পিটিআই

অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৫১
Share
Save

ইতিহাসের স্নাতক তিনি। ভোট ময়দানে প্রথম বার নেমেও কার্যত ইতিহাস গড়লেন। ঠাকুরদা-বাবা, এমনকি দল ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া কাকাও কখনও সরাসরি নামেননি ভোট-যুদ্ধে। কিন্তু উদ্ধব-পুত্র আদিত্য ঠাকরে শুধু নামলেনই না, মুম্বইয়ের ওরলি কেন্দ্র থেকে ৬৭ হাজার ভোটে জিতলেনও। দিনের শেষে দুই শরিক বিজেপি ও শিবসেনার পাওয়া আসনের অঙ্ক তাঁকে মুখ্যমন্ত্রিত্বের অন্যতম সম্ভাব্য দাবিদার হিসেবেও তুলে ধরল।

মাসখানেক আগেও ছবিটি ছিল ভিন্ন। বিধানসভা ভোটে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার প্রশ্নে নিশ্চিত ছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। গত লোকসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্রের ২৮৮টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে অন্তত ২৪০টিতে এগিয়ে ছিল বিজেপি। তাই শুরুতে অমিত শাহের দলের সঙ্গে সেই অর্থে দাবিদাওয়ার পথে হাঁটার ঝুঁকি নেননি শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। মাঝে অবশ্য এক বার মুখ্যমন্ত্রিত্বের প্রশ্নে সুর চড়িয়েছিলেন উদ্ধব। অমিত শাহ তখন মুম্বইয়ে গিয়ে শিবসেনাকে উপমুখ্যমন্ত্রী পদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু আজ যত ঘড়ির কাঁটা ঘুরেছে তত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা তো দূর, গত বারের ১২২টির চেয়ে বেশ কয়েকটি আসন কম পেতে চলেছে বিজেপি।

রাত পর্যন্ত পাওয়া খবরে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ১০৫টি আসনে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১৪৫টি আসন। ৫৬টি আসনে জয় নিশ্চিত করা শিবসেনা ছাড়া বিজেপির এগোনো অসম্ভব বুঝেই সুর চড়াতে শুরু করেছেন উদ্ধব। তাঁর দাবি, পঞ্চাশ-পঞ্চাশ সমীকরণ মেনে সরকার গড়া হোক। আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদ দেওয়া হোক শিবসেনাকে। উদ্ধব বলেন, ‘‘অমিত শাহ যখন আমার বাড়িতে এসেছিলেন, তখন জোটের প্রশ্নে পঞ্চাশ-পঞ্চাশ সমীকরণ মেনে চলার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। যা বিজেপিকে মনে করিয়ে দেওয়ার সময় এসেছে।’’ এখন দেখার, বিজেপি আদৌ শিবসেনার ওই দাবি মানে কি না। রক্তের স্বাদ পাওয়া শিবসেনা এখন দাবি থেকে সরতে নারাজ।

উদ্ধব অবশ্য জানেন, বিজেপি কোনও ভাবেই মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে রাজি হবে না। সেই পরিস্থিতিতে চাপ বাড়িয়ে স্বরাষ্ট্র বা অর্থের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রক হাতে পাওয়া নিশ্চিত করাই শিবসেনার লক্ষ্য। তা ছাড়া শিবসেনা সূত্রের মতে, মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবি জানানো হলেও অনভিজ্ঞ আদিত্য এখনই প্রশাসনের শীর্ষে বসুন, উদ্ধব তা চান না। বরং তাঁর ইচ্ছে, ২৯ বছরের আদিত্য আগামী পাঁচ বছর কোনও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলে প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা লাভ করুন। যাতে পাঁচ বছর পরে স্বাভাবিক ভাবেই তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হয়ে উঠতে পারেন।

শিবসেনা সূত্র বলছে, উদ্ধবের শরীর ভাল নেই। তাঁর পরে দলের হাল কে ধরবে, সেই মীমাংসা করতেই স্ত্রী রেশমীর ইচ্ছেয় ভোটে দাঁড় করিয়েছিলেন পুত্রকে। বিদেশে পড়াশোনা করে আসা আদিত্য নির্বাচনে নেমে পারিবারিক প্রথা ভাঙা ছাড়াও দলের মুসলিম-বিরোধী ভাবমূর্তি মুছতে চেয়েছেন। সত্তরের দশকে বালসাহেব ঠাকরে দক্ষিণ ভারতীয়দের তাড়াবার ডাক দিয়ে মরাঠি-অস্মিতার জিগির তুললেও, তাঁর পৌত্র আদিত্য ওরলি কেন্দ্রে ভোট চেয়েছেন দক্ষিণী ধুতি ও অঙ্গবস্ত্রম পরে। শিবসেনার এক নেতার কথায়, ‘‘সময়ের সঙ্গেই দলীয় নীতিতে পরিবর্তন আনতে হয়। আদিত্য যে পরিবর্তন আনতে চাইছেন, তা স্পষ্ট। তাঁর কাকা রাজ ঠাকরে আজকের দিনে বালসাহেবের নীতি কঠোর ভাবে আঁকড়ে রয়েছেন। তিনি জনপ্রিয় হতে পারেন। কিন্তু ভোটের ময়দানে অস্তিত্বহীন।’’

Assembly Election 2019 Maharashtra BJP Shivsena Aditya Thackeray Uddhav Thackeray

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}