—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
শনিবারই নারী নির্যাতনে অপরাধীদের দ্রুত সাজার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অথচ তাঁর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতেই আইআইটি-বিএইচইউয়ের ছাত্রীর গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত বিজেপি আইটি সেলের দুই সদস্য গ্রেফতারের সাত মাসের মধ্যে জামিন পেয়ে গিয়েছে। জেল থেকে বেরনোর পরে তাদের রীতিমতো ফুল-মালা দিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে।
এই ঘটনাকে সামনে রেখে নারীদের নিরাপত্তা ও সম্মানের প্রশ্নে নরেন্দ্র মোদী, যোগী আদিত্যনাথ তথা বিজেপির দ্বিচারিতা নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি আর জি করের ঘটনাকে সামনে রেখে ফায়দা তুলে চাইছে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে খোদ প্রধানমন্ত্রীর লোকসভা কেন্দ্রেই যোগী সরকারের নরম মনোভাবের ফলে ধর্ষণে অভিযুক্তরা জামিন পেয়ে যাচ্ছে।
গত বছর বারাণসীর আইআইটি-বিএইচইউ-এর এক বি-টেক ছাত্রী গণধর্ষিতা হন। তিন অভিযুক্ত— কুণাল পাণ্ডে, অভিষেক চৌহান ও সক্ষম পটেল বিজেপির আইটি সেলের পদাধিকারী। ঘটনার পরে তিন জনকেই মধ্যপ্রদেশে বিজেপির হয়ে ভোটের প্রচারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। সে সময় নরেন্দ্র মোদী, যোগী আদিত্যনাথ, জে পি নড্ডা-সহ বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ওই তিন জনের ছবি প্রকাশ্যে এসেছিল। গত ২ জুলাই ইলাহাবাদ হাই কোর্ট থেকে প্রথমে অভিষেক, তার পরে কুণাল জামিন পায়। সরকারি আইনজীবী পাঁচটি ক্ষেত্রে কোনও তথ্যপ্রমাণ দিতে না পারায় হাই কোর্ট জামিন মঞ্জুর করে। ২৯ অগস্ট তারা জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে।
জেল থেকে বের হতে প্রায় দু’মাস লাগলেও এর মধ্যে যোগী সরকার জামিন খারিজের জন্য কোনও আইনি চেষ্টা করেনি। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে দু’জনের পরিবারের সঙ্গে বিজেপির স্থানীয় কর্মীরাও আনন্দ-অভ্যর্থনায় মেতেছিলেন বলে বারাণসীর কংগ্রেস নেতা অজয় রাইয়ের অভিযোগ। তাঁর দাবি, ‘‘অন্য ক্ষেত্রে যোগী সরকার অভিযুক্তদের বাড়িতে বুলডোজ়ার চালায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিজেপি ধর্ষকদের ফুল-মালা দিয়ে স্বাগত জানিয়েছে।’’ সমাজবাদী পার্টির শীর্ষ নেতা অখিলেশ যাদবের প্রশ্ন, ‘‘আদালতে সরকারের তরফে যে দুর্বল সওয়াল করা হয়েছে, তার পিছনে কার চাপ ছিল? অভিযুক্তরা শুধু ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে তা-ই নয়, বিজেপি তাদের ফুল-মালায় স্বাগত জানাচ্ছে।’’ তৃণমূল কংগ্রেস কটাক্ষ করে বলেছে, ‘‘এটাই বিজেপির নারী সম্মানের পদ্ধতি। প্রথমে ধর্ষকদের বিজেপি আইটি সেলে নিয়োগ করো। তার পরে তাদের জামিনে মুক্তি উদ্যাপন করো।’’ তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন অভিযোগ করেন, ‘‘আরএসএস নিজের সংগঠনে মহিলাদের প্রবেশাধিকার দেয় না। বিজেপি-আরএসএস মহিলাদের সমস্যা কী বুঝবে? তাই ধর্ষকদের জামিন নিয়ে উল্লাস করছে।’’
বিরোধীরা মনে করিয়েছেন, বিলকিস বানো মামলায় দোষীরা জেল থেকে বেরনোর পরেও তাদের ফুল-মিষ্টি দিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছিল। গত বছর স্বাধীনতা দিবসের সেই দিনটিতেও প্রধানমন্ত্রী লাল কেল্লা থেকে নারীর সম্মান নিয়ে বার্তা দিয়েছিলেন। বিজেপি নেতারা অবশ্য দাবি করছেন, ছাত্রী ধর্ষণে অভিযুক্তদের ফুল-মালা দিয়ে স্বাগত জানানোর সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy