বন্যা বিপর্যস্ত ত্রিপুরা। ছবি: পিটিআই।
ভারী বৃষ্টির জেরে ত্রিপুরার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলের তলায়। তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারি হিসাবে মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের। বন্যা দুর্গতদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসের এক জওয়ান। বন্যা কবলিত এলাকা থেকে দুর্গতদের উদ্ধারের জন্য নেমেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। এনডিআরএফের অন্তত ১১টি পৃথক দল বর্তমানে উদ্ধার ও ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজ চালাচ্ছে। শুক্রবারই ১২৫ জনকে দুর্যোগ কবলিত এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে এনডিআরএফ।
ত্রিপুরার বন্যায় দুর্গতদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছে ভারতীয় বায়ুসেনাও। শনিবার সকালে বায়ুসেনা জানিয়েছে, বিপর্যস্ত এলাকাগুলিতে হেলিকপ্টারে করে চার হাজার খাবারের প্যাকেট পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। রাঙামাটি, যতনবাড়ি, উদয়পুর, পশ্চিম মালবাসা, শঙ্কর পলি ও সংলগ্ন এলাকাগুলিতে খাবার ও অন্য ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২৮ টন ত্রাণ সামগ্রী ত্রিপুরার বিভিন্ন বন্যা কবলিত এলাকাগুলিতে পৌঁছে দিয়েছে বায়ুসেনা। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহাও। শুক্রবারই তিনি আকাশপথে বন্যা কবলিত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেছেন। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় শনিবার একটি সর্বদল বৈঠকের ডাক দিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, শুক্রবারই কেন্দ্রের তরফে ত্রিপুরার বন্যা পরিস্থিতিতে ত্রাণ সামগ্রীর কাজের পরিকাঠামোর জন্য ৪০ কোটি টাকার অগ্রিম বরাদ্দ করেছে।
সরকারি হিসাবে এখনও পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে ত্রিপুরার বন্যায়। দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত ১৭ লাখ মানুষ। বিভিন্ন মহাসড়ক, চাষের জমি কার্যত জলের তলায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রচুর ঘরবাড়ি। ১৯ অগস্ট থেকে এখনও পর্যন্ত ৫৫৮টি ত্রাণ শিবির তৈরি করা হয়েছে। সেগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ১ লাখ ২৮ হাজার মানুষ। যদিও গত দু’দিনে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। গোমাতী নদী-সহ অন্য নদীগুলির জলস্তরও বিপদসীমার নীচে নামতে শুরু করেছে। তবে ত্রিপুরার অনেকগুলি জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলছে শনিবারও। গত কয়েক দিনের বন্যা পরিস্থিতিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। সরকারি ভাবে এখনও পর্যন্ত কিছু না জানানো হলেও, প্রাথমিক ভাবে অনুমান প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতির কারণে বৃহস্পতিবার থেকে ত্রিপুরার সব সরকারি, আধা সরকারি ও বেসরকারি স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে ত্রিপুরার বেশ কিছু জায়গায় বাজারে জিনিসপত্রের দাম লাগামছাড়া হতে শুরু করেছে। ত্রিপুরার খাদ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী ইতিমধ্যেই এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “রাজ্যে কোথাও খাবারের সঙ্কট নেই। পেট্রল-ডিজ়েলেরও সমস্যা নেই। তাই কেউ উদ্বিগ্ন হবেন না। যদি কেউ অকারণে জিনিসপত্রের দাম বাড়ান, তাঁকে জরিমানা করা হবে এবং আইনি পদক্ষেপ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy