সোশ্যাল মিডিয়ায় নীলোৎপল বসুর পোস্ট করা সেই ছবি।
ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের সাইনবোর্ডে ‘বাংলা বিভাগ’ শব্দটি বাংলার বদলে ইংরেজি ও হিন্দিতে লেখা থাকায় বিতর্ক শুরু হয়েছে।
ওই সাইনবোর্ডের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করে সিপিএম নেতা নীলোৎপল বসু কটাক্ষ করেন, ‘‘এটা নতুন ত্রিপুরা। নতুন ভারত।’’ দীর্ঘ দিন ধরেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার গুরুত্ব কমিয়ে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। নীলোৎপলের দাবি, ‘‘আগে ওই সাইনবোর্ড বাংলায় ছিল। এখন তো ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগীয় প্রধানের জায়গায় হিন্দিতে অধ্যক্ষ লেখাও শুরু হয়েছে।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভি এল ধারারকরের দাবি, ‘‘ওই সাইনবোর্ড আগে থেকেই রয়েছে। বাংলায় লেখা না থাকলে লেখানোর ব্যবস্থা করব। আমি বাংলা ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপরে অধ্যয়ন কেন্দ্র চালু করেছি। বিভিন্ন ভাষার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়েও
অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি।’’ তাঁর স্পষ্ট দাবি, ‘‘ইংরেজি-হিন্দিতে বিভাগের নাম লেখা নিয়ে কোনও নির্দেশিকা নেই।’’
কিন্তু বাংলার ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক রিন্টু দাসের দাবি, ‘‘গোড়া থেকেই বাংলা বিভাগের নাম বাংলায় লেখা ছিল। বছর তিনেক হল বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের নাম হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় লেখা হয়েছে। বাংলায় কেন লেখা হয়নি এই বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই বলতে পারবেন।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাদের কাছে যদি মতামত জানতে চাইত তাহলে আমরা বাংলায় লেখার পক্ষে মত দিতে পারতাম। এখানে চাকরি করতে গেলে কর্তৃপক্ষের অনেক কিছু সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হয়।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ডিন অধ্যাপিকা চন্দ্রিকা বসু মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘নিয়ম কী আছে এবং অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কী হয় তা নিয়ে খোঁজ না নিয়ে কথা বলতে পারব না।’’
কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সূত্রের দাবি, প্রত্যেকটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। কোন বিভাগের নাম কোন ভাষায় লেখা হবে তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই স্থির করেন। তবে বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে বা পড়াতে যান। ফলে তাঁদের সুবিধের জন্য বিভিন্ন বিভাগের নাম ইংরেজি ও হিন্দিতেও লেখার পরামর্শ দেয় মন্ত্রক।
বিশ্বভারতীর বিভিন্ন বিভাগ ও ভবনে বাংলায় লেখা বোর্ডের পাশে হিন্দি, ইংরেজিতে লেখা বোর্ড চোখে পড়ে। কখনও পাশে, আবার কখনও বেশ কিছুটা দূরে অন্য জায়গায়। তবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে বাংলার ব্যবহার না থাকায় কথা ওঠে। বিশ্বভারতীর একটি সূত্রের দাবি, ‘কেন্দ্রীয় রাজভাষা প্রকোষ্ঠ’ থেকে প্রতিনিধি দল বিশ্বভারতী পরিদর্শনে আসে। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতীতে হিন্দি ভাষার ব্যবহার ঠিক মতো হচ্ছে কি না, তা দেখাই তাদের মূল উদ্দেশ্য। ভাষা হিসেবে হিন্দির ব্যবহার ঠিক মতো করা না হলে কয়েকটি অনুদান বাতিল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একটা বড় অংশের দাবি, হিন্দি-ইংরেজিতে লেখা বোর্ডগুলির ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করার চেষ্টা হচ্ছে যে বিশ্বভারতী থেকে বাংলা ভাষা উধাও হয়ে যাচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy