ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। ফাইল চিত্র।
পুরভোটের আগে কলকাতা থেকে এসে নিয়ম করে তাঁর সরকারকে নিশানা করছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। তার মোকাবিলায় আসরে নামলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবও। তাঁর পাল্টা দাবি, বাংলা থেকে নানা কেলেঙ্কারির নায়ক ও মাফিয়ারা ত্রিপুরায় এসে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যকে অশান্ত করতে চাইছে। এই চেষ্টার জবাব রাজ্যের মানুষ ভোটেই দেবেন।
বাংলা থেকে এসে ত্রিপুরার মাটিতে তৃণমূলের তৎপরতাকে ‘বর্গী হানা’ আখ্যা দিয়েছে শাসক বিজেপি। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী এবং রাজ্যে তাঁর জমানায় কেমন শান্তি ও উন্নয়নের প্রতিষ্ঠা হয়েছে, পুরভোটের প্রচারে নেমে তারই বিবরণ দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব। পুরভোটের প্রচারের শেষ লগ্নে আমবাসায় গিয়ে সোমবার সেই সূত্রেই বিপ্লবের মন্তব্য, ‘‘অন্য রাজ্য থেকে বালি মাফিয়া, কয়লা মাফিয়া, গরু পাচারকারী, সারদা ও নারদ কেলেঙ্কারির লোকজন এখানে এসে অশান্তি তৈরি করতে চাইছে। শান্ত ত্রিপুরাকে অশান্ত করছে। পুরভোটের ফলেই মানুষ জবাব দিয়ে দেবেন।’’
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন আগরতলায় দাঁড়িয়ে বিপ্লবকে তুলোধোনা করছেন, অন্য দিকে তখন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এই রাজ্যে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের ঘটনা আগের চেয়ে অনেক কমে গিয়েছে বিজেপি আমলে।
অভিষেকের জবাব দেওয়ার জন্য এ দিন বিজেপির তরফে আসরে নামানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক এবং রাজ্যের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীকে। মুখ্যমন্ত্রীর সুরেই প্রতিমা ‘কয়লা চোর, বালি চোর’ প্রসঙ্গ এনেছেন। সুশান্ত মনে করিয়ে দিয়েছেন, বাংলায় একের পর এক দুর্নীতি বা কেলেঙ্কারির অভিযোগে সিবিআই তদন্তের কথা। পাশাপাশিই প্রতিমার মুখে বারবার শোনা গিয়েছে বাংলার পাল্টা দৃষ্টান্ত। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যত দিন দিদি ছিলেন, তত দিন ঠিক ছিল। যখন থেকে হয়েছেন, বর্গীদের বাহিনীর নে্ত্রী হয়ে উঠেছেন। ত্রিপুরায় এসে এঁরা যা করছেন, যে ভাষা ব্যবহার করছেন, বিবেকানন্দ-রবীন্দ্রনাথ-সুভাষচন্দ্রের ঐতিহ্যে তা মানায় না।’’
বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা বি এল সন্তোষও টুইটে খোঁচা দিয়েছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্রকে লুঠ করে গণতন্ত্র নিয়ে তৃণমূলের জ্ঞান দেওয়া বেমানান! ওদের হাতে বাংলার বিজেপি কর্মীদের রক্ত লেগে আছে’।
অভিষেক অভিযোগ করেছেন, বিপ্লবের ‘রাগ’ তাঁর উপরে থাকতেই পারে। কিন্তু ত্রিপুরায় সাংবাদিক, শিক্ষক, চিকিৎসকেরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রতিমা বলেন, সাংবাদিকদের উপরে হামলা ‘দুর্ভাগ্যজনক’। তার তদন্ত হবে। তার পরেই অভিযোগের তির ঘুরিয়ে দিয়েছেন বাংলার দিকে। বলেছেন, সে রাজ্যে একের পর এক নির্বাচনে বিজেপি এবং বিরোধীরা আক্রান্ত হয়েছেন। বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যে গিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডার কনভয়ও আক্রমণের মুখে পড়েছে। আবার ভোটের ফলপ্রকাশের পরে হয়েছে আর এক প্রস্ত হিংসা। যার নিন্দা হয়েছে আদালত থেকে মানবাধিকার কমিশন পর্যন্ত।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দাবি, মানুষ অবাধে ভোট দিতে পারলে পুরভোটে খাতাই থুলতে পারবে না বিজেপি! প্রতিমার আবার পাল্টা চ্যালেঞ্জ, ‘‘ভোট হতে দিন না। ফল বেরোলেই দুধ আর জল পরিষ্কার হয়ে যাবে!’’ তাঁর অভিযোগ, ভিন্ রাজ্য থেকে নেতা-মন্ত্রীরা বাংলায় সভা করতে গেলে নানা অজুহাতে অনুমতি বাতিল করে প্রশাসন। তিনি নিজেও তার ভুক্তভোগী।
প্রত্যাশিত ভাবেই ত্রিপুরার দলীয় নেতৃত্বের পাশে দাঁড়িয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। অভিষেক যে ত্রিপুরায় ‘জঙ্গলরাজের’ কথা বলেছেন, তার প্রতিক্রিয়ায় সুকান্তের মন্তব্য, ‘‘আপনি আচরি ধর্ম পরেরে শিখাও! একমাত্র উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বাংলা তুলনীয়। কিমকে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই চ্যালেঞ্জ করতে পারেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy