উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শনিবার নয়াদিল্লিতে এক ডজনের উপর বিরোধী দল সক্রিয় হল। অন্য দিকে একলা হয়ে রইল তৃণমূল কংগ্রেস। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অধিকাংশ সাংসদই রওনা দিলেন কলকাতায়। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে থাকলেন ঠিকই কিন্তু কোনও বিরোধী নেতার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হল না।
রাজধানীতে আজ বিরোধী শিবিরের দু’দিকে দেখা গেল এই চরম বৈপরীত্য। তৃণমূল যদিও এই ঘটনার জন্য আজ সম্পূর্ণ দায় চাপিয়েছে কংগ্রেস এবং শরদ পওয়ারের উপর। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই দৌড়ে এসেছিলেন বিরোধীদের একমঞ্চে আনার চেষ্টা করতে। কিন্তু তাতে জল ঢালা হয়েছে।
অন্য দিকে, কিছু দিন আগেও যাদের বিরোধী ভোটের হিসেবে আনা হয়নি, সেই টিআরএস মার্গারেট আলভাকে ভোট দিয়েছে। আলভা টুইট করে বলেছেন, ‘টিআরএস-এর সব সাংসদকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে সমর্থন করার জন্য। বিরোধী ঐক্যের পথে এটি বড় পদক্ষেপ।’ যৌথ বিরোধী ঐক্যে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে আপ-কেও, যারা ঘোষিত ভাবে কংগ্রেসের ‘রাজনৈতিক শত্রু’।
তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই বৈপরীত্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। বিরোধী দলের প্রাপ্য মর্যাদা তৃণমূল পাচ্ছে না। উপরাষ্ট্রপতি পদে কে প্রার্থী হবেন, তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টিভি-র পর্দায় দেখেছেন। তা সত্ত্বেও মমতা সাংসদদের ডেকে বৈঠক করে সবার মত আলাদা করে জানতে চান। সংখ্যাগরিষ্ঠ সাংসদ মতামত দেন, ভোটদান থেকে বিরত থাকা হবে।” তৃণমূল সূত্রের অভিযোগ, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় বিরোধী দলের এজেন্ট হিসাবে সুখেন্দুশেখর রায় এবং মানস ভুঁইয়াকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা গিয়ে দেখেন, তাঁদের নাম নেই। তখন রাষ্ট্রপতি পদের জন্য বিরোধী প্রার্থীর প্রচারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুধীন্দ্র কুলকার্নিকে মমতা বাধ্য হয়ে ফোন করেন। এরপর সুখেন্দুশেখর রায়ের নাম এজেন্ট হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তৃণমূলের অনুমান, কংগ্রেস এর পিছনে কলকাঠি নেড়েছে।
প্রশ্ন উঠছে, ভোট দিয়েও নিজেদের ক্ষোভের প্রসঙ্গটি তুলে ধরতে পারা যেত না কি? আপ সাধারণ ভাবে যে কোনও বিরোধী পদক্ষেপে কংগ্রেসের থেকে শতহস্ত দূরে থাকে। আজ আপ মার্গারেট আলভাকে ভোট দিয়েছে। পরে আপ নেতা রাঘব চাড্ডা বলেন, “কংগ্রেসের বুকে আর কোনও আগুন নেই। জাতীয় রাজনীতিতে একমাত্র আপ-ই প্রধান বিরোধী দলের জায়গা নিতে পারে।”