ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী চম্পই সোরেন। —ফাইল চিত্র।
ঝাড়খণ্ডের বিধানসভায় আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিলেন নতুন মুখ্যমন্ত্রী চম্পই সোরেন। তাঁর পক্ষে ৪৭টি ভোট পড়েছে। বিপক্ষে পড়েছে ২৯টি ভোট।
ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় মোট আসনের সংখ্যা ৮১। তার মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জাদুসংখ্যা হল ৪১। অর্থাৎ, ৪১টি ভোট পেলেই চম্পই সরকারের স্থায়ীত্ব নিশ্চিত করা যেত। আস্থা ভোটের পর দেখা গেল, ছ’টি ভোট বেশি পেয়েছে নতুন সরকার।
ঝাড়খণ্ডের জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডি জোটের মোট বিধায়ক সংখ্যা ৪৭। এ ছাড়া বিজেপির ২৫ জন, অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়নের তিন জন এনসিপি এবং সিপিআই (এমএল)-এর এক জন করে বিধায়ক রয়েছেন। সিপিআই (এমএল) সমর্থন রয়েছে শাসক জোটের পক্ষে। তিন জন নির্দল বিধায়কও রয়েছেন ঝাড়খণ্ড বিধানসভায়। শাসক জোটের সকলেই নতুন সরকারকে ভোট দিয়েছেন।
সোমবার ঝাড়খণ্ড বিধানসভার স্পিকার আস্থা ভোট গ্রহণ করেন। যাঁরা মুখ্যমন্ত্রী চম্পইয়ের সমর্থনে রয়েছেন, প্রথমে তাঁদের দাঁড়াতে বলা হয়। ৪৭ জন বিধায়কই দাঁড়িয়ে সমর্থন জানান। এর পর বিপক্ষে কারা রয়েছেন, জানতে চান স্পিকার। তখন ২৯ জন বিধায়ক দাঁড়িয়েছিলেন। তার পরেই আস্থা ভোটের ফলাফল ঘোষণা করে দেওয়া হয়। করতালিতে ফেটে পড়ে সভাকক্ষ।
জমি জালিয়াতি মামলায় ইডির হাতে হেমন্ত সোরেন গ্রেফতার হওয়ার পরেই ঝাড়খণ্ডের সরকারে টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়। গ্রেফতারির আগে রাজভবনে গিয়ে পদত্যাগ করেন হেমন্ত। তাঁর দলের তরফ থেকে চম্পইয়ের নাম পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে প্রস্তাব করা হয়। শুক্রবার রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন চম্পই। তবে রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণাণ তাঁকে ১০ দিনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে বলেছিলেন।
হেমন্ত আপাতত ইডি হেফাজতে রয়েছেন। সেখান থেকে রাঁচীর আদালতে আস্থা ভোটে অংশ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। তাঁকে সেই অনুমতি দেওয়া হয়। তার পর সোমবার বিধানসভায় গিয়ে আস্থা ভোটের আগে দীর্ঘ ভাষণ দেন হেমন্ত।
ভাষণে লোকসভা নির্বাচনের আগে ঝাড়খণ্ডের জনগণ নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ করেন তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে। এমনকি জানান, এই চক্রান্তে ‘হাত’ আছে রাজভবনেরও। বিধানসভায় ভাষণ দেন নতুন মুখ্যমন্ত্রী চম্পইও।
চম্পই মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণের দিনেই শুক্রবার রাতে ঝাড়খণ্ডের শাসক জোটের ৩৭ জন বিধায়ককে রাঁচী থেকে হায়দরাবাদের বিমানে তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে রিসর্টে ছিলেন ওই বিধায়কেরা। পরে রবিবার আবার রাঁচীতে ফিরে এসে আস্থা ভোটে অংশ নেন তাঁরা। কোনও বিধায়কই বিরোধিতা করেননি।
ঝাড়খণ্ডের বিজেপি-বিরোধী শিবিরের অনেক নেতাই সরকারের এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে ‘বিধায়ক কেনাবেচা’র আশঙ্কা করেছিলেন। অতীতে যে অভিযোগ ছিল উত্তরাখণ্ড, অরুণাচল, কর্নাটক কিংবা মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যের ক্ষেত্রে। বিরোধীদের একাংশের আশঙ্কা ছিল, আস্থা ভোটের আগেই বিধায়ক ‘কেনাবেচা’ হয়ে যেতে পারে। সেই ‘ভয়’ থেকেই বিধায়কদের ভিন্রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তেমন কোনও ‘কেনাবেচা’ দেখা গেল না। সোমবার সব বিধায়কের সমর্থন নিয়েই আস্থা ভোটে জয়ী হলেন চম্পই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy