১৯৫৯ সালে ভারত সফরে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি আইজেনহাওয়ার। পাশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। ছবি: নয়াদিল্লির মার্কিন দূতাবাসের সৌজন্যে
আমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মোতেরা স্টেডিয়াম পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তায় বিপুল ভিড় টানার প্রস্তুতি চূড়ান্ত। বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই পথের দু’পাশে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। ‘নমস্তে ট্রাম্প’ উপলক্ষে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রিকেট স্টেডিয়াম যাতে কানায় কানায় পূর্ণ থাকে, সেটিও নিশ্চিত করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এমন গণসম্বর্ধনা দেওয়ার এই সম্ভাব্য দৃশ্যটিতে প্রবীণ কূটনীতিকরা ফিরে যাচ্ছেন ৬১ বছর আগের অন্য একটি একটি ঘটনায়।
১৯৫৯ সালের ডিসেম্বরে আর এক মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এমনই অভ্যর্থনা জানিয়েছিল নয়াদিল্লি। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি আইজেনহাওয়ার রামলীলা ময়দানে প্রায় এক লাখ মানুষের সমাবেশে (তখনকার রিপোর্ট অনুযায়ী) বক্তৃতা দিয়েছিলেন। বিমানবন্দর থেকে রামলীলা ময়দান পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে সারিবদ্ধ মানুষ তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। ঠান্ডা যুদ্ধের সেই সময়ে সোভিয়েতপন্থী প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর প্রয়োজন ছিল, কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভারত সফরকে কৌশলগত ভাবে আড়ম্বরপূর্ণ করে তোলার এবং তা গোটা বিশ্বকে দেখানোর। এক মার্কিন সাংবাদিক সে সময়ে নিজের দেশে করা তারবার্তায় লিখেছিলেন, এত বড় গণসম্বর্ধনা এর আগে কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট কোথাও পাননি!
তবে ট্রাম্পের এ বারের গণসম্বর্ধনার বিষয়টি নিয়ে ঘরোয়া রাজনৈতিক শিবিরে বিতর্ক ক্রমশ বাড়ছে। বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, গত সেপ্টেম্বরে আমেরিকায় ‘হাউডি মোদী’র অনুকরণেই এই ‘নমস্তে ট্রাম্প’-এর আয়োজন। প্রশ্ন উঠেছে, টেক্সাসের ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ট্রাম্প সরকারের বিরোধী রাজনৈতিক নেতারাও। মোতেরায় কি আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিরোধীদের? জবাবে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেছেন, ‘‘নমস্তে ট্রাম্প আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প নাগরিক অভিনন্দন সমিতি’। কাদের আমন্ত্রণ করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত তারাই নিয়েছে।’’ এই অভিনন্দন সমিতির কারা, কবে তৈরি হল, কী তাদের রাজনৈতিক বা সামজিক পরিচয়, তারাই গোটা অনুষ্ঠানের ব্যয়ভার বহন করছে কিনা, তাদের কোনও ওয়েবসাইট রয়েছে কি না, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা টুইট করে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছেন, এই অভিনন্দন সমিতির প্রেসিডেন্ট কে? এক অজ্ঞাত বেসরকারি সংস্থার এই উদ্যোগের জন্য কেন গুজরাত সরকার ১২০ কোটি টাকা খরচ করছে?
আমদাবাদের সফর শেষ করে তাজমহলে যাবেন ট্রাম্প। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, তাজ-এর সামনে পর্যন্ত গাড়ি যেতে পারে না। যে কারণে এর আগে ইচ্ছা থাকলেও তাজমহলে যেতে পারেননি প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। কিন্তু ট্রাম্পের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যাতে তাজ দর্শন মসৃণ হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy